ভাইরাস শব্দটা শুনলেই আমাদের রোগের কথা মনে পড়ে। ভাইরাস আমাদের রোগ সৃষ্টি করে। ভাইরাস আমাদের কোষকে আক্রান্ত করে আবার কোন কোন ভাইরাস ব্যাকটেরিয়াকেও আক্রান্ত করে। তবে আরও বিস্ময়কর ব্যাপার হল ভাইরাসও ভাইরাসকে আক্রান্ত করে ; অর্থাৎ ভাইরাসও ভাইরাসের রোগ সৃষ্টির কারণ হতে পারে ।
এই ভাইরাসের ভাইরাসকে আবিষ্কার করেন Bernard La Scola এবং Christelle Desnues. তারা এর নামকরণ করেন সেই চিরচেনা স্যাটেলাইট স্পুটনিক এর নামে। ব্যাকটেরিওফেজের নামের সাথে মিল রেখে এদের অনন্যতার কারণে তাদের অন্য গোত্র (Family) ‘ভাইরোফেজ’ এর অন্তর্ভুক্ত করেন।
এই স্পুটনিক এর গল্প আসলে শুরু হয় ১৯৯২ সালে ইংল্যান্ডে। একদল গবেষক অ্যামিবা নিয়ে গবেষণার সময় একটি আণুবীক্ষণিক দৈত্য আবিষ্কার করেন, এটা এতটাই বড় যে একে ব্যাকটেরিয়া বললে ভুল হবে না। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে La Scola দেখন যে আসলে এটি একটি ভাইরাস যা mimivirus কেও আকারে হারিয়ে দেয়।
পরবর্তীতে আবারও অনেক খোঁজার পর অ্যামিবাতে পাওয়া গেল এবং এর আকার দেখে বিজ্ঞানীরা এই দৈত্যকে নামকরণ করেন mamavirus নামে।
এবার এই mamavirus নিয়ে গবেষণা শুরু হল। আর দেখা গেল এই রেকর্ড ভঙ্গকারীরা অ্যামিবাকে আক্রান্ত করে এবং সেখানেই নিজেদের প্রতিরূপ তৈরি করে। ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপের নিচে এটি দেখতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখেন এর মধ্যে রয়েছে আরও ছোট ছোট অংশ যাদের আকার ৫০ ন্যানোমিটার। এবং এরা mamavirus এ নিজেদের স্বতন্ত্রতা বজায় রাখে। আর এগুলোই স্পুটনিক ।
La Scola এবং Desnues দেখেন যে স্পুটনিক নিজে নিজে অ্যামিবার দেহে বংশবৃদ্ধি করতে পারে না। এরা আক্রান্ত করে mamavirus কে এবং একে host হিসেবে গ্রহণ করে বৃদ্ধি পেতে থাকে। যার কারণে অ্যামিবাকে আক্রমণ করারা mamavairus এর যে ক্ষমতা তা ৭০% পর্যন্ত কমে যায় ।
এর মাধ্যমেই বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হন যে ভাইরাসও ভাইরাস কে আক্রান্ত করতে পারে ; ভাইরাসও ভাইরাসের দেহে রোগ সৃষ্টির কারণ হতে পারে। ভাইরাস জড় না জীব এ নিয়ে যে দ্বন্দ্ব রয়েছে তা অনেকটাই প্রশমিত হবে এই আবিষ্কারের মাধ্যমে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।
সূত্র: curiosity
Scienceblogs.com
Leave a Reply