microscopic shot of a virus

অণুজীব

লিখেছেন

লেখাটি বিভাগে প্রকাশিত

বিবর্তনের পথ ধরে আসা আজকের হোমো স্যাপিয়েন্সের সময়ের অনেক অনেক আগ থেকে তাদের অস্তিত্ব এই পৃথিবীতে। অণুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া তাদের অনেকের অস্তিত্বই আমরা টের পাই না। অথচ তারা আমাদের শরীরের ভেতর মহা আনন্দে বিচরণ করছে। আমাদের সামনেই গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে কিংবা একাকী টিকে আছে হাজার হাজার বছর ধরে। অথচ আমরা দেখতে পাচ্ছি না । কি অবাক ব্যাপার ! পাউরুটি -ওয়াইন থেকে শুরু করে দই, পনির- সকল খাদ্যদ্রব্য তৈরিতে তাদের উপস্থিতি একান্ত দরকার। শিল্প ক্ষেত্রে তাদের বাণিজ্যিক গুরুত্ব যেমন অপরিসীম। ঠিক তেমন ই বিভিন্ন রোগবালাই এর কারণ হিসেবে মানুষের অপকারেও তাদের জুড়ি মেলা ভার । তাদের নিয়েই আজকে কথা বলব। বলব অণুজীবদের কথা, আমাদের জীবজগতে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রাণের গল্প।

খুব সরল ভাবে বলতে গেলে , অণুজীবদের চারটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে: ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস *, আর্কিয়া আর ছত্রাক। ওরা সবাই :এক মিটার-এর দশলক্ষ ভাগ এর এক ভাগ বা তার থেকেও কম। কিছু ব্যতিক্রমী প্রোটজোয়া আকারে সামান্য বড় হলেও কখনই তা ১ মিলিমিটার এর বেশী বড় হয় না। আকারে ক্ষুদ্র হলেও এরা সংখ্যায় প্রচুর। ব্যাপারটা ব্যখ্যা করি তবে । পৃথিবীতে বর্তমানে মানুষের সংখ্যা আনুমানিক ৭,০০০,০০০,০০০ (সাতশ কোটি, বা ৭ x ১০৯)। সম্প্রতি জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এর একদল বিজ্ঞানী পৃথিবীর মোট ব্যাকটেরিয়া-র সংখ্যা গণনা করতে বসে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যান। সেই সংখ্যা প্রায় ৫,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ (পাঁচশ কোটি কোটি কোটি কোটি, বা ৫ x ১০৩০) । একই ভাবে ভাইরাস, প্রোটজোয়া আর ছত্রাক এর সংখ্যাও যে আমাদের তুলনায় অনেক অনেক বেশী সে কথা বলাই বাহুল্য।উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে , একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের শরীরে যে পরিমাণ লোহিত রক্তকণিকা কোষ রয়েছে তার চেয়েও বেশি রয়েছে ব্যাকটেরিয়া কোষ।

(* ভাইরাস অকোষীয় হওয়ায় সাধারণত একে জীব ও জড়ের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনকারী একটি সত্তা বলে ধরা হয় । তাই প্রচলিত শ্রেণিবিভাগে ব্যাকটেরিয়া , আর্কিয়া এবং ইউক্যারিওটস এর মধ্যে আলোচনা করার সময় একে জীবজগত থেকে আলাদা রাখা হয় । এ সম্বন্ধে আমরা পরবর্তীতে বিস্তারিত আলোচনা করব।)

অণুজীবকোষের বিবর্তন

প্রথম কোষ এবং বিবর্তনের শুরু
ইদানীং আমরা এটা অন্তত জানি যে যে এই পৃথিবীতে অণুজীবের মাধ্যমেই প্রথম প্রাণের বৈশিষ্ট্য বিকাশ লাভ করে । মোটামুটি সব জীবকোষ একই ভাবে গঠিত হওয়ায় এটা ভাবা হয় যে সব কোষ গুলি আসলে একটি সার্বজনীন আদিকোষ থেকে এসেছে । এই সার্বজনীন আদি পূর্ব পুরুষ কোষটিকে আমরা বলে থাকি The Last Universal Common Ancestor (LUCA) .

এই চিত্রটিতে পৃথিবীর আদি রূপ থেকে বিবর্তনের ক্রমবর্ধমান সময়কালে আমাদের আদি সার্বজনীন পূর্বপুরুষ সূচক কোষখানির  গঠনের কালকে রূপায়িত করা হয়েছে ।

( http://journalofcosmology.com/Abiogenesis108.html)

আজ থেকে প্রায় সাড়ে তিন বিলিয়ন বছর আগে এই কোষখানি  আবির্ভাবের পর থেকে শুরু হয় প্রাণের বিকাশ  , জিনগত পরিবর্তন , মিউটেশন তথা বিবর্তন। আজ আমাদের এই বিরাট প্রাণবৈচিত্র্য আর কিছু নয় বরং প্রায় চার বিলিয়ন বছর ধরে ঘটতে থাকা এইসব চলমান প্রক্রিয়ার একটি রূপমাত্র।

(চলবে ) 

লেখাটি 556-বার পড়া হয়েছে।


আলোচনা

Response

  1. সুন্দর শুরু। পরের পর্ব কবে পাবো? আর ৫ x ১০৩০ বলতে কি ৫ x ১০^৩০ বোঝাচ্ছো?? ওয়ার্ড থেকে কপি করার সময় অনেক ফরম্যাটিং ঠিকমতো আসে না।

Leave a Reply

ই-মেইলে গ্রাহক হয়ে যান

আপনার ই-মেইলে চলে যাবে নতুন প্রকাশিত লেখার খবর। দৈনিকের বদলে সাপ্তাহিক বা মাসিক ডাইজেস্ট হিসেবেও পরিবর্তন করতে পারেন সাবস্ক্রাইবের পর ।

Join 908 other subscribers