সম্প্রতি বিটি বেগুন এর ব্যাবহার নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন বিটি বেগুন যখন পোকা মাকড়ের জন্য বিষাক্ত, তাহলে নিশ্চয়ই সেটা মানুষের জন্য ও ক্ষতিকর হবে। ব্যাপারটা একটু আলোচনা করা যাক।
Bt অথবা Bacillus thuringiensis হচ্ছে একধরনের ব্যাক্টেরিয়া যারা বায়ো-পেস্টিসাইড হিসেবে অত্যন্ত কার্যকর হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত। এই জীবাণু একধরনের ক্রিস্টাল প্রোটিন প্রস্তুত করে যা বেশকিছু পোকামাকড়ের জন্য বিষাক্ত। কিছু নির্দিষ্ট পোকার জন্য প্রাণঘাতী এই বিষ মানুষের জন্য ও বিষাক্ত কিনা সেটা বুঝতে হলে এই বিষের কাজ করার প্রক্রিয়া টা বোঝা দরকার। বিটি’র ওই ক্রিস্টাল প্রোটিন যখন লেদা পোকার অন্ত্রে প্রবেশ করে তখন অন্ত্রের ক্ষারীয় পরিবেশে এক ধরনের জৈব রসের (protease enzyme) উপস্থিতিতে ক্রিস্টাল প্রোটিন টি ভেঙ্গে গিয়ে ডেল্টা -এন্ডোটক্সিন প্রস্তুত হয় যেটা লেদাপকার জম। এই ডেল্টা -এন্ডোটক্সিন কে গ্রহন করার জন্য লেদাপোকার অন্ত্রের কোষে এক ধরনের গ্রাহক রস (receptor) থাকে। ডেল্টা -এন্ডোটক্সিন যখন ঐ গ্রাহক এর সাথে যুক্ত হয় তখন লেদাপোকার অন্ত্রে ছিদ্র তৈরি হয়। এক পর্যায়ে পোকার মৃত্যু হয়।
বেগুন গাছের জিনে ঐ বিষ উৎপাদনকারী বিটি’র জিনটি ঢুকিয়ে বিটি বেগুন তৈরি করা হয়। লেদাপোকা যখন বিটির জিন বহনকারী বেগুন গাছের পাতা খায় তখন পাতার সাথে ঐ বিষ ও তার শরীরে প্রবেশ করে, যার ফলাফল হচ্ছে নিশ্চিত মৃত্যু।
এখন আসা যাক মানুষের কথায়। মানুষের অন্ত্রে যদি বিটি’র ক্রিস্টাল প্রোটিন প্রবেশ করে তাহলে কি হবে? প্রথমত, মানুষের অন্ত্রের পরিবেশ হচ্ছে অম্লীয়, লেদাপোকার মতো ক্ষারীয় নয়। যে কারনে ক্রিস্টাল প্রোটিন ভেঙ্গে ডেল্টা -এন্ডোটক্সিন তৈরি হবেনা, বরং অন্ত্রের গ্যাস্ট্রিক রসের উপস্থিতিতে ঐ প্রোটিন এর কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যাবে। আর যদি কোনভাবে ডেল্টা -এন্ডোটক্সিন নিজেই মানুষের অন্ত্রে প্রবেশ করে তাহলে ও ভয়ের কিছু নাই কারন মনুষ্য অন্ত্রে ডেল্টা -এন্ডোটক্সিন গ্রহন করার কোন গ্রাহক (receptor) নাই। এই বিটি টক্সিন যে মানুষ সহ অন্য স্তন্যপায়ীর জন্য ক্ষতিকর নয় সেটা শত শত বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশিত সত্য।
বিটি বেগুন বিষাক্ত- এই কথা শুধুমাত্র লেপিডপ্তেরা গোত্র ভুক্ত নির্দিষ্ট কিছু কিট পতঙ্গের জন্য প্রযোজ্য, স্তন্যপায়ীদের জন্য নয়।

সবকিছুর উপকারি-অপকারি দিক থাকে। বিটি এন্ডোটক্সিন এর ও কিছু ক্ষতিকর প্রভাব আছে। অপকারী পোকা দমনের পাশাপাশি বেশকিছু উপকারী প্রজাতি ও বিটির কারনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিবেশে বায়োলজিক্যাল কীটনাশক এর তুলনায় রাসায়নিক কীটনাশক এর ক্ষতিকর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব শতগুন বেশী ভয়ংকর। এসব বিবেচনায় বাংলাদেশে বিটি বেগুনের গবেষণা এবং প্রয়োগ কে উতসাহিত করা উচিত।
‘প্রোটিন ক্রিস্টাল’টা কোন প্রোটিনের ক্রিস্টাল সেটা বললে কোন জিনকে বেগুনে দেয়া হয়েছে সেটা বুঝতে সুবিধা হত। এটা জানাটা সেজন্য জরুরী।
তবেইন্টারেস্টিং।
cry প্রোটিন
আমি যতদূর জানি Cry প্রোটিন এর ৬০ ধরনের ভ্যারিয়েন্ট আছে। সবগুলা মানুষে একইরকম প্রতিক্রিয়া দেখায়না। বেগুণে Cry1Ac জিন ঢুকালে মানুষের ক্ষিত হয়না। কিন্তু কীটনাশকের সমন্বয়ে ব্যবহার করলে Cry1Ab দিয়ে কিডনি কোষের ক্ষতি হতে দেখা গেছে। Cry1Ac সেজন্য সম্ভবত বেশি ব্যবহ্রত।
এক প্রজাতির জীবের জিনোমে আরেক প্রজাতির জিনোম প্রবেশ করালে তার ফল কী হতে পারে তা নিখুঁতভাবে নির্ণয় করার মতো বিজ্ঞান এখনো আমাদের হাতে আসেনি। জিনোম কোনো Object Oriented Programming (OOP) জাতীয় কোডের মতো নয় যে এর বিভিন্ন অংশ encapsulated; অর্থাৎ এক অংশে কোনো নতুন কোড ঢোকালে আরেক অংশের কার্যক্রমে কোনো প্রভাব পড়বে না। তাই genetically engineered যেকোনো পণ্য বাজারে ছাড়ার আগে যেকোনো ওষুধের মতোই তার তিন/চার ধাপের clinical trial হতে হবে।
শালা আমেরিকার দালাল। শালা মনসেন্টোর দালাল। সারা বিশ্ব যেখানে জিএমও নিয়ে সচেতন, সব দেশে যেখানে এসব বর্জন করার আন্দোলন চলছে সেখানে এই শালা বলে এই সব আমদানি করতে। যেদিন এইসব খেয়ে ক্যান্সার হয়ে মরবে সেদিন বুঝবে কত ধানে কত চাল।
ঢালাও ভাবে অভিযোগ না করে সুনির্দিষ্ট পয়েন্টে যথোপযুক্ত যুক্তিপ্রমাণ তুলে ধরে বিতর্ক চালানো হলে সবাই উপকৃত হতে পারে।