পৃথিবীর সবচেয়ে অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো জীবনের অস্তিত্ব এবং জীবনের বিস্ময়কর সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো জীববৈচিত্র্য। সম্প্রতি one earth জার্নালে মৌমাছি প্রজাতির জীববৈচিত্র্য বিলুপ্তি নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। সেই গবেষণাপত্রের আলোকে লেখক কারিনা শাহ ( karina shah) New Scientist এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। প্রতিবেদনের ভাবার্থ নিচে দেওয়া হলো :
১৯৯০ এর দশক থেকে পৃথিবীজুড়ে নথিভুক্ত মৌমাছির প্রজাতির সংখ্যা তীব্রভাবে কমে যাচ্ছে।
আর্জেন্টিনার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ কোমাহুয়ের (The National University of Comahue in Argentina) এডুয়ার্ডো জাট্টারা এবং মার্সেলো আইজেন বিশ্লেষণ করেছেন যে প্রতিবছর কতগুলো বন্য মৌমাছি প্রজাতি(The Global biodiversity information facility) গ্লোবাল বায়োডাইভার্সিটি ইনফরমেশন ফ্যাসিলিটিতে নথিভুক্ত হয়েছে ।এটা জনসাধারণের জন্যে উন্মুক্ত প্লাটফর্ম যেখানে গবেষকরা এবং নাগরিকরা মৌমাছির প্রজাতির তথ্য নথিভুক্ত করতে পারেন।
তারা দেখতে পান যে ১৯৯০ এর আগে থেকে আমাদের নথিভুক্ত মৌমাছির তুলনায় ২০০৬ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে চতুর্থাংশেরও কম প্রজাতি দেখা গেছে। ২০০০ সাল থেকে মৌমাছির নথিভুক্তিকরণের কমার হার প্রায় ৫৫ শতাংশ বেড়েছে যা উদ্বেগজনক। সুতরাং এটি পর্যবেক্ষণের ঘাটতি নয় বুঝা যাচ্ছে।
গবেষক জাটারা বলেছেন,
আমাদের কাজ বিশ্বব্যাপী মৌমাছি হ্রাসের প্রথম দীর্ঘমেয়াদী মূল্যায়ন। পূর্ববর্তী মৌমাছি গবেষণা একটি নির্দিষ্ট প্রজাতি বা একটি নির্দিষ্ট জায়গায় সীমাবদ্ধ ছিলো ।
মেলিটিডি পরিবার
ছবিসূত্রঃWestern Honey Bee
গবেষকরা দেখেছেন যে হ্রাসটি সকল মৌমাছি পরিবারে একই নয়। ১৯৯০ এর দশক থেকে প্রায় ২০০ মৌমাছি প্রজাতির বিরল মেলিটিডি (মেলিটিডি একটি ছোট পরিবারঃMelittidae family) পরিবার ৪১ শতাংশ কমেছে যেখানে (Halictidae) হ্যালিক্টিডি পরিবারের মৌমাছি কমেছে ১৭ শতাংশ । এর মানে এই নয় যে সব অনথিভুক্ত মৌমাছি প্রজাতি বিলুপ্ত হয়েছে। কিন্তু তারা আগের তুলনায় বিরল তাই লোকজন এখন এই প্রজাতিভুক্ত মৌমাছিদের দেখছে না ফলে নথিভুক্ত হচ্ছে না।
(হ্যালিক্টিডি হলো আন্তোফিলা মৌমাছির দ্বিতীয় বৃহত্তম পরিবার, এই প্রজাতিগুলি সারা বিশ্ব জুড়ে দেখা যায় এবং সাধারণত গাঢ় বর্ণের ধাতব রংয়ের দেখতে হয়)।
হ্যালিক্টিডি পরিবার
ছবিসূত্রঃMDC
লেখক জাটারা বলেছেন,
প্রাকৃতিক আবাসস্থল ধ্বংস, কীটনাশক ওষুধের অতিমাত্রায় ব্যবহার এবং জলবায়ু পরিবর্তন প্রজাতির ঐশ্বর্য বিনাশের হ্রাসের কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করা যায়। আমরা আমাদের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে খাওয়ানোর জন্য আরও বেশি খাদ্য উৎপাদন করছি। [আমরা] এক প্রজাতির শস্য জন্মানোর জন্য অত্যন্ত অর্থনৈতিকভাবে সুবিধাজনক উপায় ব্যবহার করছি, যা মৌমাছির প্রাকৃতিক আবাসকে অনেকটা অপসারণ করছে।
ব্রিটেনের পূর্বের রিপোর্ট প্রজাতিগুলির বিশ্বব্যাপী পতন এর প্রতিবিম্ব প্রকাশ করে । তবে গবেষকরা উল্লেখ করেছেন যে একটি পূর্ণ চিত্র অর্জনের জন্য আরও প্রত্যন্ত অঞ্চলে গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। এখনকার বেশিরভাগ বিদ্যমান তথ্য উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপ থেকে নেওয়া, যেখানে মৌমাছি প্রজাতির নথিভুক্তিকরণ করা সহজ।
তথ্যসূত্রঃOne Earth, DOI: 10.1016/j.oneear.2020.12.005
নিউজসূত্রঃ A quarter of all known bee species haven’t been seen since the 1990s
Leave a Reply