ঘাতক বেজির দল

লেখাটি বিভাগে প্রকাশিত

নেউলে বা বেজি হল ঝোপ-ঝাড়ে ঘুরে বেড়ানো একটা শ্বাপদ স্তন্যপায়ী প্রাণী। গ্রামে কিংবা শহরে ঝোপ-জঙ্গলে ক্ষিপ্র গতিতে ছুটে যেতে দেখা যায় এদের। কিংবা দেখা যায় কিং কোবরা সাপের মাথাটা কামড়ে ধরে আছে। পৃথিবীতে তিন ডজন এর কাছাকাছি সংখ্যক প্রজাতির বেজি আছে। এর মধ্যে আছে চৌদ্দটা গণের তেত্রিশটা নেউলে প্রজাতি। সবচাইতে চেনা হচ্ছে হারপেস্টেস গণের দশটা নেউলে প্রজাতি। বেজির সন্ধান মেলে প্রধানত আফ্রিকায়। তবে দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ ইউরোপের নানান দেশেও এদের দেখা যায়। ছোট ছোট পা, বিন্দুসম নাক, ছোট কান আর লম্বা লোমশ লেজ বিশিষ্ট, আকারে বিড়ালের মতন এই প্রাণীটিকে সবাই সাপের চিরশত্রু হিসেবেই বেশী চেনে। লোকমুখে শোনা যায় বেজির নাকি সাপের বিষে কিছু হয় না। কথাটা আসলে পুরোপুরি সত্য না। সামান্য পরিমাণ সাপের বিষে এদের তেমন কিছু হয় না। কেননা এদের শরীরে এক ধরণের গ্লাইকোপ্রোটিন  থাকে যা সামান্য পরিমাণ সাপের বিষকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলতে পারে। তবে যথেষ্ট পরিমাণ সাপের বিষে বেজির মৃত্যু হতে পারে। তাই সাপে-বেজি লড়াইয়ে বেজিকে হারানোর একমাত্র উপায় হল বেজিকে বারবার ছোবল মারা। 

সাপে-বেজি লড়াই। ছবিসূত্রঃ Quora.

তাহলে কি করে সাপে-বেজি লড়াইয়ে বেজিই জিতে যায়? পুরোটাই আসলে নির্ভর করে বেজির কৌশল, দ্রুতগামিতা আর শরীরে পুরু পশমের আবরণ এর উপর। সাপকে আক্রমণ করে বেজি সাপকে উস্কে দেয় আঘাত করার জন্যে। সাপ তখন বারবার আঘাত করতে থাকে বেজিকে। কিন্তু বেজির শরীরের ক্ষিপ্র গতি সফল হতে দেয় না সাপের একটি ছোবলকেও। এভাবে একটা সময় সাপ ক্লান্ত হয়ে পড়ে। আর ওমনি সাপের মাথাটা কামড়ে ধরে বেজি। কামড়ে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ফেলে সাপের মাথাটা। সাপের সাথে লড়াই করে জেতার কৌশল জন্ম থেকেই এদের থাকে না। শিখে নিতে হয়। অনেক শিশু নেউলেই সাপের ছোবলে মারা যায়। সাপের বিষ বেজির পেটে গেলে হজম হয়ে যায়। তাই সাপের মাথা আর বিষ গ্রন্থি খেয়ে নিলেও কিছু হয় না এদের। ইন্ডিয়ান বেজি হারপেস্টেস এডওয়ার্ডসি সাপ বিশেষ করে কিং কোবরা মারার জন্যে বেশ নামকরা। বাংলাদেশেও পাওয়া যায় এই প্রজাতির বেজি। এদের পশমে হালকা ও গাঢ় বর্ণের রিং থাকে, লেজের মাথাটা সাদা কিংবা হলুদাভ লাল বর্ণের হয়। এরা বাস করে ঝোপ-ঝাড়ে, কিংবা ঢিপিতে গর্ত করে। এদের খাবার তালিকায় থাকে ছোট ছোট স্তন্যপায়ী, পাখি, সরীসৃপ, ডিম এবং মাঝেসাঝে ফলমূল।

ব্যান্ডেড মঙ্গুজ নামের বেজিদের পাওয়া যায় পুরো আফ্রিকা জুড়ে। এদের বৈজ্ঞানিক নাম মুঙ্গোস মুঙ্গো (Mungos mungo)। প্রথম দর্শনে মনে হতে পারে এরা খুব নরম-আদুরে একটা প্রাণী। কিন্তু আদতে এরা খুবই আক্রমণাত্মক এবং হিংস্র একটা প্রাণী। এরা প্রতিবেশীদের সাথে যুদ্ধ করে, প্রতিদ্বন্দ্বীদের নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা করে এবং আহত করে। নির্মম ভাবে আত্মীয় প্রজাতিদের দল থেকে বিতাড়িত করে। যদি যেতে না চায় তাহলে তাদের ভাগ্যে জুটে নিষ্ঠুর মৃত্যু। কখনো বা হত্যা করে নিজ শিশু সন্তানকেই। কিংবা মত্ত হয় স্বজাতিভক্ষনের মতন পিশাচ খেলায়। এইরকম বর্বর, সংগঠিত সহিংসতা প্রাণিজগতে খুব কম দেখা যায়। আফ্রিকায় পাওয়া পঁচিশ প্রজাতির বেজির মধ্যে ব্যান্ডেড মঙ্গুজ একটি। আকারে একটা গৃহপালিত বিড়ালের সমান হবে। শিকার তালিকায় প্রধানত থাকে মিলিপিডস এবং গুবরে – পোকা। তবে ইঁদুর, টিকটিকি আর সাপও ধরে খায় এরা। অধিকাংশ বেজিই যদিও একা বাস করে, ব্যান্ডেড বেজিরা বাস করে দল গঠন করে। প্রতি দলে থাকে আট থেকে পঞ্চান্ন জন সদস্য। এক একটা দলকে ডাকা হয় ব্যান্ড। প্রায় এক বর্গ কিলো জায়গা জুড়ে এরা বাস করতে পারে। 

আফ্রিকান ব্যান্ডেড মঙ্গুজ। ছবিসূত্রঃ নিউ সায়ন্টিস্ট

এদের সমাজে কিছু প্রভাবশালী সদস্য থাকে যারা অন্যদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে থাকে। এই শ্রেনিবিভেদটা হয় বয়সের ভিত্তিতে। এরকম প্রভাবশালী নারী এবং পুরুষের সংখ্যা থাকে দু থেকে তিনটা। প্রভাবশালী পুরুষরা অস্ট্রাস (স্তন্যপায়ী প্রাণীদের নিয়মিত যৌনসঙ্গমের সময়কালকে অস্ট্রাস বলে) এর সময় নারী সদস্যদের সাথে রতিক্রিয়া সম্পন্ন করে। অন্য বাকি পুরুষ সদস্যদের সারাজীবন অনূঢ় অধস্তন হয়ে থাকতে হয়। তবে সকল নারী সদস্যই প্রজননে অংশ নিতে পারে। মজার ব্যাপার হচ্ছে তারা সবাই-ই বছরে চারবার একই রাতে সন্তান জন্ম দেয়। ছানাগুলো সব জন্মের পরে একসাথে মিশে যায়। তখন কে কার মা চেনা যায় না। নারী সদস্যরা সবাই-ই সপ্তাহে কয়েকবার যৌন ক্রিয়ায় অংশ নেয়। অকালে সন্তান প্রসব করে। যদি কেউ ঠিক সময়ে সন্তান প্রসবে ব্যর্থ হয় তখন সদ্য জন্ম নেয়া প্রতিটা ছানা হয় হত্যা করা হয় না হয় ভক্ষন করা হয়। এসব কিছু খোলা ময়দানে সবার চোখের সামনে ঘটলে, ফলাফল রণাঙ্গনে রূপ নেয়। শুরু হয় গণহত্যা, মুণ্ডুহীন শরীর, অর্ধেক খাওয়া শরীর- পড়ে থাকে। পুরো দল কতক শিশুহত্যাকারী নারী বেজিদের দ্বারা পরিচালিত হয়। 

টিকে যাওয়া ছানাগুলোকে নারী বেজিরা সমবেতভাবে স্তন্যপান করায়। পুরুষ বেজিরা নিজেদের গর্তে তাদের দেখভাল করে। ছানাদের বয়স চার সপ্তাহ পেরোলে, গর্তের বাইরে তারা নতুন এক সঙ্গীদল খোঁজে পায়। এই দল তাদের মাস খানেক যাবত শেখায় কি করে শিকার সন্ধান করতে হয়, কোন ধরণের মিলিপিডদের খাবার আগে ভালো মতন পরিষ্কার করে নিতে হয়। ব্যান্ডেড বেজিদের  এইরকম অদ্ভুদ সামাজিক বিন্যাস বিজ্ঞানীদের নজর কেড়েছে। তারা এদের পরার্থপরতার মতন বিভিন্ন সাহায্যকারীমূলক আচরণের বিবর্তন নিয়ে গবেষণায় মডেল প্রাণী হিসেবে ব্যবহারের কথা ভাবছেন। বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরেই আফ্রিকান ব্যান্ডেড বেজিদের সমাজ নিয়ে গবেষণা করে আসছেন। এর পেছনে অন্যতম একটা কারণ, এদের সহিংসপ্রবণ আচরণ। একটি দল যদি খুব বেশী বড় হয়ে যায় তাহলে সেখানে উচ্ছেদ, ভাঙ্গন অবশ্যম্ভাবী। মুষ্টিমেয় সদস্যদের উপর হামলা চালানো হয়, তাদের বাধ্য করা হয় দল ত্যাগ করতে। তারা দল ছাড়তে নারাজ হলে হত্যার শিকার হয়। উচ্ছেদকৃতরা ঝোপ ঝাড়ে ক’দিন ঘুরে বেড়ায়। কিংবা ঈগল, চিতাবাঘ অথবা কোবরার পেটে যায়। 

ব্যান্ডেড বেজিদের মধ্যে লড়াই। ছবিসূত্রঃ phys.org

বেজিদের সমাজে উচ্ছেদ স্বাভাবিক ভদ্র ব্যাপার। এরা প্রতিবেশীদের সাথে যুদ্ধ করে, তাদের আস্তানা দখল করে নেয় এবং নির্দয় ভাবে সংঘর্ষ করে, মারা যায়। প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল মধ্যযুগীয় যুদ্ধক্ষেত্রের ন্যায় মুখোমুখি হয়ে দাঁড়ায়, তুমুল আর্তনাদ করে এবং একে অপরের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। পুরুষ বেজিরা মারামারি করে। কেউ যদি হাতাহাতি থেকে কোনো ভাবে আলাদা হয়ে যায় তাহলে তার কপালে দুঃখ আছে। সবাই তার পিঠে লাফিয়ে পড়ে, পা গুলো ছড়িয়ে কামড়ানো শুরু করে এবং অবশেষে আহত হয়ে তার মৃত্যু হয়। এইরকম এক একটা যুদ্ধে মৃত্যু হার তেমন বেশী না, অর্ধ শতাংশ। আহতই হয় বেশী। ব্যান্ডেড মঙ্গুজ’রা এক একটা যুদ্ধ একমাসে চারবার লড়তে পারে। কিন্তু এসব যুদ্ধের পেছনে কারণ কি থাকে? একটা কারণ হল যৌনতা। প্রভাবশালী নারী বেজিরা প্রতিদ্বন্দ্বী দলের সাথে নিজের দলের দাঙ্গা বাধিয়ে দেয়। নিজ দলের পুরুষ সদস্যরা ব্যস্ত হয়ে যায় দাঙ্গা হাঙ্গামায়। আর এই ফাঁকে প্রতিবেশী দলের পুরুষদের সাথে রতিক্রিয়ায় মত্ত হয় নারী সদস্যরা। এর কিছুই টের পায় না নিজ দলের পুরুষ সদস্যরা। প্রায় বিশ শতাংশ বেজি ছানারই জন্ম হয় এভাবে। এই শোষণমূলক নেতৃত্বে সুবিধা পায় কেবল দলপতি নারীরাই, যুদ্ধে অংশ নেয়া অসংখ্য সৈন্য বেজির জীবন আহুতির বিনিময়ে। তবে ভিন্ন দলের সদস্যদের সাথে যৌনক্রিয়া পুরো দলের জন্যে এক দিক দিয়ে ভালো। এতে করে অন্তপ্রজনন এর মাত্রা কমে আসে। 

প্রেম নাকি যুদ্ধ?              

তবে যুদ্ধ বাধার পেছনে গোপন যৌনসঙ্গমই একমাত্র কারণ না। বেশীরভাগ যুদ্ধই বাধে মর্যাদা, সীমানা, সম্পদ আর গণহত্যা কে ঘিরে। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষরাই যুদ্ধ শুরু করে। লক্ষ্য থাকে প্রতিপক্ষের যুবক সদস্যরা। বিশ শতাংশ ছানারই মৃত্যু হয় এইরকম যুদ্ধে। এর মধ্যে মেয়ে ছানা মারা যায় দ্বিগুণ পরিমাণে। ফলে সাধারণত বেজি সমাজে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা আনুপাতিক ভাবে কম হয়। প্রতিপক্ষ বেজি দলকে নিশ্চিহ্ন করে দেবার একটা মুখ্যম উপায় হচ্ছে তাদের মেয়ে ছানা গুলোকে টার্গেট করে মেরে ফেলা। যুদ্ধ শুরুর পূর্বে পায়ের ছাপ দেখে কিংবা গন্ধ শোঁকে একটা দল বোঝতে পারে তার প্রতিপক্ষ দল কতটা শক্তিশালী। প্রতিপক্ষের তুলনায় সংখ্যায় বেশী হলে তারা আক্রমণ শুরু করে। নচেৎ পিছু হটতে থাকে। উভয় দলই শক্তিতে সমান হলে আক্রমণ শুরু হয় দুদিক থেকেই। যুদ্ধ চলতে থাকে যতক্ষণ না প্রতিপক্ষ পশ্চাদপসরণ করে কিংবা সাময়িক ভাবে যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা হয়। 

প্রভাবশালী নারী বেজিরা প্রতিদ্বন্দ্বী দলের সাথে নিজের দলের দাঙ্গা বাধিয়ে দেয়। নিজ দলের পুরুষ সদস্যরা ব্যস্ত হয়ে যায় দাঙ্গা হাঙ্গামায়। আর এই ফাঁকে প্রতিবেশী দলের পুরুষদের সাথে রতিক্রিয়ায় মত্ত হয় নারী সদস্যরা। ছবিসূত্রঃ নিউ সায়ন্টিস্ট

যুদ্ধে আসলে কি ঘটতে চলেছে? সেটা আগে থেকে ধারণা করা কঠিন। দুই পক্ষেরই পুরুষ সদস্যরা হাতাহাতি, মারামারি, চিৎকার-চেচামিচি করতে থাকে। মাঝেমধ্যে দেখা যায় নারী বেজি গুলো দাঙ্গায় অংশ না নিয়ে প্রতিপক্ষের পুরুষ সদস্যের সাথে গোপনে রতিক্রিয়া করছে। কীভাবে দলগুলো যুদ্ধের ময়দানে নিজেদের গতিবিধি সমন্বয় করে কিংবা এই যুদ্ধে হার-জিত কীসের উপর নির্ভর করে এর কিছুই পরিষ্কার না। 

আকস্মিক আক্রমণ

যুদ্ধচলাকালীন হঠাৎ করেই দেখা যায় বেজির দল দলপতি বেজিকে চারপাশ থেকে ঘিরে দাঁড়ায় কয়েক সেকেন্ডের জন্য। দলপতিটি তাদের পিছু হটার নির্দেশ দেয় এবং দলের নেতৃত্ব দেয়। কিন্তু কি করে দলপতি অন্য সবার সাথে যোগাযোগ করে তা বোঝা যায় নি। বিজ্ঞানীরা বেজিদের এই যুদ্ধ প্রক্রিয়া বিস্তারিত ভাবে বোঝার চেষ্টা করেছেন। তারা একটা বড় বেজির দল নির্বাচন করেন। পাশেই একটা ঝোপের ভেতর একটা ব্লুটূথ স্পিকার রাখেন। স্পিকারটায় বেজিদের যুদ্ধের সময় করা আর্তনাদ রেকর্ড করা ছিল। বিজ্ঞানীরা প্রথমে বেজির দলটার সামনে অন্য একটা দলের নোংরা গন্ধবিশিষ্ট মল ছুড়ে মারেন। এবং ব্লুটূথ স্পিকারটা চালু করে দিলেন। দেখা গেল, সবগুলো বেজি গুলো প্রথমে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে দাঁড়ালো। তারপর হঠাৎ ধীরে ধীরে আক্রমণের ভঙ্গিতে ঝোপের (সেখানে স্পিকার রাখা ছিল) দিকে ছুটা শুরু করল। যদি সত্যি সত্যি ঝোপটায় প্রতিপক্ষ দল থাকত তাহলে নিশ্চিত ভাবে সেখানে একটা দাঙ্গা শুরু হয়ে যেত। 

ছবিসূত্রঃ নিউ সায়ন্টিস্ট

বিজ্ঞানীরা আশা রাখেন, ব্যান্ডেড বেজিদের এই হিংস্র আক্রমণ, যুদ্ধ বিস্তারিত ভাবে বোঝা যাবে। কেন তারা যুদ্ধ করে, সেখানে জয়-পরাজয় এর হিসাবটা কি সবকিছুই। এটি মানুষদের যুদ্ধপ্রবণতার বিবর্তন বুঝতেও সহায়ক হবে। গবেষকরা মনে করেন, আমাদের মধ্যে সহযোগিতা এবং সামাজিক আচরণের বিবর্তনকে  আকার দিতে যুদ্ধ একটা চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। পাশাপাশি বহিরাগতদের প্রতি অমানবিকপ্রবণ  হবার পেছনেও রয়েছে যুদ্ধের প্রভাব। পৃথিবীতে মানুষ এবং বেজি হচ্ছে সবচাইতে বেশী যুদ্ধবাজ প্রাণী। তবে এই গবেষণা এখনো শুরুর দিকেই আছে। কোনো প্রাণীর মডেল ব্যবহার করে মানুষের যুদ্ধবাজ মনস্তত্ত্বকে বোঝার চেষ্টা করার আইডিয়াটা দারুণ। দীর্ঘসময় ধরে ভাবা হত যুদ্ধ কেবল মানুষ প্রজাতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু আসলে না। ব্যান্ডেড মঙ্গুজদের মতন যেসব প্রাণীরা দলভুক্ত হয়ে বাস করে যেমন সিংহ, শিম্পাঞ্জিও মানুষের মতন নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ করে। 

মানব ইতিহাসে অসংখ্য যুদ্ধ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, গণহত্যার মতন ঘটনা ঘটেছে। এখনো ঘটে চলেছে। মানুষ নিজেদের ধ্বংস করার জন্যে প্রতিনিয়ত তৈরি করে চলেছে পারমাণবিক বোমা। উপনিবেশবাদ, আধিপত্য বিস্তার, সামরিক শাসন, গৃহযুদ্ধ কিংবা ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিবর্তন কেন্দ্রিক সংঘর্ষ – এসব কিছুই মানব সমাজের অনুষঙ্গ। ব্যান্ডেড মঙ্গুজদের নিয়ে গবেষণা কি আমাদের নিজেদের যুদ্ধবাজ প্রবণতা বুঝতে সাহায্য করবে? এখানে মনে রাখা দরকার যে, সংস্কৃতি এবং বুদ্ধিমত্তার বিবর্তন আমাদের অন্য প্রাণীদের থেকে আলাদা করেছে। তাই এই গবেষণা মানুষদের যুদ্ধবাজ প্রবণতাকে বুঝতে খুব সাহায্য করতে পারবে-এই ব্যাপারে অনেকেই সন্দিহান।   

তথ্যসূত্রঃ নিউ সায়ন্টিস্ট ম্যাগাজিন এর Murderous mongooses প্রবন্ধের আলোকে লেখা।

লেখাটি 354-বার পড়া হয়েছে।


নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান? হোস্টিং ও ডোমেইন কেনার জন্য Hostinger ব্যবহার করুন ৭৫% পর্যন্ত ছাড়ে।

আলোচনা

Response

  1. রুবেল Avatar
    রুবেল

    বেজী থেকে গৃহপালিত হাস মুরগী রক্ষা করার উপায় সম্পর্কে জানালে উপকৃত হতাম।

Leave a Reply

ই-মেইল নিউজলেটার

বিজ্ঞানের বিভিন্ন খবর সম্পর্কে আপডেট পেতে চান?

আমরা প্রতি মাসে ইমেইল নিউজলেটার পাঠাবো। পাক্ষিক ভিত্তিতে পাঠানো এই নিউজলেটারে বিজ্ঞানের বিভিন্ন খবরাখবর থাকবে। এছাড়া বিজ্ঞান ব্লগে কি কি লেখা আসলো, কি কি কর্মযজ্ঞ চলছে, সেটার খবরও থাকবে।







Loading