শীতের দেশে পেঙ্গুইনের বিজ্ঞানময় চলাফেরা

পেঙ্গুইনের বসবাস মূলত বরফের দেশে, এন্টার্কটিকায়। সেখানে পরিবেশের তাপমাত্রা সবসময়ই হিমাঙ্কের নিচে থাকে। বছরের একটা সময় সে তাপমাত্রা আরও কমে যায়। একসময় দেখা যায় তাপমাত্রা কমতে কমতে মাইনাস ৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াস(৫৮  ডিগ্রী ফারেনহাইট) হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় মরার উপর খাড়ার ঘায়ের মত করে আসে ঠাণ্ডা বাতাস। দুয়ে মিলে পেঙ্গুইনের জন্য ভালই অসুবিধার সৃষ্টি করে। এমন অবস্থায় যেন বাঁচাই দায়! নবজাতক কিংবা ডিমের জন্য আরও  অসুবিধার সৃষ্টি করে। সবচে বেশি অসুবিধার কারণটা হয় ডিমের তা দেয়া নিয়ে। বাচ্চা ফোটাতে ডিমে তা দিতে হলে কিছু তাপের  দরকার। কিছুটা তাপ ছাড়া তো আর তা দেয়া হয় না।

পেঙ্গুইনেরা এমন অবস্থায় ভিন্ন এক পদ্ধতি অবলম্বন করে। তারা বড় একটা দল গঠন করে দলবদ্ধ হয়ে থাকে। দলবদ্ধ হয়ে থাকার  ফলে ভীষণ বেগের যে বায়ু সেটা সবার আগলে রাখার ফলে এতটা প্রভাব রাখতে পারে না। সাথে সাথে পরস্পর ঘষাঘষি,  নড়াচড়া করে থাকে যার ফলে তাৎক্ষনিক কিছু তাপ পাওয়া যায়। এরও পাশাপাশি মুখ দিয়ে মৃদু কিছু শব্দ উৎপাদন করে  থাকে যার ফলে নিজের শরীরে তাপের উৎপাদনে কিছু প্রভাব রাখে। একটা বিষয় খেয়াল করি  প্রবল শীতে আমারা খালি  গাঁয়ে থাকলে আমাদের শরীর কেপে কেপে ওঠে। তার কারণ কাঁপার ফলে পেশিতে পেশিতে ঘর্ষণ তৈরি হয় যেটা রক্তের  তাপমাত্রা কমতে দেয় না। রক্তের তাপমাত্রা তার সীমা থেকে গেলে মানুষ বেশিক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে না। শরীরের কাজ  শরীর নিজেই করে নেয়। এখানে পেঙ্গুইনের বেলায়ও সেই একই কথা প্রযোজ্য।

ডিমের তা দেবার জন্য ন্যূনতম যেটুকু তাপমাত্রা দরকার তা করে থাকে এভাবে। এজন্যই পেঙ্গুইনরা এমন সময় খুব ধীরে ধীরে  চলাফেরা করে। সামান্য যা করে তা অবশ্যই দলবদ্ধভাবে, একসাথে। একসাথে কেন দলবদ্ধ ভাবে চলাফেরা করে এই ব্যাপারটা  এতদিন ধরে জীববিজ্ঞানী আর পদার্থবিজ্ঞানীরা ধরতে পারছিলেন না। জার্মানীর নুরেমবার্গ ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক এ  নিয়ে স্টাডি করে এবার এর সমাধানে উপনীত হয়েছেন। তারা অবাক হয়ে দেখেছে কি নিপুণ ভাবে পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র কাজে  লাগিয়ে চলে। এ নিয়ে লাইভ সায়েন্সে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

Penguin Awareness Day: How will you celebrate the special penguin in your  life? - CBBC Newsround


হুট-হাট চলাফেরা করা মানেই বাতাসের নড়াচড়া, আর নড়াচড়া মানেই তাপ পরিবহনের একটা সুযোগ। এই সুযোগে সহজেই  শীতলতা এসে   কাবু করে দিতে পারে তাদের। সে সুযোগ পেইঙ্গুইনেরা দিতে চায় না তাই দল ভেঙ্গে যায় না, এলোমেলো ছুটে  যায় না।

প্রকৃতির মাঝে কত জায়গাতেই না ছড়িয়ে আছে বিজ্ঞান। দেখতে শুধু একটু চোখ লাগে। আর দেখতে পারলেই বোঝা যায়  বিজ্ঞানের মাহাত্ম, বিজ্ঞান কেন রোমাঞ্চকর।

Note: পেঙ্গুইন কখনো বরফের উপর ডিম রাখে না। পুরুষ পেঙ্গুইন মাসের পর মাস পায়ের উপর ডিম রেখে ডিমে  তা দেয়। বাচ্চা ফোটার আগ পর্যন্ত এটা করে। বরফে রাখে তখনই তখন ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়ে আসে।



মন্তব্য

  1. আরাফাত রহমান Avatar

    শ্রাবণ, তোমার লেখক পরিচয় ও নিজস্ব ছবি যুক্ত করে দিতে পারো এই লিঙ্কে গিয়ে : http://www.bigganblog.com/wp-admin/profile.php

    এই লেখাটা কি ফেসবুক থেকে কপি-পেস্ট করা? নাকি তুমি পোর্টেবল ডিভাইস থেকে লিখছো? এর ফরম্যাটটা খুব ঝামেলা করেছে।

    অার পোস্টটা বেশ মজার ছিলো। পেঙ্গুইনরা কেন দল বেঁধে থাকে, এটা জানতাম না!

    1. সিরাজাম মুনির শ্রাবণ Avatar

      লেখাটা ঠিক ঠাক করে দেবার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া। পোস্টটা আপনাকে সামান্যতম আনন্দ দিয়েছে সেটা জেনে খুব ভাল লাগল। 🙂
      আর ভাইয়া ছবি যুক্ত করার কোনো স্থান খুঁজে পেলাম না। কিভাবে আমি আমার ছবি যুক্ত করতে পারি?

  2. Ruhshan Ahmed Abir Avatar
    Ruhshan Ahmed Abir

    ইন্টারেস্টিং লেখা, চালিয়ে যান।

    1. সিরাজাম মুনির শ্রাবণ Avatar

      ধন্যবাদ ভাইয়া। 🙂 উৎসাহ পেলাম। আশা করি নিয়মিত চালিয়ে নিতে পারবো।

  3. খান ওসমান Avatar
    খান ওসমান

    ভাল বিষয়!

    কিছু জিনিস শুদ্ধ করে নিতে পারেন।
    ১. হিসাবটা – ৫৮ ডিগ্রী ফারেনহাইট হবে।
    ২. গাঁ মানে গ্রাম। গা মানে শরীর।
    ৩. ‘স্টাডি করেছেন’ না বলে ‘পরীক্ষা করেছেন বা পর্যবেক্ষণ করেছেন’ এধরনের বাংলা লিখলে ভাল বলে মনে করি।

    লিখতে থাকুন। শুভকামনা।

    1. সিরাজাম মুনির শ্রাবণ Avatar

      🙂 🙂
      থ্যাঙ্কু ভাইয়া। মাইনাসটা দিতে খেয়েল থাকে নি। অভ্রতে বানানে দারুণ সমস্যা হয়। আমি কোনোরকমে অভ্রতেই চালিয়ে নেই। এইরকম ত্রুটি সীমাবদ্ধতা গুলো শুধরে নেয়ার জন্যই তো আসা! দাবি রাখি আমার পোস্ট গুলোতে আপনি/আপনারা পড়ে ভুল ত্রুটি গুলো ধরে দিবেন।

  4. Safayet Ullah Neyam Avatar
    Safayet Ullah Neyam

    খুব ভালো হয়েছে ভাইয়া

মন্তব্য লিখুন