Anirban Maitra Avatar

Anirban Maitra

  • টাসকিগি সিফিলিস এক্সপেরিমেন্ট: বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়

    গত শতকের তিরিশের দশকের আমেরিকা। প্রায় দশজনে এক জন আক্রান্ত হতো এক ব্যাকটেরিয়া-ঘটিত যৌন-সংক্রামক রোগে। নাম তার সিফিলিস। সারা দেহে দেখা দেয় যন্ত্রণাদায়ক ঘা এবং র‍্যাশ। এই অবস্থা থাকতে পারে প্রায় দুই বছর। অন্তিম পর্যায়ে (Late-stage) সিফিলিস থেকে হৃদপিণ্ড-মস্তিষ্কসহ দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে সমস্যা দেখা দেয়, তৈরি হতে পারে অন্ধত্ব’ও। এই রোগের সংক্রমণ রোধ করা মারাত্মক…

  • কখ এবং পাস্তুরঃ যে দুই বিজ্ঞানী বদলে দেন অণুজীববিদ্যার ইতিহাস

    ফরাসি বিজ্ঞানী লুই পাস্তুর এবং জার্মান চিকিৎসক রবার্ট কখ- অণুজীববিদ্যার দুই বড়ো স্তম্ভ। বিদ্যাজগত এবং জনপরিসরে প্রচলিত বিভিন্ন কুসংস্কার,অপবিজ্ঞান আর অলৌকিক চিন্তাভাবনার জাল ভেদ করে উনিশ শতকের শেষ দিকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো রোগের জীবাণুতত্ত্ব (Germ theory of disease)। এর অর্থ, রোগ কোনো অলৌকিক অরিশক্তির প্রভাবে ঘটে না, ঘটে না কোনো অশুভ বায়ুর প্রভাবে; রোগের কারণ খালি…

  • জীববিজ্ঞানের সুন্দরতম পরীক্ষণ

    ডিএনএকে বলা হয় জীবনের নীল নকশা। দ্বিসূত্রক ডিএনএ’তে A,T,C,G এই চারটি অক্ষরে জীবনের যাবতীয় তথ্যাদি ‘লেখা’ থাকে। জীবনের এই তথ্যকে ‘রেসিপির সাথে তুলনা করা যেতে পারে, যে রেসিপি’ অনুযায়ী তৈরি হয় নানাবিধ প্রোটিন। প্রোটিনের মাধ্যমেই আমাদের চোখের রং, চুলের ধরন থেকে শুরু করে কোষে অক্সিজেন পরিবহণ, বহিরাগত জীবাণুর মোকাবিলাসহ নানাবিধ শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্য প্রকাশিত হয়। যাহোক,…

  • কেমন হলো ‘দ্য মাঙ্গা গাইড টু বায়োকেমিস্ট্রি’?

    এবারের বইমেলায় প্রকাশিত বিজ্ঞানের বইগুলোর মধ্যে আগ্রহের শীর্ষে ছিলো দ্য মাঙ্গা গাইড টু বায়োকেমিস্ট্রি। তার একটি কারণ তো অনুবাদকের বিজ্ঞান-লেখালেখির সাথে পূর্ব-পরিচিতি, আরেকটি কারণ এই বইয়ের বিষয়বস্তু প্রাণ-রসায়ন। খুব মজার, রসালো বিষয় হিশেবে এর সুনাম একেবারেই নেই, বরং আছে উল্টোটা। উচ্চ মাধ্যমিকে জীবনবিজ্ঞান প্রথম পত্রের ‘কোষ-রসায়ন’ অধ্যায় দিয়ে শিক্ষার্থীরা পরিচিত হয় এই বিষয়টির সাথে। সেখানে…

  • জিএম শস্য: শঙ্কা ও সচেতনতা

    এই লেখাটিকে ‘জিএম শস্য: কী, কেন, কীভাবে‘ শীর্ষক লেখার দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। জিএম শস্য তৈরির বৈজ্ঞানিক কৃৎকৌশল ছাড়াও এটি নিয়ে সারা দুনিয়ায় যে জমজমাট বিতর্ক চলছে, তার কিছু ইশারা ওই লেখার শেষে দেওয়া হয়েছিলো। এই লেখায় তার কিছু দিক তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে। দুনিয়ার ইতিহাসের কোন মুহূর্তে জিএম ফসল ঠিক…

  • জিএম শস্য : কী, কেন, কীভাবে

    বিগত চল্লিশ বছরে পৃথিবীর জনসংখ্যা প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। কিন্তু আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ বেড়েছে সামান্যই। এরপরেও আমরা,রাজনৈতিক কারণ ছাড়া, পৃথিবীতে বড়সড় কোনো খাদ্যসংকটের মুখোমুখি হই নি। আসলে, উল্লেখ্য সময়কালে জনপ্রতি খাদ্যোৎপাদন প্রায় পঁচিশ শতাংশ বেড়েছে। জমির পরিমাণ যদি তেমন না-ই বেড়ে থাকে,তাহলে কীভাবে সম্ভব হলো এই চমৎকার? ফসল উৎপাদনের দারুণ বৃদ্ধির পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে…

  • নন্দিত-নিন্দিত বিজ্ঞানী ফ্রিটজ হেবার

    জীবমাত্র বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য গ্রহণ করে। বাস্তুতন্ত্রের প্রধান উৎপাদক উদ্ভিদ এবং খাদক প্রাণীদের খাদ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া ভিন্ন। উদ্ভিদ তার বৃদ্ধি ও পরিপুষ্টির জন্য কতগুলো উপাদান মাটি,পানি আর বাতাস থেকে গ্রহণ করে। এদের মধ্যে বিশেষ নয়টি উপাদান তার স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য বেশি পরিমাণে দরকার হয়, যাদেরকে বলা হয় ম্যাক্রো-পুষ্টি উপাদান। নাইট্রোজেন তাদের মধ্যে অন্যতম। নাইট্রোজেন নিউক্লিক…

  • পরজীবী-আখ্যান : জুয়েল ‘জম্বি’ বোলতা

    প্রাণীটার বৈজ্ঞানিক নাম Ampulex compressa। সাধারণ নাম জুয়েল ওয়াস্প,বা বাংলা করে বলতে পারি জুয়েল বোলতা। আফ্রিকা এবং এশিয়ার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এলাকাগুলোয় প্রধানত এর দেখা মেলে। দৈর্ঘ্যে এক ইঞ্চি থেকে সামান্য ছোটো। গায়ে বাহারি রঙ। খটকা লাগতে পারে,এটা কোনো কৃমি না,ভাইরাস না, কোনো ছত্রাকও না; সামান্য একটা বোলতা আবার পরজীবী হয় কীভাবে? আমরা হরদম যেসব বোলতা দেখি,সেগুলো…

  • ভাইরাসের পৃথিবী

    আমরা আমাদের চারপাশে দৃশ্যমান জগতের প্রাণি কিংবা উদ্ভিদ  সম্বন্ধে কমবেশি জানলেও না-দেখা ক্ষুদ্র জগতের বাসিন্দাদের নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাই না। এই ক্ষুদ্র জগতকে আমরা নাম দিয়েছি অণুজীব জগৎ; আর এই জগতের অন্যতম মহারথী হলো ভাইরাস। মজার ব্যাপা‌র, অন্যান্য অণুজীবেরা যে অন্তত ‘জীব’ এ ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হলেও ভাইরাস জীব, না-কি জড় সে বিষয়ে তারা…