উপরের ছবিটি হয়তো অনেকে অনেক জায়গার পোস্টারে বা ব্যানারে দেখে থাকবেন । আমি এইরকম ছবি দেখতাম আর আমার মনের মধ্যে ছোটবেলায় একটাই খেয়াল আসতো তা হলো গাছ দেখতে কেমন করে মানুষের মতো হয়। এদিকে আবার সেসব পোস্টারও হত বড়দের জন্য তাই একটু কৌতূহল বেশি হত আরকি ছোটমন কি আর করার, মনে হয় এমনটা সবারই হত । আর কৌতূহল হওয়াটাই কি স্বাভাবিক নয় । আসলে উপরের ছবিটি হলো একটি হারব জাঁতীয় গাছের যার অনেক ঔষধি গুনাগুন আছে। এই গাছটি বাংলাদেশের মানুষ কমবেশি সবাই ধারণা রাখে যার বেশিরভাগই নেতিবাচক। এই গাছের সম্পর্কে ভ্রান্তধারনা দূর করার জন্যই মুলত এই লেখার অবতারণা।
যে সকল গাছের কান্ড কখনো শক্ত কাঠের হয় না তারাই মুলত হার্ব । এটি হার্ব জাতীয় গাছ । এটি আমাদের কাছে জিনসেং নামে পরিচিত। তবে এরা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে পরচিত যেমনঃ নিন-সিন, পানাক্স, পান্নাগ, কোরিয়ান জিনসেং, চাইনিজ জিনসেং ইত্যাদি।

ইতিহাস
ওরিয়েন্টাল জিনসেং বা পানাক্স জিনসেং-এর ‘পানাক্স’ শব্দটি গ্রিক সর্বরোগহর শব্দ থেকে এসেছে। প্রাচীন চীনে বহু বহু কাল আগে থেকে জিনসেং ভেষজ হিসেবে ব্যবহৃত হত। লিখিত তথ্য থেকে জানা গেছে যে, চীনে এর ব্যবহার খ্রিষ্টপূর্ব ১০০ সাল থেকে প্রচলিত। তবে চীনের বাসিন্দারা বিশ্বাস করেন, চীনে ভেষজটি গত ৫,০০০ বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। চৈনিক ভাষায় জিনসেং শব্দটির অর্থ ‘মানুষের মতো’। এই রকম নামকরণের কারণ ভেষজটির শিকড় দেখতে অনেকটা মানুষের মতো। আরব চিকিত্সকরা নবম শতাব্দী থেকে এর ব্যবহার করছেন। মার্কো পোলোও এই বিস্ময়-ভেষজের কথা উল্লেখ করে গেছেন। লুই ১৪-র রাজদরবার পরিভ্রমণকালে সিয়ামের রাজা তাঁকে একটি জিনসেং-এর শিকড় উপহার দিয়েছিলেন। সেই থেকে ইউরোপের ধনাঢ্য ব্যক্তিরা অবসাদ ও দুর্বলতা কাটাতে ভেষজটি ব্যবহার করে আসছেন। ভেষজটি যে ইজরায়েলের বাজারেও বিক্রি হত তার ঐতিহাসিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। ১৮ শতক নাগাদ আমেরিকান জিনসেং আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে ভেষজটি আমেরিকাতেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আমেরিকার আদিবাসীরা ভেষজটিকে বমি/বমি-বমি ভাব থেকে রক্ষা পেতে ব্যবহার করত। অবশ্য আমেরিকায় বাইরে থেকে আসা অন্য দেশীয়রা ভেষজটিকে আরও কিছুদিন পর থেকে ব্যবহার করতে শুরু করে। পরবর্তীকালে আমেরিকান জিনসেং নিয়মিতভাবে জাহাজে বা জলযানের মাধ্যমে প্রাচ্যে আমদানি হত। মূলত চীনে রপ্তানি করার উদ্দেশ্যে ১৮ শতকে পশ্চিম কানাডায় আমেরিকান জিনসেং-এর চাষ শুরু হয়। বর্তমানেও আমেরিকান জিনসেং-এর ৯৫ শতাংশ উত্পাদন পশ্চিম এশিয়ায় রপ্তানি হচ্ছে।
কৃত্রিম ওষুধের বিরোধী ও ভেষজ ওষুধের সমর্থক, উনিশ শতকের চিকিত্সক একলেকটিক্স জিনসেং-কে উদ্দীপক ও কামোত্তেজক বলে সুপারিশ করেছেন। জিনসেং-এর প্রবাদপ্রতিম গুণের কথা জেনে, একে একটি স্বাস্থ্যকর ভেষজ হিসেবে সুপারিশ করার ব্যাপারে সনাতন চৈনিক চিকিত্সার বিশিষ্ট ভূমিকা রয়েছে। বর্তমানেও বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা দ্বারা এর জাদুকরী ক্ষমতার ব্যাপারে তত্ত্বতালাশ জারি রয়েছে।

বিস্তৃতি ও পরিচয়
উদ্ভিদটি কোরিয়া, রাশিয়া এবং চীনে ব্যাপকভাবে পাওয়া যায়, তবে এটি দেরিতে জাপান, কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বৃহৎ বাণিজ্যিক পরিসরে চাষ করা হয়েছে। এটি এখন ভারত, বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশেও এর বানিজ্যিক চাষাবাদ শুরু হয়েছে ।ভারতে জিনসেংয়ের বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হয় হিমাচল প্রদেশ, ত্রিপুরা, উত্তরাখন্ড এবং মহারাষ্ট্রে। বাংলাদেশের মাটিতে চাষ করা কষটসাধ্য তবু যশোর, খুলনা, ঢাকা বিভিন্ন নার্সারিতে চাষ শুরু হয়েছে। জাবির শিক্ষক ডঃ সোহাইল পরিক্ষামুলক ভাবে চাষ করে সফলতা অর্জন করেছিলেন।
উতপত্তি অনুসারে এই গাছটির বৈজ্ঞানিক নামের মধ্যে পরিবর্তন হয়েছে যেমনঃ
- Panax ginseng(korea)
- Panax japonica (Japan)
- Panax notoginseng (Chinese )
- Panax quinquefolium( American)
নীচে গাছটির বৈশিষ্ট্য সহ একটি চিত্র দেয়া হল-

জিনসেং প্রকারভেদ
সাদা জিনসেং
লাল জিনসেং ( কোরিয়ান জিনসেং)


জিনসেং সংগ্রহ
গ্রীষ্মের শেষের দিকে বা শরত্কালে 3 থেকে 6 বছর বয়সী গাছ থেকে শিকড় খনন করা হয়, ধুয়ে এবং সাবধানে শুকানো হয়। মাটি থেকে খনন করা তাজা শিকড় প্যাথোজেনিক জীবাণু দ্বারা আবৃত থাকে যা সাবধানে ধোয়ার পরে এটিতে থাকে। শিকড়ের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করার জন্য এবং সংক্রমণের সম্ভাবনা এড়ানোর জন্য একটি নির্বীজন প্রক্রিয়া প্রয়োজন, তা নির্বিশেষে যে শিকড়টি ছোট টুকরো করে খাওয়া হয়, যেমনটি অনেক এশিয়ান করেন, বা মূল থেকে তৈরি কোনও প্রস্তুতি নেওয়া হয় কিনা।
বয়সের ভিত্তিতে জিনসেং মুলের দাম নির্ধারিত হয়। ১০টি জিনসেং মুলের দাম সাউথ কোরিয়ায় ২৫ ডলার পরজুন্ত হয়। সর্বশেষ সেপ্টেম্বর মাসের তথ্য অনুযায়ী ড্রাই জিনসেং এর দাম বিশ্ববাজারে প্রতি পাউন্ড ৪০০ ডলার ছিল। এখন আসা যাক যে জন্য এই গাছের এত দাম তা আলোচনা করা যাক।
জিনসেং এর রাসায়নিক উপাদান:
ওরিয়েন্টাল জিনসেং-এর অন্যতম উপাদান প্যানাক্সিনল। এই অ্যাসিটাইলেনিক যৌগটির সঙ্গে গাজরের ক্যারোটাটক্সিনের সাদৃশ্য আছে। এর শিকড়ে খুব কম মাত্রায় (৫%) স্যাপোনিন থাকে। ট্রাইটারপিনয়েড সাইকোসাইড নামে স্টেরয়েড জাতীয় অনুতে আবদ্ধ শর্করাকে সাধারণত স্যাপোনিন বলা হয়। এই গাছের উপাদান নিয়ে ১৮৫৪ সাল নাগাদ প্রথম কাজ শুরু হয়। এই উপাদানটির কিছু ভেষজশাস্ত্রীয় ক্ষমতা রয়েছে। জিনসেং নির্যাসের পরিমাণ কী হবে তা নির্যাসের মধ্যে উপস্থিত স্যাপোনিনের পরিমাণের ওপরে নির্ভর করে। বেশ কয়েক দশক ধরে জিনসেং-এর ভেতরের এই সব স্যাপোনিনকে পৃথক করে শনাক্তকরণের কাজ চলছে। এদেরকে বর্তমানে জিনসেনোসাইড বলে উল্লেখ করা হয়। ১৯৯৯ সালে করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ওরিয়েন্টাল জিনসেং-এ ৩৪ রকম জিনসেনোসাইড আছে। এ ছাড়াও এদের মধ্যে আরও বেশ কয়েক ডজন কম গুরুত্বপূর্ণ জিনসেনোসাইডকেও শনাক্ত করা গেছে। অন্যান্য উপাদানের মধ্যে রয়েছে- উদ্বায়ী তেল, বিটা-এলিমিন, স্টেরলস, অ্যাসিটাইলিনস, পলিস্যাকারাইডস, স্টার্চ, ফ্ল্যাভোনয়েডস, পেপটাইডস, ভিটামিনস (বি-১, বি-২, বি-১২, পেন্টাথোনিক অ্যাসিড, বায়োটিন), মিনারেলস, এনজাইমস ও কোলিন।
অতএব মোট কথা জিনসেং এ থাকে
- জিনসেনোসাইডস
- পানাক্সসাইডস
- চিকুসেটসুস্যপোনিন
যাহারা ট্রাইটারপিনয়েড গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত।
স্বাস্থ্য উপকারিতা
দুই ধরণের জিনসেং পাওয়া যায়। একটি হলো এশিয়ান (চীন এবং কোরিয়া থেকে পাওয়া যায়) এবং অপরটি আমেরিকান। আমেরিকান জিনসেং নিয়মিত খাওয়া যায়, কিন্ত কোরিয়ান জিনসেং লম্বা সময় ধরে সেবন না করাই ভালো। এতে থাকা জিনসেনোসাইডস নামের রাসায়নিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে ধরা হয়। এই রাসায়নিকের রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেটিভ, অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি এবং ভ্যাসোরিলাক্সেটিভ বৈশিষ্ট্য।
১) ওজন কমানো
জিনসেংয়ে অনেক রকম রাসায়নিক উপাদান থাকে যা খাবার খাওয়ার ইচ্ছাকে আটকে রাখে। বিশেষ করে শুকনো জিনসেং পাউডার কোনরকম খাবারের লোভকে ট্রিগার করে খিদে পাওয়ার হরমোনকে আটকে রাখে। যার ফলে আপনার ওজন কম করতে সাহায্য করে।
২) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
জিনসেং চা উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিছু ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে তা প্রমাণিত।
৩) হরমোনের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনে
নারীদের জন্য জিনসেং চা উপকারী কারণ তা হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে ফলে ব্রেস্ট ক্যান্সার, এন্ডোমেট্রিওসিস এবং এ ধরণের সমস্যাগুলো দূরে রাখে।
৪) মন ও শরীর চাঙ্গা করে
জিনসেং চা পান করার পর মনোযোগ বাড়ে এবং চিন্তাভাবনার ধার বাড়ে বলে দাবি করেন অনেকে। শরীর থেকে স্ট্রেস কমাতে সক্ষম জিনসেং, এ কারণেই তা মস্তিষ্কের ওপর উপকারী এই প্রভাব রাখে।
৫) হৃদস্বাস্থ্য ভালো রাখে
জিনসেং চায়ে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী। জিনসেং হার্ট রেট কমায় এবং হৃৎপিণ্ডে অক্সিজেনের চাহিদা কমায়। এছাড়া হৃদপেশীর শক্তিও বাড়াতে পারে জিনসেং। এতে মায়োপ্যাথির ঝুঁকি কমে।
৬) ত্বক ভালো রাখে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কারণেই ত্বক ভালো রাখতেও জিনসেং কার্যকরী। এছাড়া ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতেও তা উপকারী।
৭) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
সাধারণ ঠাণ্ডা, জ্বর দূর করতে জিনসেং চা ব্যবহার করা হয়। শুধু তাই নয় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে এই চা।
৮) ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে
আমেরিকান ও কোরিয়ান দুই পদের জিনসেংই শরীরের ইনসুলিন রেজিসটেন্স কমায়। ফলে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। যাদের টাইপ টু ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য এই চা উপকারী।
এছাড়াও যৌন স্বাস্থ্য উন্নতির জন্য কোরিয় পুরুষরা জিনসেং চা পান করে থাকেন। তবে এটা মনে রাখা জরুরী যে অতিরিক্ত পরিমাণে তা পান করা ঠিক নয়। তাতে দেখা যায় ইনসমনিয়া, অস্থিরতা, বমি, মাথাব্যথা ইত্যাদি। বিশেষ করে অসুস্থ ব্যক্তিদের জিনসেং চা পান শুরু করার আগে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নেওয়া উচিত।
৯)বয়স বাড়া থামিয়ে দেয়
জিনসেংয়ে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যার ফলে পুরো শরীরে ফ্রি রেডিক্যালসের ঋণাত্মক প্রভাব কম হয়। সাধারণত ফ্রি রেডিক্যালস সেলুলার বিপাকের ফলে তৈরি একটি ক্ষতিকর উপপণ্য। ফ্রি রেডিক্যালস সতেজ কোষগুলোর ক্ষতি করে।
১০)চুলের জন্য উপকারী
চুলের বিভিন্ন সমস্যা যেমনচুল পড়ে যাওয়া এবং টাক ইত্যাদিতে জিনসেং অনেক উপকারী। কারণ জিনসেং এ অনেক প্রাকৃতিক কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে জিনসেং চুলের দেখাশোনার জন্য অনেক প্রভাবশালী।
১১)নারীদের জন্যও জিনসেং
নারীদের জন্যও জিনসেং নানা কাজ করে থাকে। বেদনাদায়ক পিএমএস, ব্রেস্ট ক্যানসার রোধে এবং মেনোপজে এর ব্যবহার সঙ্গত। মেনোপজের পর হাড়ের ঘণত্ব কমে যায় বলে হাড় পাতলা ও ভঙ্গুর হয়ে সহজে ফ্রাকচার হতে পারে। এমতাবস্থায় জিনসেং সেবনে এই অবস্থার প্রভূত উন্নতি হয়। অ্যান্টি-এজিং গুণাবলী থাকার কারণে জিনসেংকে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন প্রসাধনীতেও।
কীভাবে কাজ করে
প্রমাণিত হয়েছে জিনসেং-এ থাকা দুই রকমের জিনসেনোসাইডের মধ্যে দুটি বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। এরা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে উদ্দীপনা জোগায় ও অবসাদ-বিরোধী হতে বাধ্য করে। ভেষজটি মস্তিষ্কের জৈব-রাসায়নিক নিউরোট্রান্সমিটার পদ্ধতিকে প্রভাবিত করে। বিশ্বাস করা হয়, ডোপামিনার্জিক প্রক্রিয়ায় জিনসেনোসাইড স্নায়ু সুরক্ষাকারী ভূমিকা পালন করে থাকে এবং মস্তিস্কের অ্যাসিটাইলকোলিন গ্রাহকের ওপর অবসাদ-বিরোধী কাজ করে। গিলে খাওয়ার পর জিনসেং-এর অধিকাংশ পিপিডি জাতীয় জিনসেনোসাইড আন্ত্রিক ব্যাকটিরিয়া (অ্যানারোবস) দ্বারা বিপাকের ফলে পিপিডি মোনোগ্লুকোসাইড, ২০-অর্থো-বিটা-ডি-গ্লুকোপাইরানোসিল-২০ (এস)-প্রোটোপ্যানাক্সিডাইল (এম আই)-এ পরিবর্তিত হয়। জিনসেং গ্রহণের ৫ ঘন্টা আগে ও ১২ ঘন্টা বাদে যথাক্রমে প্লাজমা ও মূত্রে এম আই পাওয়া যায়। এই ফলটি প্রমাণ করে পিপিডি জাতীয় জিনসেনোসাইডের চূড়ান্ত অবস্থা হল এম আই। জিনসেং-এর মধ্যেকার অ্যাসিটাইলেনিক প্যানাক্সিনল, প্যানাক্সিডাইঅল ও প্যানাক্সিট্রাইঅলের সাইটোটক্সিক ক্ষমতা ক্যান্সার নিবারণে সাহায্য করে। আর পলিস্যাকারাইডগুলি প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ক্ষতিকারক দিক
একটি সমীক্ষায় জানা গেছে, শুধু আমেরিকাতেই ৬০ লক্ষ লোক নিয়মিতভাবে জিনসেং গ্রহণ করে থাকেন। এদের মধ্যে উপকারের পরিবর্তে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন লোকের সংখ্যা নগন্য। নানা প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মেয়েদের মধ্যে জিনসেং-এর প্রভাব অনেকটা ইস্ট্রোজেনের মতো। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় জিনসেং গ্রহণ করতে মানা করা হয়। খুব সাধারণভাবে এই ভেষজটির ব্যবহারে যে সমস্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে তা হল, স্নায়বিক দৌর্বল্য ও উত্তেজনা। তবে কিছুদিন পরে থেকে বা ওষুধের মাত্রা কমিয়ে দিলে এই অসুবিধে আর থাকে না। এই সমস্যার মূলে রয়েছে জিনসেং শিকড়ের মধ্যেকার মিথাইলজ্যানথিন নামের উপাদানটি। দীর্ঘকালীন জিনসেং ব্যবহারে মনঃসংযোগে অসুবিধে দেখা যায়। ডায়াবেটিস রোগীদের কেউ কেউ এই ভেষজ ব্যবহার করে হাইপোগ্লাইসিমিয়ার শিকার হয়েছেন বলেও শোনা যায়। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের উচিত এই ভেষজটিকে সাবধানে ব্যবহার করা। যাঁরা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, তাঁদেরও চিকিত্সকের সঙ্গে পরামর্শ না করে এই ভেষজ ব্যবহার করা উচিত নয়।
তথ্যসূত্রঃ
- Pharmacognosy by C, K Kokate, Nirali Prakashani,57th edition, 2021
- Shesh varosha ginseng by Shachinkotta, march 2008
- জিনসেং এর উপকারিতা এবং ক্ষতি
- What are the health benefits of ginseng?
Leave a Reply