বাংলাদেশেই তৈরি হবে গরুর ক্ষুরা রোগের প্রতিষেধক

লেখাটি বিভাগে প্রকাশিত

কৃষিভিত্তিক বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গবাদীপশু একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কৃষকের হালচাষ থেকে শুরু করে পরিবারের জন্য দুগ্ধ-সরবরাহ ছাড়িয়ে স্থানীয় ও জাতীয় বাজার অর্থনীতিতে গবাদীপশুর ভূমিকা অনস্বীকার্য। এছাড়া পরিবারভিত্তিক পশুপালনের বাইরে বাংলাদেশে এখন অনেকগুলো পশুখামার গড়ে উঠেছে। এ খাতে বাংলাদেশ যেমন স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে, তেমনি বিদেশে পশুর মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্য রপ্তানীর সম্ভাবনাও রয়েছে। কিন্তু গবাদীপশুর বিভিন্ন রোগ, বিশেষ করে গরুর ক্ষুরা-রোগ এ খাতে একটি জটিল সমস্যা যার কারণে পরিবার, স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে উন্নয়ন ব্যহত হচ্ছে। আর গরুর ক্ষুরা-রোগ নিয়েই আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা চলছে ড. আনোয়ার হোসেনের নের্তৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের মাইক্রোবিয়াল জেনেটিক্স ও বায়োইনফরমেটিক্স ল্যাবরেটরিতে। ইতিমধ্যে ড. আনোয়ার হোসেন ও তার গবেষণাদল বাংলাদেশে ক্ষুরারোগের ভাইরাস সনাক্তকরণ, রোগতত্ত্ব গবেষণা ও ভাইরাসের জীবনরহস্য (সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্স) উন্মোচন করে ফেলেছেন। এখন এ গবেষণাগারে এ ভাইরাসের প্রতিরোধের জন্য কার্যকর টীকা তৈরির গবেষণা চলছে।

গরুর ক্ষুরা-রোগ হয় Foot-and-Mouth Disease Virus (FMDV) নামক ভাইরাসের কারণে। গরু ছাড়াও ছাগল, মহিষ, শুকর সহ প্রায় ৮০-প্রজাতীর দুই-খুর বিশিষ্ট পশুকে আক্রমণ করে FMDV। ভাইরাসটি অতি-সংক্রমক বলে রোগটি দ্রুত ছড়ায়। বায়ুবাহিত এ ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হলে গরুর জ্বর হয়, মুখ ও খুরে ফোসকা পড়ে, ওজন কমে গিয়ে স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে, অসুস্থ বাছুর মারাও যেতে পারে। গরু অসুস্থ হওয়ার ফলে কৃষকের জমি হালচাষের ক্ষমতা যেমন কমে যায়, তেমনি মাংস ও দুগ্ধ-উৎপাদনের ক্ষমতাও হ্রাস হয়ে যায়। ফলে একটি হিসাব অনুসারে প্রতিবছর এ রোগের জন্য বাংলাদেশ ১২৫ মিলিয়ন ডলার অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এছাড়াও আমরা বিদেশে পশুজাত পণ্য রপ্তানীর অনুমোদনও পাচ্ছি না – কারণ OIE (World Organisation for Animal Health) ও FAO (Food and Agriculture Organization) এর একটি বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা অনুসারে কোন FMDV সংক্রামিত এলাকা থেকে বহির্দেশে পশুজাত পণ্য রপ্তানী করা যায় না। তাই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের পশুখাতে অন্যতম সীমাবদ্ধতা হলো গরুর ক্ষুরা রোগের ভাইরাস সংক্রমণ – যার কারণে আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ হচ্ছে ভীষণভাবে।

capsomere_FMDV_bangla
ক্ষুরা রোগের ভাইরাসের গঠন

ক্ষুরা রোগের ভাইরাস (FMDV) পিকোরনা ভাইরাস দলের সদস্য। এদের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো এদের বংশগতীয় উপাদান আর.এন.এ. (রাইবোনিউক্লিক এসিড) যা আকারে অত্যন্ত ছোট। এ ভাইরাসটির আকার ২৫-৩০ ন্যানোমিটার যা একটি ক্যাপসিড প্রোটিন দিয়ে ঘেরা থাকে। এ ধরনের ক্যাপসিড প্রোটিনের সজ্জাকে বলে ইকোসাহেড্রাল প্রতিসাম্য। এ ক্যাপসিডটি ৬০টি ক্যাপসোমিয়ার নামক খন্ডাংশ দিয়ে তৈরি হয়। প্রতিটি ক্যাপসোমিয়ার আবার চারটি ভাইরাল প্রোটিন দিয়ে তৈরি যারা VP1, VP2, VP3 এবং VP4 নামে পরিচিত। VP1, VP2 ও VP3 ক্যাপসোমিয়ারের বাইরের দিকটি তৈরি করে ও VP4 ভেতরে থাকে। এদের মধ্যে VP1 সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কারণ ভাইরাসটি যখন বাহক-কোষকে আক্রমণ করে তখন VP1-ই কোষের সাথে যুক্ত হয়ে কোষের ভেতরে প্রবেশ করা শুরু করে। তাই ভ্যাক্সিন বা প্রতিষেধক তৈরির সময় দেখা হয় এই VP1 প্রোটিনের বিরুদ্ধে বাহক পশু (যেমন গরু) প্রয়োজনীয় প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে পারছে কি না।

উপরে যেমন বলা হয়েছে, ক্ষুরা রোগের ভাইরাসটির বংশগতি উপাদান আর.এন.এ. দিয়ে তৈরি। সাধারণত সকল জীব ও বেশিরভাগ ভাইরাসের বংশগতি উপাদান ডি.এন.এ. (ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড)। ডি.এন.এ.-র একটি বৈশিষ্ট্য হলো অনুলিপিকরণের সময় নির্দিষ্ট এনজাইমের সংশোধন ক্ষমতা থাকায় ভুল তুলনামূলকভাবে অনেক কম। কিন্তু আর.এন.এ ভাইরাসের অনুলিপিকরণ এনজাইমের সে ভুল সংশোধন ক্ষমতা নেই। তাই নতুন ভাইরাস তৈরির সময় প্রায়ই আর.এন.এ. সিকোয়েন্স (অনুক্রম) পরিবর্তিত হয়ে যায় যা মিউটেশন বলে পরিচিত। সাধারণত সকল স্তন্যপায়ী প্রাণীর মতোই গরুরও শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু বংশগতির সংকেত বদলে যাওয়ার সাথে সাথে ভাইরাসের বাহ্যিক আকৃতিতেও পরিবর্তন আসে। তাই গরুর রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা থেকে পরিবর্তিত আর.এন.এ. ভাইরাসটি ফসকে যায় ক্রমাগত বংশগতীয় বিবর্তনের কারণে।

ক্ষুরা রোগের সাতটি সেরোটাইপ (ভিন্ন ভিন্ন ধরণ) থাকলেও বাংলাদেশে টাইপ A, O, এবং Asia 1 পাওয়া যায়। মাইক্রোবিয়াল জেনেটিক্স এন্ড বায়োইনফরমেটিক্স ল্যাবরেটরির রোগতত্ত্ব গবেষণা হতে দেখা গেছে বাংলাদেশে ক্ষুরা রোগের সেরোটাইপ O-র বিস্তার সবচেয়ে বেশি: ৮০-৮৫%, সেরোটাইপ A ১০-১৫% এবং Asia 1 ০-৫%। Asia 1 বাংলাদেশে বেশ দূর্লভ, এমনকি এই সেরোটাইপ বাংলাদেশে নাও থাকতে পারে, থাকলেও হয়তো যশোর বা গাজীপুরের মতো কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ। ক্ষুরা রোগের বিরুদ্ধে লড়তে হলে আমাদের প্রয়োজন একটি যথার্থ প্রতিষেধক টিকা। কিন্তু আমাদের দেশে ক্ষুরা রোগের টিকা মূলতঃ আমদানী হয় ভারত থেকে। সমস্যা হলো, ভারতীয় টিকাগুলো যে সকল ভাইরাসের বিরুদ্ধে তৈরি হয়, আমাদের দেশে সে ভাইরাসগুলো একই টাইপের হলেও এদের মধ্যে বংশগতীয় ভিন্নতা যথেষ্ট। এ কারণে ভারতীয় প্রতিষেধক টিকা বাংলাদেশী গরুতে প্রয়োগ করা হলেও তাদের মধ্যে ক্ষুরা রোগের বিরুদ্ধে রোগ-প্রতিরোধ শক্তি তৈরি হয় না। এছাড়াও আমদানীকৃত প্রতিষেধক ট্রাইভ্যালেন্ট: অর্থাৎ একই সাথে তিনটি সেরোটাইপের ক্ষুরা-রোগ ভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করার কথা এ প্রতিষেধকটির। ট্রাইভ্যালেন্ট টিকার খরচও বেশি। ড. আনোয়ার হোসেন এ ট্রাইভ্যালেন্ট প্রতিষেধক ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, কারণ বাংলাদেশে যেহেতু টাইপ O এবং A ভাইরাস পাওয়া যাচ্ছে, কাজেই বাইভ্যালেন্ট (দুটির বিরুদ্ধে) প্রতিষেধক তৈরি করলেই তা যথেষ্ট হওয়ার কথা । মাইক্রোবিয়াল জেনেটিক্স এন্ড বায়োইনফরমেটিক্স ল্যাবরেটরির একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে যে একটি গরুতে ক্ষুরা রোগের Asia 1 সেরোটাইপ ভাইরাসের বিরুদ্ধে টীকা দেয়ার পরেও তা আবারো Asia 1 সেরোটাইপের FMDV দিয়ে আক্রান্ত হয়েছে। বিদেশ থেকে আমদানী করা টিকা দিয়ে বাংলাদেশের ক্ষুরা রোগের সংক্রামণ বন্ধ করা যাবে না। এ সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশকে নিজেদের প্রতিষেধক তৈরি করতে হবে। কি ধরণের প্রতিষেধক তৈরি করা হবে এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ মতামতও নেয়া প্রয়োজন।

সাধারণত বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধের জন্য আমরা প্রতিষেধক টিকা বা ভ্যক্সিন ব্যবহার করি। কিন্তু উপরে বর্ণিত প্রক্রিয়ায় FMDV-র বিরুদ্ধে কোন ভ্যাক্সিন তৈরি করলেও ক্রমাগত ভাইরাসটি বদলে যাওয়ার কারণে এক সময় প্রতিষেধক টিকাটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। তাই প্রচলিত রীতি হলো নিয়মিত ক্ষুরা রোগের ভাইরাস নমুনা সংগ্রহ করে তার বংশগতি উপাদানের পরিবর্তনের খবর রাখা ও ভাইরাসটি পরিবর্তনের সাথে সাথে নতুন ভ্যাক্সিন তৈরি করা। ঠিক এ লক্ষ্যেই কাজ করছেন ড. আনোয়ার হোসেন ও তাঁর গবেষণাদল। ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে দুই সেরোটাইপের ক্ষুরা-রোগ ভাইরাসের জীবনরহস্য বা জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন করে আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন জার্নালে বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ প্রকাশ করেছি। এছাড়া পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্স ইন্টারনেটে জিনব্যাংকে জমা দিয়েছি। ক্ষুরা রোগের ভারতীয় ভাইরাসগুলোর সাথে এই জিনোম সিকোয়েন্সে তাৎপর্যপূর্ণ পার্থক্য আমরা সনাক্ত করেছি। আমাদের হাতে এখন প্রতিষেধক তৈরির জন্য উপযুক্ত ভাইরাস-বীজ রয়েছে।” ড. আনোয়ার হোসেন সম্প্রতি ক্ষুরা রোগের প্রতিষেধক তৈরির জন্য বিশ্ব ব্যাংক (HEQEP) থেকে ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া পার্টনারশিপ পর্যায়ে গবেষণার জন্য তিন বছর মেয়াদী অনুদান পেয়েছেন, যা শেষ হবে ২০১৮ সালে। তাঁর গবেষণাগারে বর্তমানে ক্ষুরা রোগের সম্পূর্ণ ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয়করণের মাধ্যমে রিভার্স-জেনেটিক্স পদ্ধতিতে রিকম্বিনেন্ট ভাইরাস ও পেপটাইড প্রতিষেধক তৈরির কাজ চলছে। এছাড়াও মাঠপর্যায়ে ক্ষুরা-রোগের ভাইরাস দ্রুত সনাক্তকরণের জন্য কিটও তৈরি হচ্ছে। তাঁর গবেষণাদলে আরো চারজন শিক্ষক, একজন পোস্টডক, তিনজন পিএইচডি, বেশ কয়েকজন এমএস ছাত্র ও একজন টেকনিশিয়ান যুক্ত আছেন। এ গবেষণার ফলাফল ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছানোর জন্য নোভাল্টা বেস্টওয়ে ফার্মাসিউটিক্যালস সহ যুক্তরাষ্ট্রের Medgene গবেষণাগার ও OIE-এর স্বীকৃত গবেষণাগার Animal Plant Health Inspection Service (APHIS), USA-এর সাথে এ গবেষণাগারের বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ড. আনোয়ার হোসেন প্রত্যয় ব্যক্ত করেন যে খুব শীঘ্রই তাঁরা ক্ষুরা রোগের প্রতিষেধক মাঠপর্যায়ে পরীক্ষা করে দেখতে পারবেন। সে পরীক্ষা সফল হলে বাংলাদেশে বানানো ক্ষুরা রোগের প্রতিষেধক খুব দ্রুত কৃষক ও খামার পর্যায়ে পৌছানো যাবে বলে তিনি মনে করেন।

বাংলাদেশে গরুর ক্ষুরা-রোগ নির্মূল করার জন্য উপযুক্ত প্রতিষেধক তৈরির পাশাপাশি এ রোগের ভাইরাস কিভাবে দেশে ছড়াচ্ছে তা সনাক্ত করাও খুব জরুরী। পিএইচডি গবেষক ডা. হুজ্জত উল্যাহ জানালেন, “বাংলাদেশে যেসব ক্ষুরা রোগের ভাইরাস ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদের সম্পর্কে আমরা একটি তথ্যভান্ডার নির্মাণ ও নিয়মিত হালনাগাদ করছি। আমাদের গবেষণায় উঠে এসেছে যে এ ভাইরাসগুলো মূলত ভারতীয় সীমানা অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। সম্ভবতঃ বিভিন্ন সময় ভারতীয় গরু পাচার ও বাণিজ্যের সময় এ ঘটনা ঘটছে কারণ OIE-র আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুযায়ী গরুর ক্ষুরা-রোগ আছে কি না তা সনাক্ত করে আক্রান্ত পশুকে আলাদা করা হয় না।” এভাবে পার্শ্ববর্তী দেশ বিশেষ করে ভারত, মায়ানমার, নেপাল ও ভূটান থেকে ক্ষুরা-রোগের বিভিন্ন্ ভাইরাস বাংলাদেশে এসে ঢুকছে। এ কারণে বাংলাদেশ বিভিন্ন ধরনের ক্ষুরা-রোগের ভাইরাসের একটি সংমিশ্রণ আধার হিসেবে কাজ করছে। ফলশ্রুতিতে সার্বিকভাবে ক্ষুরা-রোগ নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ড. আনোয়ার হোসেন জানান, বাংলাদেশে ক্ষুরা রোগের সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য আসলে সার্বিক সমন্বয়ের কোন বিকল্প নেই। বিশেষ করে বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণী-সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অন্তর্গত বিভিন্ন গবেষণা কেন্দ্র সহ বিভিন্ন সরকারী সংস্থা, ঔষুধশিল্প ও বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়) কেন্দ্রীক গবেষণার মধ্যে পারস্পারিক সহযোগীতামূলক সম্পর্ক সুষ্ঠু ভাবে গঠিত না হলে বাংলাদেশ থেকে গরুর ক্ষুরা-রোগ নির্মূল করা স্বপ্নই থেকে যাবে।

লেখাটি 299-বার পড়া হয়েছে।


আলোচনা

Responses

  1. ১. লেখাটা শুরু করার প্রথম দিকে শঙ্কায় ছিলাম, গবেষণা করতে যে খরচটা হবে সেটার ব্যাপারে। কারণ বাজেটে ঢাবির গবেষণার জন্য যে টাকা বরাদ্ধ রেখেছে সেটা গরীবের ভিক্ষার সমতুল্য। শঙ্কা দূর হল যখন দেখলাম অনেকে এই গবেষণাতে সাহায্য করছে।

    ২. আরাফাত রহমান ভাই, আপনি কি এই গবেষণা দলে আছেন? আপনার কাজ মূলত কী? [আগ্রহী মন জানতে চায়!]

    ৩. প্রথম দিকে দেখেছি ভারত থেকে আনা টিকা আমাদের গরুর বেলায় কাজ করবে না, কারণ রোগের বেলায় দুই দেশে বৈচিত্রতা দেখা যায়। কিন্তু পরে দেখছি ভারত থেকে গরু বাংলাদেশে পাচারের মাধ্যমে আসছে, তাহলে ভারতীয় ওষুধগুলোকে ফেলে দেয়া যায় না। বাংলাদেশে যেহেতু অনেক দেশের গরুর সংমিশ্রণ ঘটেছে তাই তুলনামূলকভাবে এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ।

    ৪. এই লেখাটা লিখে দারুণ একটা কাজ করেছেন। এখন সময় এসেছে বেশি বেশি করে বাংলাদেশীদের কাজ সম্পর্কে লেখা। এতদিন বিদেশের গবেষণার খবর পড়েই ক্ষান্ত হতে হতো, বিজ্ঞানে বাংলাদেশীদের ভালো খবর পড়তে খুবই ভালো লাগে। এবং এটা দরকারও। আপনার নিজের গবেষণা, আপনার আশপাশের গবেষণা নিয়ে আরও লিখুন। গবেষক দলের জন্য শুভকামনা।

    1. @শ্রাবণ: হ্যাঁ আমি এ কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট। ভাইরাসটির প্রথম জিনোম সিকোয়েন্সের সময় আমি এসেম্বলি-র কাজ ও কিছু গবেষণামূলক কাজ করেছিলাম; গবেষণা নিবন্ধও প্রকাশিত হয়েছে দুইটি (https://goo.gl/2lgJ0N)। তোমার তৃতীয় পর্যবেক্ষণটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ; বাংলাদেশে শুধু ভারত নয়, মায়ানমার থেকেও গরুর ও সে সাথে ভাইরাসটির সংমিশ্রণ ঘটছে। তাই আসলেই এ রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর ভ্যাক্সিন তৈরি একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

  2. শ্রাবন ভাইয়ের সাথে আমিও একমত, যে সকল গবেষকরা দেশে বসেই গুরুত্বপূর্ন কাজগুলো করছেন তাদের নিয়ে বেশি বেশি লেখা উচিত(সেই সাথে যারা গ্র্যাভিটি হইতে বিদ্যুত টাইপ কাজ গুলো করছেন তাদের ফাঁকিগুলোও জনগনের সামনে তুলে ধরা উচিত)

  3. Jannatul Fiza Avatar
    Jannatul Fiza

    স্যার এই গবেষণার ব্যাপারে ২০১৮ তে পড়লেও এখন পড়েও ভালো লাগলো। এরকম পর্যায়ের কাজ একটা উন্নয়নশীল দেশের গবেষকরা করেছে। রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে আমাদের মেধাকে কাজে লাগাতে পারলে দেশেই অনেক গতিশীল গবেষণা হতে পারতো। আপনি প্রফেসর আনোয়ার স্যারের এই গবেষণায় সম্পৃক্ত ছিলেন এটা অনেক বড় অর্জন আপনার জন্যে

  4. আরাফাত রহমান Avatar
    আরাফাত রহমান

    অনেক ধন্যবাদ!

Leave a Reply to সিরাজাম মুনির শ্রাবণCancel reply

ই-মেইলে গ্রাহক হয়ে যান

আপনার ই-মেইলে চলে যাবে নতুন প্রকাশিত লেখার খবর। দৈনিকের বদলে সাপ্তাহিক বা মাসিক ডাইজেস্ট হিসেবেও পরিবর্তন করতে পারেন সাবস্ক্রাইবের পর ।

Join 906 other subscribers