একই বিষয়ে পূর্বপ্রকাশিত লেখার দ্বিতীয় পর্ব। এটিও অনুবাদ।
দ্বিতীয় পর্বের লেখাটি নিউ ইয়র্ক টাইমস এ প্রকাশিত
অন্যান্য জীবপ্রজাতির মতই মানব প্রজাতিও দূর্ভিক্ষ, রোগ এবং আবহাওয়ার মত সাধারন প্রাকৃতিক নির্বাচন শক্তিগুলি (natural selection force, এর চেয়ে ভাল বাংলা খুঁজে পেলাম না) দিয়ে প্রভাবিত হয়ে তার বর্তমান রূপ পেয়েছে। সম্প্রতি, এরকম আরেকটি নতুন নির্বাচন শক্তি আমাদের গোচরে আসছে। চমৎকার এই ধারণাটি হল- গত প্রায় ২০,000 বছর ধরে মানুষ তার অগোচরেই নিজেদের বিবর্তনকে রূপ দিচ্ছে।
মানুষের সংস্কৃতি, বৃহদাকারে ব্যাখ্যা করতে চাইলে বলা যায় অর্জিত আচরণ, এমনকি প্রযুক্তিও আমাদের বিবর্তনের নির্বাচনিক শক্তি। এই শক্তির উপস্থিতির প্রমাণ একটু আশ্চর্যজনক, কারন অনেকদিন থেকেই ভাবা হত যে সংস্কৃতির ভূমিকা মানব বিবর্তনে ঠিক উল্টো। জীববিজ্ঞানীরা ভাবতেন যে অন্যান্য প্রাকৃতিক নির্বাচনিক চাপের পূর্ণশক্তি থেকে মানুষকে আড়াল করে রেখেছে মানুষের সংস্কৃতি; যেখানে জামাকাপড় এবং আশ্রয়স্থল ঠান্ডার প্রকোপ প্রশমিত করে এবং চাষাবাদ সঞ্চয়ের পথ খুলে দিয়ে দূর্ভিক্ষের হাত থেকে বাঁচায়।
এমনটাই ভাবা হত যে- এই বাফারিং প্রক্রিয়ার (বিভিন্ন বিবর্তনিক শক্তি নিষ্ক্রিয় করে দেয়া অর্থে বোঝানো) কারনে সংস্কৃতি মানুষের বিবর্তনের গতিকে ভোঁতা করে দিয়েছিল, এমনকি অদূর অতীতে পুরোপুরি বন্ধও করে দিয়েছিল। বহু জীববিজ্ঞানীই ইদানিং সংস্কৃতির ভূমিকাকে অন্য আলোয় দেখছেন।
যদিও সাংস্কৃতিক আচার-আচরণ আসলেই মানুষকে অন্য নির্বাচনিক শক্তিগুলি থেকে আড়াল করে রাখে, তারপরও সংস্কৃতি নিজেই একটি জোড়ালো নির্বাচনিক শক্তি। মানুষ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবর্তন, যেমন নতুন ধরনের খাদ্যাভাসকে জিনগতভাবে গ্রহণ করেছে, মানে সেই অনুযায়ী অভিযোজিত হয়েছে। এই জিন-সংস্কৃতি সম্পর্ক অন্যান্য নির্বাচন শক্তির চেয়ে দ্রুততায় বিবর্তনে কাজ করে, ‘জিন-সংস্কৃতি সহ-বিবর্তন মানুষের বিবর্তনের সবচেয়ে জোড়ালো শক্তি, এমনটাই ভাবতে বাধ্য হচ্ছেন কিছু জীববিজ্ঞানী’, নেচার রিভিউ পত্রিকায় বলছেন কেভিন ল্যাল্যান্ড এবং সহযোগীগণ। ড. ল্যাল্যান্ড স্কটল্যান্ড এর সেইন্ট এন্ড্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবর্তন বিজ্ঞানী।
জিন এবং সংস্কৃতির সহ-বিবর্তনের ধারনাটি প্রায় কয়েক দশক ধরেই বিজ্ঞানীরা ভাবছিলেন, কিন্তু সম্প্রতি এর পক্ষে যথেষ্ট যুক্তি দেয়া সম্ভব হয়েছে। দুইজন প্রধান চিন্তাবিদ, লস এঞ্জেলস ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রবার্ট বয়েড এবং ডেভিস ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পিটার রিচার্ডসন অনেক বছর ধরেই বলছেন যে মানব বিবর্তনে জিন এবং সংস্কৃতি একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত। ড. বয়েড বলছেন, ‘এমন না যে আমরা অবহেলিত ছিলাম, কিন্তু আমাদের ধারনাটি অগ্রাহ্য করা হচ্ছিল। কিন্তু গত কয়েক বছর এধারণার পক্ষে তথ্য-উপাত্তের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে।’
ড. বয়েড এবং ড. রিচার্ডসনের কাছে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট যেই প্রমাণটি আছে সেটি হল উত্তর ইউরোপের বহু মানুষের মধ্যে ল্যাকটোজ সহ্য করার ক্ষমতা তৈরি করা সাংস্কৃতিক নির্বাচন শক্তি। বেশিরভাগ মানুষ বড় হওয়ার পরে তাদের ল্যাকটোজ ভেঙে ফেলার জিনটিকে বন্ধ করে দেয়, তবে উত্তর ইউরোপের মানুষেরা ব্যাতীত। আদি গোখামার কেন্দ্রিক সংস্কৃতি লালনকারী উত্তরাধীকারীগণ ইউরোপের এই এলাকায় বসতি গড়েছিলেন প্রায় ৬,০০০ বছর আগে- তাদের দেহে জিন টি কার্যকরী থেকে যায় বড় হওয়ার পরেও।
এখন ল্যাকটোজ সহ্যক্ষমতাকে সাংস্কৃতিক আচার, যেমন দুধ পান, দ্বারা মানুষের জেনোমের বিবর্তনিক পরিবর্তনের উৎকৃষ্টভাবে চিহ্নিত করার উপায় হিসেবে দেখা হয়। সম্ভবত এই বাড়তি পুষ্টি মানুষের জন্য এতটাই সুবিধাজনক ছিল যে প্রাপ্তবয়ষ্কগণ অধিক পরিমানে সন্তানসন্ততি জন্ম দিতেন এবং এরাই পরে মূল জনগোষ্ঠিতে পরিণত হয়েছেন।
এই জিন-সংস্কৃতি আন্ত:সম্পর্কের ঘটনাটি অতি অনন্য। গত কয়েক বছরে, বিজ্ঞানীরা পুরো মানব জেনোম খুঁজে (জেনোম স্ক্যান) এমন কিছু জিন বের করতে পেরেছেন যারা বর্তমানে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। যেসব মানুষ বেশি বেশি সন্তানসন্ততি তৈরি করছেন তাদের ক্ষেত্রে যদি কোন জিনের একটি প্রকরণের যায়গায় আরেকটি প্রকরণ বেশি হারে নির্বাচিত হচ্ছে হয় তবে বোঝা যায় যে এই জিনগুলি প্রাকৃতিকভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত হচ্ছে এবং এমন চিহ্ন দিয়েই বোঝা যায় যে তারা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এইরকম জিন খোঁজার প্রক্রিয়ায় এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে যে মানুষের জেনোমের ১০ শতাংশ পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রায় ২,০০০ জিন, নির্বাচনের চাপের মধ্যে আছে।
বিবর্তনিকভাবে এই সবগুলি নির্বাচন চাপই সাম্প্রতিক- জার্মানির লিপজিগ এর ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর ইভোলুশনারি এনথ্রোপলজির জিনতত্ত্ববিদ মার্ক স্টোনকিং এর মতে মাত্র ১০,০০০ থেকে ২০,০০০ বছর আগেকার নির্বাচনিক চাপ এগুলো।বিজ্ঞানীরা নির্বাচন চাপগুলির কারন অনুসন্ধান করতে পারেন যদি বুঝতে পারেন যেই জিনগুলির উপর নির্বাচন ক্রিয়া করছে তাদের কাজটা কী। মানুষের জেনোমে থাকা প্রায় ২০,০০০ এর মত জিন এর বেশিরভাগের কাজকেই আমরা খুব ভালভাবে বুঝতে পারিনি এখনও; কিন্তু বড় পরিসরে বোঝার জন্য এসব জিন হতে প্রোটিনের কি ধরনের গঠন তৈরি হয় সেটা কে নির্দিষ্ট করতে পারি।
এই হিসেবে, অনেকগুলি জিন সাধারন নির্বাচন চাপগুলিতে সাড়া দিচ্ছে। কিছু কিছু দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থায় নিযুক্ত, এবং রোগ থেকে বাঁচার উপায়ের জন্য সম্ভবত এসব জিনের উপস্থিতিই বেশি। যেসব জিন ইউরোপিয় এবং এশিয়দের মধ্যে ত্বকের ফ্যাকাশে (ফর্সা অর্থে) রঙের জন্য দায়ী তারা আবহাওয়া এবং ভৌগলিক অবস্থানের প্রভাবের প্রতিক্রিয়া।
কিন্তু অন্য জিনগুলি সম্ভবত সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের জন্য সুবিধা পাচ্ছে। এসবের মধ্যে আছে এমন অনেকগুলি জিন যারা খাদ্যাভাস এবং পরিপাকের সঙ্গে যুক্ত; আর সম্ভবত এরা ১০,০০০ বছর আগে যখন মানুষ কৃষিকাজের সূত্রপাত ঘটালো তখনকার খাদ্যাভাসের প্রধান পরিবর্তনকে অনেকখানিই প্রতিফলিত করে।
আমাদের লালার মধ্যে অ্যামাইলেজ নামক একধরনের এনজাইম আছে যারা শর্করা ভেঙে ফেলে। যেসব মানুষ কৃষিপ্রধান সমাজে বসবাস করে তারা বেশি শর্করা খায় এবং তাদের মধ্যে শিকারপ্রধান (প্রাণী এবং মৎস) সমাজের মানুষের চেয়ে বেশি অ্যামাইলেজ জিনের কপি আছে। ল্যাকটোজ সহ্যের জন্য জিনেটিক পরিবর্তন শুধু ইউরোপেই দেখা যায়নি, বরং আফ্রিকার ৩টি রাখাল সমাজেও দেখা গিয়েছে। এই প্রত্যেকটি সমাজের মধ্যেই ভিন্ন ভিন্ন মিউটেশান (জিন বিন্যাসে পরিবর্তন) সম্পর্কিত, কিন্তু সবগুলির ফলাফল একটাই- ল্যাকটোজ ভাঙার জিনটি প্রাপ্তবয়ষ্ক হওয়ার পরও বন্ধ না হয়ে যাওয়া।
ছবি: মানুষের দেহে অ্যামাইলেজ জিনের কপি নাম্বারের সঙ্গে উচ্চ স্টার্চ এবং নিম্ন স্টার্চ গ্রহণের খাদ্যাভাসের সম্পর্ক পৃথিবীর মানচিত্রের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে।
নির্বাচন চাপ এমনকি আমাদের স্বাদগ্রহণ এবং ঘ্রাণের জিনগুলোকেও প্রভাবিত করেছে বলে আভাস পাওয়া গিয়েছে; এটা সম্ভবত মানুষ যখন যাযাবর থেকে এক জায়গায় থিতু হতে শিখেছে তখনকার জীবনযাত্রার পরিবর্তনের লক্ষণ। আরেকটি নির্বাচন চাপের দ্বারা প্রভাবিত জিনের উদাহরণ হল যারা হাড় বৃদ্ধিতে নিয়োজিত। এই প্রভাব সম্ভবত প্রায় ১৫,০০০ বছর আগে থেকে শুরু হয়েছে যখন মানুষ থিতু হতে শিখেছে এবং তার ওজন কমতে শুরু করেছে, ফলে হাড়কে কম ভার বহন করতে হত।
প্রভাবিত জিনের তৃতীয় দলটি হল যারা মস্তিষ্কের কাজে অংশগ্রহণ করে। এই জিনগুলির ভূমিকা অজানা, কিন্তু যখন মানুষ ছোট ছোট শখানেক মানুষের দলভূক্ত সমাজে বসবাস ছেড়ে বড় বড় হাজারখানেক মানুষের গ্রামে থাকা রপ্ত করেছে এবং এর ফলে একধরনে নির্বাচন চাপ তৈরি হয়েছে তার ফলস্বরূপই জিনগুলির মধ্যে পরিবর্তনের আভাস পাওয়া গিয়েছে। ড. ল্যাল্যান্ড বলছেন, ‘এটা খুবই সম্ভব যে কিছু কিছু পরিবর্তন বৃহৎ সমাজে থাকা মানুষের হিংস্রতার প্রভাবে ঘটেছে’।
যদিও জেনোম স্ক্যান নিশ্চিতভাবেই জানাচ্ছে যে সাংস্কৃতিক প্রভাবে আমাদের জিন প্রভাবিত হয়েছে, তারপরও এটা প্রমাণের পরীক্ষাগুলি পুরোপুরিই পরিসংখ্যানিক- কোন জিন কতটুকু গতানুগতিক সেটার উপর নির্ভর করে হিসাব করা। তাই, কোন জিন আসলেই নির্বাচনিক চাপে আছে কিনা সেটা বোঝার জন্য জীববিজ্ঞানীদের এমন পরীক্ষা করতে হবে যেখানে নির্বাচিত এবং অনির্বাচিত জিনের ধরনের পার্থক্যগুলি পরিমাপ করা যায়।
ড. স্টোনকিং এবং তার দল আসলে এমনই কিছু পরীক্ষা করেছেন ৩টি জিনের উপর যারা পরিসংখ্যানিক পরীক্ষায় সাংস্কৃতিক প্রভাবে নির্বাচনে ভালভাবে প্রমাণিত। এদের মধ্যে একটি জিনের নাম হল EDAR জিন, মানুষের চুলের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়ায় যেটা কাজ করে। EDAR জিনের একটি ধরন পূর্ব এশিয় এবং নেটিভ আমেরিকানদের মধ্যে অনেক পাওয়া যায়, এবং সম্ভবত এসব এলাকার মানুষদের মধ্যে ইউরোপিয়ান বা আফ্রিকানদের চেয়ে স্থুল চুলের অধিকারী হওয়ার পেছনে এই জিনটি কাজ করে।
ছবি: এশিয়, ইউরোপিয় এবং আফ্রিকার মানুষের চুলের স্থূলতা।
EDAR জিনটি এমনই কিছু সুবিধাপ্রাপ্ত হয়েছে সেটা অবশ্য এখন পর্যন্ত পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়নি। সম্ভবত স্থুল চুল থাকাটা এমনিতেই একটি সুবিধা, সাইবেরিয় পরিবেশে তাপ ধরে রাখার জন্য। অথবা এটা যৌণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গিয়েছে, যেখানে স্থুল চুলের অধিকারীরা সঙ্গী হিসেবে বেশি নির্বাচিত হয়েছে।
অথবা একটি তৃতীয় সম্ভাবনা থাকতে পারে এই ঘটনার পেছনে- এই জিনটি একটি প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে এমন একটি নিয়ন্ত্রক জিনকে চালু করে দেয় যেটা চুলের বৃদ্ধিকেও নিয়ন্ত্রণ করে। তাহলে, এই জিনটি সুবিধাপ্রাপ্ত হওয়ার কারন হতে পারে এর রোগ প্রতিরোধী ভূমিকার কারনে, যেখানে স্থুল চুল একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে এসেছে। অথবা তিনটা সম্ভাবনার সবগুলিই একসাথে কাজ করতে পারে। ড. স্টোনকিং বলছেন, ‘এটি এমন একটি ঘটনা যেটা নিয়ে আমরা অনেক কিছুই জানি, কিন্তু আবার অনেক কিছুই জানতে বাকি।’
এই জিনের ব্যাপারটি দিয়েই বোঝা যায় জীববিজ্ঞানীরা জেনোম স্ক্যানের মাধ্যমে নির্বাচন ইঙ্গিতের অর্থ বোঝার জন্য খুবই সতর্ক থাকেন। তবে কিভাবে আদি মানুষ আধুনিক মানুষে পরিনত হল, যেমন উত্তরপূর্ব এশিয়ার মানুষ কিভাবে নতুন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিল, সেসব বিষয়ে আলোকপাত করে উপরের উদাহরণ। ড. স্টোনকিং এর মতে, ‘এটাই আসল উদ্দেশ্য। আমি নৃতাত্ত্বিক অবস্থান থেকে দেখছি, এবং আমরা পুরো গল্পটা জানতে চাই।’
প্রাচীন মানুষের সংস্কৃতি খুব শ্লথ গতিতে পরিবর্তিত হয়েছে। ওল্ডোয়ান নামক একধরনের প্রস্তর যন্ত্র ২.৫ মিলিয়ন বছর আগে থেকে ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায় এবং তারপর ১ মিলিয়ন বছরে তেমন কোন পরিবর্তনই হয়নি এর ধরনে। আর এরপরে একিউলিয়ান যন্ত্র আসে যেটা ১.৫ মিলিয়ন বছর ধরে চলেছে। কিন্তু, গত ৫০,০০০ বছরে, আচরণগতভাবে আধুনিক মানুষের ক্ষেত্রে বহুধরনের এবং বহুমাত্রার সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ঘটেছে। এ থেকে এমন সম্ভাবনাই আমরা খুঁজে পাই যে সাম্প্রতিক সময়ের সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের দ্রুত গতির কারনে সাম্প্রতিক সময়ে মানব বিবর্তন অনেক উচ্চহারে ঘটছে।
যদিও কিছু জীববিজ্ঞানী এটাকে একটা সম্ভাবনা ভাবেন, কিন্তু এর পেছনে প্রমাণ প্রয়োজন। জেনোম স্ক্যানের বড়সড় সীমাবদ্ধতা আছে। তারা আদি নির্বাচনের চিহ্নগুলি দেখতে পায়না, যেগুলি নতুন মিউটেশানের আগমণের ফলে হারিয়ে যায় জেনোম থেকে; ফলে এমন কোন প্রমাণিত যুক্তি নাই যেটা বলতে পারে যে আগের চেয়ে এখন মানুষ বেশি পরিমানে প্রাকৃতিক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আবার যেসব জিন কে সুবিধাপ্রাপ্ত হিসেবে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে তারা অনেকগুলিই ফল্স পজিটিভ বা ভুল ফলাফলের দ্বারা প্রাপ্ত হতে পারে।
অন্যদিকে, স্ক্যানগুলি দিয়ে দূর্বলভাবে নির্বাচিত জিনগুলিকে সনাক্ত করাও কঠিন। তাই, তারা হয়তো শুধুমাত্র জেনোমের একটি ভগ্নাংশকে খুঁজে বের করছে যা সম্প্রতি প্রভাবিত হয়েছে। জিন-সংস্কৃতি সম্পর্কের গানিতিক মডেল আমাদেরকে জানাচ্ছে যে এই ধরনের প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিবর্তন অত্যন্ত দ্রুতগতির হয়। সংস্কৃতি প্রাকৃতিক নির্বাচনের একটি শক্তি হিসেবে দেখা দিয়েছে, আর এটা যদি মূল শক্তি হিসেবে প্রমাণিত হয় তবে মানুষের বিবর্তনের গতি দ্রুততর হচ্ছে, কারন মানুষ তার নিজের উদ্ভাবনের চাপে অভিযোজিত হচ্ছে।
(ছবিগুলি মূল লেখায় ছিলনা)
Leave a Reply