আইল্যান্ড অফ স্ট্যাবিলিটি কি

লিখেছেন

লেখাটি বিভাগে প্রকাশিত

প্রকৃতিতে প্রাপ্ত মৌলসমূহকে তাদের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মের পর্যায়বৃত্ততা অনুযায়ী সাজানোর জন্য পর্যায় সারনির উদ্ভব। মেন্ডেলিভ তার পর্যায় সারনি তৈরি করেছিলেন মৌলের পারমাণবিক ভর অনুযায়ী। বর্তমানে ব্যবহিত পর্যায় সারনির মূলভিত্তি, মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা বা প্রোটন সংখ্যা। পর্যায় সারনির এরকম পরিবর্তন সত্ত্বেও এর অন্যতম ত্রুটি, “একই মৌলের একাধিক আইসোটোপের সহ-অবস্থান” -র সমাধান হয়নি।

Island of stability - Wikipedia

এরকম আরও বিভিন্ন কারণে পরবর্তীতে প্রতিটি মৌলের সকল আইসোটোপকে একসাথে নিয়ে আরেকটি সারনি তৈরি হয় যা, Table of Isotopes বা Table of Nuclides নামে পরিচিত। এর ব্যবহার সাধারণত নিউক্লীয় পদার্থবিজ্ঞান ও নিউক্লীয় রসায়ন এ হয়। এই সারনি থেকে আইসোটোপের তেজস্ক্রিয়তার ধরন, তার half-life প্রভৃতি সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যায়। এই সারনির অধিকাংশ আইসোটোপই অস্থায়ী ও মানবসৃষ্ট। সাধারণত মৌলের স্থায়িত্ব নির্ভর করে তার nucleus এর উপর। nucleus যত বড় হবে, স্থায়িত্ব তত কমবে। এর কারণ nucleus এ অবস্থিত প্রোটন সবসময় একে অপরকে বিকর্ষণ করে। নিউট্রনগুলোর মাঝেও দুর্বল বিকর্ষণ বল কাজ করে। nucleus এ সবল নিউক্লীয় বল nucleus কে ভেঙে যেতে দেয় না।

nucleus এ nucleon (প্রোটন ও নিউট্রন) ইলেকট্রনের shell বা কক্ষপথের ন্যায় shell এ অবস্থান করে এবং প্রতিটি shell এ সর্বোচ্চ nucleon এর সংখ্যা স্থির। ব্যাপারটা অনেকটা অষ্টক তত্ত্বের মত। এই সংখ্যাকে “magic number” বলা হয়। যদিও আইসোটোপের স্থায়িত্ব shell এ অবস্থিত নিউট্রন ও প্রোটন এর অনুপাতের উপরও নির্ভর করে।

Magic number এর ধারণা থেকে বিজ্ঞানীরা নতুন একটি hypothesis দেন। এতে বলা হয়, অত্যন্ত ভারী মৌলের (Super-heavy Element) আইসোটোপ যদি এমন হয় যে, তাদের nucleon এর অধিকাংশই প্রোটন দিয়ে পূর্ণ এবং অল্পকিছু নিউট্রন দিয়ে পূর্ণ তবে তাদের স্থায়িত্ব স্বাভাবিকের থেকে বেশি হতে পারে। এরকম আইসোটোপগুলোর অবস্থান isotope table এ স্থায়ী আইসোটোপ থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন, অনেকটা দ্বীপের মত। এদের একত্রে Island of Stability বলা হয়। যদিও বাস্তবে এদের অস্তিত্ব আছে কি না তা এখনো পরীক্ষাধীন।

তবে সাম্প্রতিক বেশকিছু পরীক্ষার ফলাফল বিজ্ঞানীদের মনে আশা জোগাচ্ছে যে এরকম দ্বীপের অস্তিত্ব আসলেও সম্ভব। সর্বশেষ, 117 তম মৌল কৃত্রিমভাবে তৈরি করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা সহ-উৎপাদ (by-product) হিসেবে Lr-266 আইসোটোপ পেয়েছেন যার half-life প্রায় ১১ ঘণ্টা, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।

যদিও কেউই এখনো জোর দিয়ে বলতে পারে না এরকম কোন দ্বীপ, isotope table এ আছে কি না। অনেকে ধারণা করেন তারার বিস্ফোরণ বা নিউট্রন তারার একীভবনে এরকম আইসোটোপ তৈরি সম্ভব। যদিও তার কোন প্রমাণ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

N.B. http://en.wikipedia.org/wiki/Table_of_nuclides_(complete) এই ওয়েবসাইট এসম্পূর্ণ isotope table পাওয়া যাবে।

লেখাটি 270-বার পড়া হয়েছে।


আলোচনা

Response

  1. ইন্টারেস্টিং লেখা। বিজ্ঞানব্লগে স্বাগতম! লেখাটাতে ঘনঘন ইংরেজী শব্দ এসেছে, এটা যতটা কমানো যায়। পরের লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।

Leave a Reply to আরাফাত রহমানCancel reply

ই-মেইলে গ্রাহক হয়ে যান

আপনার ই-মেইলে চলে যাবে নতুন প্রকাশিত লেখার খবর। দৈনিকের বদলে সাপ্তাহিক বা মাসিক ডাইজেস্ট হিসেবেও পরিবর্তন করতে পারেন সাবস্ক্রাইবের পর ।

Join 908 other subscribers