[পাঠ্যবইয়ের বিজ্ঞানের সহজ পাঠ ( একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য অধিক উপযোগী ) ]
আজ থেকে প্রায় দুই কোটি বছর পূর্বে প্লিউসিন যুগে উদ্ভব হওয়া হোমোস্যাপিয়েন্স তথা আমরা “ভূলোক দ্যূলোক গোলোক ভেদিয়া” পৌঁছে গেছি অসীম মহাবিশ্বের তরে। আমরা জয় করেছি স্থল, জল, মরুভূমি, আন্টার্কটিকা সবকিছুই। তবে পৃথিবীর বুকে যে শুধু আমাদেরই বিচরণ, এরকমটা নয়। বৈজ্ঞানিকগন এ পর্যন্ত দুই লাখ সত্তর হাজার উদ্ভিদ এবং পনেরো লাখেরও বেশি প্রাণি প্রজাতি নিশ্চিতকরণ করেছেন। পৃথিবীর সমস্ত জলচর, উভচর, স্থলচর কিংবা খেচর সকলের মধ্যেই কিছু না কিছু পার্থক্য চোখে পড়ে। এই পার্থক্য যেমন জিন-প্রজাতি-ইকোসিস্টেম গত, তেমনি হতে পারে দেহের গঠন, বসতি নির্বাচন, চলন, প্রজনন ইত্যাদিতেও। জীববিজ্ঞানীরা এই প্রভেদের নাম দিয়েছেন প্রাণিবৈচিত্র্য এবং সহজভাবে তাদেরকে করেছেন তিনটিশ্রেণিতে বিভক্তঃ জিনগত-প্রজাতিগত এবং বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র্য।
পৃথিবীতে ৯৫-৯৭% ননকর্ডেটদের বিপরীতে মাত্র ৩-৫% কর্ডেটদের বসবাস । হয়তো ভাবছো কর্ডেট, ননকর্ডেট এরা আবার কারা! যাদের দেহে কখনোই নটোকর্ড থাকে না তারাই হচ্ছে ননকর্ডেট। যেমনঃ তোমাদের পছন্দের ঘাসফড়িং, প্রজাপতি কিংবা বিরক্তিকর মশা, কেঁচো এসব। আর যাদের দেহে সারাজীবন কিংবা শুধুমাত্র ভ্রুণ অবস্থায় নটোকর্ড থাকে, তারাই কর্ডেট। যেমনঃ তুমি, আমি, ব্যাঙ, সাপ ইত্যাদি। এবার হয়তো ভাবছো নটোকর্ড আবার কি জিনিস! চলো তার আগে তোমাদেরকে ফিটাসের সাথে পরিচিত করিয়ে দেই। তুমিই কিন্তু একসময় ফিটাস ছিলে। শুধু কি তুমি? আমরা সবাই ছিলাম। মাতৃগর্ভে আমাদের বয়স যখন ৯-১০ সপ্তাহের মধ্যে থাকে তখনই আমাদের ডাক নাম ফিটাস। ফিটাস আবার আমাদের মায়েদের জরায়ুতে প্রায় ৩৮ সপ্তাহ অবস্থান করে। তারপর তুমি আমি মায়ের কোলে চলে আসি, আর মা বলে উঠেন, ” আমার আদরের মানিকটা। ” আর শোন, নটোকর্ডের সাথে পরিচিত হতে পারবে আর-ও বড়ো হলে। তখন তোমাদের হাত আসবে প্রখ্যাত সব বৈজ্ঞানিক ও গবেষকদের বইগুলো।
আমি তোমাদেরকে আজকে শুনাবো প্রাণিবিদ্যার মৌলিক গল্পগুলো। আচ্ছা, জানো কি প্রাণিবিদ্যার জনক কে? গ্রিক দার্শনিক এরিস্টটল হচ্ছেন প্রাণিবিদ্যার জনক। ব্রিটিশ বিজ্ঞানী উইলিয়াম হার্ভে-কে বলা হয় শারীরবিদ্যার জনক। ভ্রুণবিদ্যায় মৌলিক গবেষণায় তিনি বিখ্যাত হয়ে আছেন। অস্ট্রিয়ার বিজ্ঞানী গ্রেগর জোহান মেন্ডেলকে বলা হয় বংশগতিবিদ্যার জনক। দীর্ঘ সাত বছর মটরশুঁটি গাছ নিয়ে গবেষণালব্ধ ফলাফলের উপর ভিত্তি করে তিনি দুটো সূত্র দিয়েছিলেন যা বংশগতির মৌলিক ভিত্তিরূপে পরিগনিত হয়। তোমরা কি জিনের মানুষকে চিনো? হর গোবিন্দ খোরানা হচ্ছেন সেই জিনের মানুষ যিনি কৃত্রিম জিন আবিষ্কার করেছিলেন। ১৯৬৮ সালে তিনি সহ আরো দুজন বিজ্ঞানী Robert W. Holley এবং Marshall W. Nirenberg এর সাথে জিনতত্ত্ব ও মলিকুলার বায়োলজিতে অবদানের জন্য শারীরবিদ্যা ও চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন। ক্যারোলাস লিনিয়াসকে তোমরা সবাই চিনো। তিনি শ্রেণিবিন্যাসের জনক। আমাদের প্রিয় ফল আমের বৈজ্ঞানিক নাম কি জানো? বাংলাদেশ এবং ভারতে যে প্রজাতির আম চাষ হয় তার বৈজ্ঞানিক নাম Mangifera indica. কি অদ্ভুত নাম না? প্রতিটি প্রজাতিরই এরকম আলাদা আলাদা নাম আছে৷ যেমনঃ মানুষের Homo sapiens, গরুর Boss indica, ছাগলের Capra hircus, ইঁদুরের Bandicota benglalensis, বিড়ালের Felis catus, খরগোশের Oryctolagus cuniculus, সিংহের Panthera leo, রয়েল বেঙ্গল টাইগারের Panthera tigris, মশার Culex pipiens, মাছির Musca domestica। এসব নামগুলো এসেছে ল্যাটিন অথবা রূপান্তরিত ল্যাটিন ভাষা থেকে। তোমাদের প্রিয় লিনিয়াস কিন্তু এই দ্বিপদ নামকরণের প্রবর্তক ছিলেন। আবার জানো কি “survival of the fittest ” কথাটি পাওয়া যায় চার্লস রবার্ট ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচন মতবাদে। বিবর্তনবাদ পড়তে গেলে বিস্মিত হয়ে যাবে। কিভাবে আমরা অভিযোজিত হয়ে টিকে আছি পৃথিবীর বুকে!
বহুকোষীয়দের মধ্যে সরলতম পরিফেরা থেকে শুরু করে কোষ টিস্যুমাত্রার নিডারিয়া, টিস্যু অঙ্গ মাত্রার পরজীবি চ্যাপ্টাকৃমি, ভ্রান্তসিলোমযুক্ত গোলকৃমি, প্রাণিজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম পর্ব মলাস্কার কম্বোজ শামুক, নেফ্রিডিয়া নামক রেচন অঙ্গ বিশিষ্ট অঙ্গুরীমাল এবং প্রাণিজগতের সবচেয়ে বড় পর্ব আর্থ্রোপোডা থেকে শুরু করে প্রাণিজগতে দশটি আলাদা আলাদা পর্ব রয়েছে। এদের আবার উপবিভাগ, শ্রেণি ইত্যাদির সাথেও পরিচিত হতে পারবে আস্তে, আস্তে; বড় হলে। ভ্রুণাবস্থায় নটোকর্ড থাকে বলে আমরা কর্ডেট, এই নটোকর্ড মেরুদণ্ড দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয় বলে আমরা ভার্টিব্রেট, স্ত্রীদেহে সক্রিয় স্তনগ্রন্থি থাকে বিধায় আমরা ম্যামাল এবং আঁকড়ে ধরার উপযোগী হাত আছে বলে আমরা প্রাইমেট। মানুষ হচ্ছে প্রাইমেট বর্গীয় স্তনপায়ী প্রাণি। আক্ষরিক অর্থে প্রাইমেট মানে হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাণিগোষ্ঠী। মানুষ এই গোষ্ঠীর সভ্যতম এবং মহান সৃষ্টিকর্তার সেরা সৃষ্টি বিধায় অনেকেই প্রাইমেটের অর্থ করেছেন পরমপ্রাণি।
হৃদপিণ্ডের সাথে তোমরা সবাই পরিচিত। কেউ কেউ মজা করে বলে উঠে এটা নাকি রোমান্টিক অঙ্গ। বলতে পারবে হৃদপিণ্ড দেহের কোথায় অবস্থান করে? সহজ ভাষায় তোমাদেরকে আজকে বৃক্ক, পাকস্থলী, যকৃত, অগ্নাশয়, হৃদপিণ্ড এবং ফুসফুসের অবস্থানের কথা বলবো। মানবদেহের দুটি বৃক্ক অবস্থান করে উদর গহ্বরের কটি অঞ্চলে মেরুদণ্ডের উভয় পাশে। পাকস্থলী চুপটি করে বসে থাকে ডায়াফ্রামের নিচে কিন্তু উদরের উপরে। যকৃতকে বলা হয় আমাদের দেহের জৈব রসায়নাগার। কারণ সে নাকি প্রায় পাঁচ শতাধিক জৈবনিক কাজ সম্পন্ন করে থাকে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা। যকৃত প্রায় ১৫০০ ঘন সেন্টিমিটার পর্যন্ত রক্ত সঞ্চয় করে রাখতে পারে। তুমি যখন মেডিকেল সাইন্সে মানবদেহ নিয়ে পড়তে যাবে তখন দেখবে, যকৃত অবস্থান করছে উদর গহ্বরের উপরিভাগে অথবা ডায়াফ্রামের নিচে, ডিওডেনাম ও ডান বৃক্কের উপরে কিংবা পাকস্থলীর ডান পাশে। এসবের যেকোন দিক থেকেই তুমি যকৃতকে খুঁজে পাবে। অগ্নাশয় চুপ করে বসে থাকে পাকস্থলীর নিচে এবং তার বিস্তার ডিওডেনামের ফাক থেকে প্লীহা পর্যন্ত। ফুসফুস থাকে বক্ষ গহ্বরের দুই পাশে এবং হৃদপিণ্ড অবস্থান করে এই দুই ফুসফুসের মধ্যখানে ডায়াফ্রামের উপরিভাগে। কি, একটু কঠিন মনে হচ্ছে? সমস্যা নেই আস্তে আস্তে সবকিছুই বুঝতে পারবে।
অনেক তো পড়াশোনা হলো। চলো এবার কিছু খেয়ে নেই৷ আমরা মানুষেরা হচ্ছি সর্বভুক প্রাণি। তুমি যখন ভাত, রুটি, চিনি কিংবা শাকসবজি মুখে নেবে তখন টায়ালিন, অ্যামাইলেজ, মল্টেজ, সুক্রেজ এসব এনজাইমের প্রভাবে সেই খাবারগুলো শেষমেষ গ্লুকোজে পরিণত হবে এবং সেই গ্লুকোজ চলে যাবে আমাদের রক্তে। এভাবে আমিষ জাতীয় খাবার ভেঙে অ্যামিনো এসিড এবং স্নেহদ্রব্য ভেঙে ফ্যাটি এসিড ও গ্লিসারল উৎপন্ন হয়। আর সবশেষে তা মিশে যায় রক্তে। এভাবেই তো খাবার থেকে আমরা শক্তি পাই। এতক্ষণ যে ভাঙন ঘটলো, হরমোন এবং এনজাইমের প্রভাবে জটিল খাবার সরল হয়ে দেহকোষের গ্রহণ উপযোগী হয়ে উঠলো, এই প্রক্রিয়ার নামই পরিপাক। যে তন্ত্রের মাধ্যমে খাদ্যবস্তুর পরিপাক এবং শোষণ ঘটে, তাকে পৌষ্টিকতন্ত্র বলে। আমাদের পৌষ্টিকতন্ত্রে লালাগ্রন্থি, যকৃত, অগ্নাশয়, গ্যাস্ট্রিকগ্রন্থি এবং আন্ত্রিকগ্রন্থি রয়েছে এইকাজে সহায়তা করার জন্য। তাছাড়াও পৌষ্টিকনালির অংশ হিসেবে মুখছিদ্র, মুখ গহ্বর, গলবিল, অন্ননালি, পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদান্ত্র ইত্যাদি সবই আমাদের পৌষ্টিকতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
আচ্ছা, ছোটবেলায় হাত কেটে গেলে কি করতে? মনে পড়ে কি? হাত মুখে দিতে না! মুখে না দিলেও আম্মু কিন্তু তোমাকে খুব বকে দিতেন। কারণ রক্ত আমাদের দেহের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি তরল যোজক টিস্যু। সাধারণত রক্ত ক্ষারীয় হলেও অজৈব লবণের উপস্থিতির জন্য রক্তের স্বাদ নোনতা হয়ে থাকে। রক্তে তিন ধরনের কণিকা, পানি, অজৈব ও জৈব উপাদান ইত্যাদি পাওয়া যায়। এবার বলি ABO ব্লাড গ্রুপ নিয়ে। A গ্রুপের রক্ত যাতে অ্যান্টিজেন A, B গ্রুপের রক্ত যাতে অ্যান্টিজেন B, AB গ্রুপের রক্ত যাতে অ্যান্টিজেন Aও B বিদ্যমান থাকে। কিন্তু O গ্রুপে কোন ধরনের অ্যান্টিজেন পাওয়া যায় না। জীববিজ্ঞানী কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার ১৯০১ সালে রক্তকণিকার অ্যান্টিজেনের উপস্থিতি এবং অনুপস্থিতির উপর নির্ভর করে এরকম শ্রেণিবিন্যাসটি করেছিলেন। মনে রাখতে পারো, তোমার রক্তের গ্রুপ যদি O হয়, তবে তুমি হচ্ছো সার্বজনীন দাতা এবং AB হলে সার্বজনীন গ্রহিতা। ১৯৪০ সালে কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার এবং উইনার রেসাস বানরের রক্ত খরগোশের শরীরে প্রবেশ করিয়ে খরগোশের রক্তরসে এক ধরনের এন্টিবডি উৎপাদনে সক্ষম হন। এ ফলাফল থেকে তারা ধারণা করে যে, মানুষের লোহিত রক্তকণিকার ঝিল্লীতে রেসাস বানরের লোহিত কণিকার ঝিল্লীর মতো এক প্রকার এন্টিজেন রয়েছে। রেসাস বানরের নামানুসারে ঐ এন্টিজেনকে রেসাস ফেক্টর বা সংক্ষেপে Rh factor বলা হয়। Rh factor এর কারণে সৃষ্ট সমস্যা সমূহের একটি হচ্ছে গর্ভকালীন এরিথ্রোব্লাস্টোসিস ফিটালিস।
এবার চলো একটুখানি কঙ্কালতন্ত্রে ঘুরে আসি তার আগে জেনে রাখো এক বা একাধিক কোষ মিলে গঠিত হয় টিস্যু, একাধিক টিস্যু মিলে তন্ত্র, একাধিক তন্ত্র মিলে সিস্টেম এবং তারপর আসে অঙ্গ। আমাদের কঙ্কালতন্ত্র ২০৬ টি অস্থি নিয়ে গঠিত। তার মধ্যে করোটিতে আছে ২৯ টি, মেরুদণ্ডে ২৬ টি, বক্ষপিঞ্জরে রয়েছে ২৫ টি। এই তিনটিকে একত্রে বলা হয় অক্ষীয় কঙ্কাল। এর বাইরে আছে উপাঙ্গীয় কঙ্কাল যেখানে মোট ১২৬ অস্থি-র বসবাস। যেমনঃ বক্ষ অস্থিচক্রে ৪ টি, পা এবং বাহুতে ৬০ টি করে, শ্রোণী অস্থিচক্রে ২ টি অস্থি । সংখ্যাগুলো একটু কঠিন মনে হচ্ছে তা-ই না! ভয় নেই আস্তে আস্তে মনে থাকবে। যাই হোক আমাদের হাড় বা অস্থিগুলোর নামগুলো এখন বলতে চাই না। সময় করে একটু বইটা দেখে নিবে। প্রথমে একটুখানি কঠিন মনে হবে। কিন্তু আস্তে আস্তে ঠিক মনে থাকবে। তাই ভয় পাবে না৷
ফ্যাগোসাইটোসিস শব্দটির সাথে ইতোমধ্যে তোমরা সবাই পরিচিত। নিউট্রোফিল রক্তে এবং ম্যাক্রোফেজ টিস্যুতে ফ্যাগোসাইটোসিসে সহায়তা করে থাকে। মানবদেহের প্রতিরক্ষার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া৷ আমাদের দেহে দুই ধরনের প্রতিরক্ষা এবং তিন প্রকারের প্রতিরক্ষা স্তর রয়েছে। তারমধ্যে দ্বিতীয় প্রতিরক্ষা স্তরের শেষ অস্ত্র হচ্ছে জ্বর। জীবনে একবার হলেও জ্বরে পড়েনি এরকম কোনো মানুষ নেই। ম্যাক্রোফেজ যখন ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া বা বহিরাগত কণাকে শনাক্ত ও আক্রমণ করে তখন কোষগুলো রক্তপ্রবাহে পাইরোজেন নামক পলিপেপটাইড ক্ষরণ করে। পাইরোজেন মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসে বিপাকীয় পরিবর্তন ঘটিয়ে দেহের তাপমাত্রাকে উচ্চতর মাত্রায় নির্ধারণ করায়। তখন শরীর কেপে উঠে এবং জ্বর আসে।
আচ্ছা, তুমি যখন ঘুমিয়ে থাকো, তখন যদি হঠাৎ করে তোমাকে জাগিয়ে দেয়া হয়, খুব বিরক্ত লাগে। তা-ই না? অবশ্যই বিরক্ত লাগে। মস্তিষ্কের থ্যালামাস না থাকলে এরকমটা হতো না। থ্যালামাস মস্তিষ্কের সংজ্ঞাবহ স্নায়ুর রিলে স্টেশন হিসেবে কাজ করে থাকে। দেহতাপ নিয়ন্ত্রণ, ক্ষুধা, তৃষ্ণা, ঘাম, ঘুম, রাগ, পীড়ন, ভালোলাগা, ঘৃণা এইসবের কেন্দ্র হচ্ছে হাইপোথ্যালামাস। আমাদের মস্তিষ্কের একেকটা অংশ একেকরকম কাজ সম্পাদন করে থাকে। করোটির মধ্যে সুরক্ষিত মেনিনজেস পর্দাবেষ্টিত কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের যে স্ফীত অংশ দেহের বিভিন্ন কাজ নিয়ন্ত্রণ করে তাকে মস্তিষ্ক বলে। একটুখানি চিন্তা করে দেখো কতটা কর্মঠ আমাদের এই মস্তিষ্ক। তার চেয়েও বেশি অবাক হবে এটা শুনলে যে আমাদের সকলেরই ব্রেনের ধারণ ক্ষমতা ২.৫ পেটাবাইটস। তোমরা সবাই এমবি, জিবি এ-সবের সাথে পরিচিত আছো। চলো তোমাদেরকে জিবির হিসেবে পেটাবাইটের পরিমাণটা সহজ করে বলি। ১ পেটাবাইট ১০২৪ টেরাবাইটসের সমান এবং ১ টেরাবাইট আবার ১০২৪ জিবির সমান। তাহলে এবার কল্পনা করে দেখো আমাদের মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা কত বেশি ! তাই নিজের উপর ভরসা রেখে পড়াশোনা শুরু করে দাও, একদিন ঠিকই তুমি হয়ে উঠবে বাবা-মায়ের গর্বিত সন্তান। তাহলে আর দেরি নয়। শেষ করছি ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্-র একটি উক্তি দিয়ে, ”কোন কাজ ধরে যে উত্তম সেই জন হউক সহস্র বিঘ্ন ছাড়ে না কখন।”
আর্টিকেলটির সমৃদ্ধকরণে কৃতজ্ঞতাঃ
১) জীববিজ্ঞান / দ্বিতীয় পত্র / একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি / গাজী আজমল, গাজী আসমত।
২) Wikipedia.com
Leave a Reply