আমরা সবাই-ই মিলনের আস্বাদ উপভোগ করতে চাই। কেউই বিচ্ছেদের তিক্ত অনুভূতির অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে চাই না। কিন্তু প্রকৃতি আমাদের ইচ্ছা অনিচ্ছার ব্যাপারে উদাসীন। মিলন যেমন স্বাভাবিক ঘটনা, তেমনি বিচ্ছেদ। এসব কথা কেবল মানুষের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য তা নয়। অন্যান্য প্রাণীকুলের ক্ষেত্রেও তাই। পেঙ্গুইন, বীভার কিংবা সমুদ্র ঘোড়া এরা সবাই-ই একটা সময় ইতি টানে সুদীর্ঘ সময়ের সম্পর্কে। ভুলে যায় পুরোনো সঙ্গীকে, নতুন ভাবে ঘর বাঁধে নতুন সঙ্গীর সাথে। কিন্তু কেন? কিংবা প্রশ্নটা অন্যভাবে করলে, কোন কোন ফ্যাক্টর প্রাণীদের বিচ্ছেদের দিকে চালিত করে?জীববিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন থেকেই বোঝার চেষ্টা করছেন এসব প্রাণীরা কেন সম্পর্কে ইতি টানে। সামগ্রিক ভাবে বিচ্ছেদ একটা প্রাণী প্রজাতির উপর কীরূপ প্রভাব ফেলে? কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিচ্ছেদ প্রাণীদের জন্যে লাভজনক। অন্যসব আচরণের মতন বিচ্ছেদও প্রাণীদের মধ্যে বিবর্তিত হয়েছে। কিন্তু এর উল্টোপিঠও আছে। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, বেশী বেশী বিচ্ছেদ এর ঘটনা একটা পুরো প্রাণী প্রজাতিকে হুমকির দিকে ঠেলে দেবার জন্যে যথেষ্ট। কেননা অনিয়ন্ত্রিত বিচ্ছেদ এর ঘটনা একটা প্রজাতিতে প্রজননে সক্ষম কলোনির সংখ্যা কমিয়ে আনে।
অনেক প্রাণীই আছে যারা সামান্য কারণে সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটায় না। এরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে একগামী। মাত্র পাঁচ শতাংশ প্রাণী সামান্য কারণেই পুরোনো সঙ্গীর সাথে সম্পর্কে ইতি টানে। বিবর্তনের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, এর কারণ প্রাণীরা অধিক সংখ্যক সন্তান জন্ম দিতে চায়। যে জন্যে এদের বহু সংখ্যক সঙ্গীর সঙ্গে সঙ্গমের দরকার পড়ে। তাহলে কেন প্রাণীদের মধ্যে একগামিতা দেখা যায়? অবাককরা বিষয় হচ্ছে, প্রকৃতিতে আশি শতাংশ প্রাণী প্রজাতিই একজন সঙ্গীর সাথেই অঙ্গীকারবদ্ধ থাকতে চায়। ২০১৮ সালে করা একটা গবেষণা এই রহস্যের কিছু ব্যাখ্যা দাঁড় করায়। সাধারণত একজন অভিভাবকের পক্ষে সন্তান লালনপালন করা একটা চ্যালেঞ্জিং কাজ। দুজন অভিভাবক একসাথে থাকলে সন্তান লালন-পালনের দায়িত্ব অনেকটা সহজ হয়ে আসে। তাই সন্তান জন্ম দেবার পর দুজন সঙ্গী দীর্ঘ সময় ধরে একসাথে থাকলে এই দিক দিয়ে তারা সুবিধা পায়। তাছাড়া দীর্ঘসময় ধরে একগামী যৌন সম্পর্কে থাকলে সন্তান লালন-পালনের ব্যাপারে অধিক সময় দেয়া যায়। প্রতিকূল পরিবেশে মানিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রেও দীর্ঘকাল একগামী সম্পর্ক বেশী সুবিধাজনক হয়। কেননা তখন দুজন সঙ্গী তাদের নিজেদের অভিজ্ঞতার সম্মিলন ঘটিয়ে প্রতিকূল পরিবেশের মোকাবেলা করতে পারে।
বিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে ডিএনএ নিয়ে বিস্তর গবেষণায় দেখা যায়, প্রাণীদের মধ্যে একগামিতা দুই রকমের হতে পারে- জেনেটিক একগামিতা এবং সামাজিক একগামিতা। প্রথম ক্ষেত্রে প্রাণীরা অন্তত একটা নির্দিষ্ট সময় অবধি একত্রে বাস করে এবং কেবল তার নিজের সঙ্গীর সাথেই যৌন ক্রিয়ায় অংশ নেয়। সামাজিক একগামিতায় সাধারণত, দুইটা প্রাণী একসাথে সহবাস করে এবং সন্তান লালনপালন করে ঠিকই তবে তাদের একাধিক যৌনসঙ্গী থাকে। জেনেটিক এবং সামাজিক- এই দুই ধরনের একগামী সম্পর্কের মধ্যেও বিচ্ছেদ হতে পারে। কিন্তু সবক্ষেত্রে বিচ্ছেদ একই কারণে হয় এমন না। হিপ্পোক্যাম্পাস ইরেক্টাস নামের সমুদ্র ঘোড়ারা (seahorse) সাধারণত জেনেটিক একগামি হয়ে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে স্মৃতি বিলাপের কারণে। যৌন সঙ্গমের পর যদি সঙ্গী দুজন আলাদা ট্যাংকে রাত যাপন করে তাহলে স্ত্রী সিহর্সরা তাদের পুরোনো পুরুষ সঙ্গীকে ভুলে যায়। এমনকি যদি কখনো পুনরায় পুরোনো পুরুষ সঙ্গীর সাথে দেখা হয়, এরা পুরোনো সঙ্গীকে চিনতে পারে না। এমনকি এদের পূর্বের যৌন ক্রিয়ায় পুরুষ সিহর্স এর গর্ভে সন্তান এলেও।
ক্যাস্টর ফাইবার (Castor fiber) নামে এক জাতের ইউরেশিয়ান বীভার আছে। এরা সামাজিক একগামিতা প্রদর্শন করে। ২০১৭ সালের একটা গবেষণা বলছে, এই বীভার’রা গড়ে সাত বছর একটা সম্পর্কে থাকার পর বিচ্ছেদ এ যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিচ্ছেদ ঘটে কোনো নতুন নারী কিংবা পুরুষ প্রতিযোগীর আগমনে। এ ধরনের বিচ্ছেদকে “জোর পূর্বক বিচ্ছেদ” (forced divorce) বলা হয়। অ্যালবাট্রসদের বেলায়ও এইরকম বিচ্ছেদ দেখা যায়। দক্ষিণ ভারত মহাসাগরের ক্রোজেট দ্বীপপুঞ্জে বাস করে ডায়োমেডিয়া এক্সোলেন্স (Diomedea exulans) নামের অ্যালবাট্রস পাখি। এদের লাজুক পুরুষ সদস্যরা জোরপূর্বক বিচ্ছেদ এর শিকার হয় যখন কোনো সাহসী পুরুষ প্রতিযোগীর (অ্যালবাট্রস) আগমন ঘটে। মানুষদের মতই এসব প্রাণীদেরও বিচ্ছেদ এর পেছনে কোনো না কোন কারণ থাকে। সেই কারণটা কী? গবেষকদের মতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেটা, প্রজননের সফলতা কিংবা ব্যর্থতার সাথে সম্পর্কযুক্ত। যদি কোনো সঙ্গীর সাথে থেকে আপনি আপনার সন্তানের দেখভাল ঠিকঠাক মতন করতে ব্যর্থ হোন তখন সে সঙ্গীর সাথে আপনার বিচ্ছেদ হওয়ার সম্ভাবনাটাই বেশী। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, একগামী সঙ্গীদের বিচ্ছেদে যাওয়ার পেছনে এটাই একমাত্র কারণ না।
বিচ্ছেদের পরিমাণ বাড়ার কারণ কি?
প্রতি সেপ্টেম্বরে ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জে প্রায় পাঁচ লাখ জোড়া কালো ভ্রুযুক্ত (black-browed) অ্যালবাট্রস পাখি (থ্যালাসারচে মেলানোফ্রিস-Thalassarche melanophris) প্রজননের উদ্দেশ্যে জড়ো হয়। এদের সবাই-ই সামাজিক একগামিতা প্রদর্শন করে। উডস হোল ওশানোগ্রাফিক ইনস্টিটিউশন, ম্যাসাচুসেটস (Woods Hole Oceanographic Institution, Massachusetts) এর বিজ্ঞানীরা, ৪২৪টা নারী অ্যালবাট্রস পাখিকে পনেরো বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করে আসছেন। উদ্দেশ্য এরা এদের সঙ্গীদের প্রতি বিশ্বস্ত থাকে কিনা তার রেকর্ড নেয়া। তারা খেয়াল করলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিচ্ছেদের কারণ হচ্ছে প্রজননের ব্যর্থতা। সাধারণত একটা নারী অ্যালবাট্রস কেবল একটা ডিম দেয়। যদি সে তার বর্তমান সঙ্গীর সাথে ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা জন্মদানে ব্যর্থ হয় তাহলে তাদের বিচ্ছেদ হওয়ার সম্ভাবনা পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। সাগর পৃষ্ঠের তাপমাত্রার সাথেও আছে বিচ্ছেদের সম্পর্ক। ২০১২ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে সাগর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা তেমন বাড়তি ছিল না। তখন অ্যালবাট্রস পাখিদের মধ্যে বিচ্ছেদের পরিমাণ ছিল চার শতাংশেরও নিচে। কিন্তু ২০১৭ সালে সাগর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চাইতে অনেক বেড়ে গিয়েছিল। এর সাথে তাল মিলিয়ে বিচ্ছেদের পরিমাণও বেড়ে গিয়ে আট শতাংশে দাঁড়ায়। এমনকি তখন প্রজননে সফল অ্যালবাট্রস দম্পতিদের মধ্যেও বিচ্ছেদ ঘটে।
তার মানে জলবায়ুর পরিবর্তনে সাগেরের পানি উষ্ণ হয়ে উঠলে, প্রজনন সফলতাও এসব পাখিদের মধ্যে বিচ্ছেদ আটকাতে পারে না। কিন্তু এমনটা কেন হয়? সাগরের পানি গরম হয়ে উঠলে, আশপাশে খাদ্যাভাব দেখা দেয়। তখন খাবারের সন্ধানে অ্যালবাট্রস পাখিরা অন্যত্র চলে যায়। খাদ্যাভাব সাগরের পাখিদের মধ্যে স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ এর পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। খাদ্যাভাবে পীড়িত এবং ক্ষুধার্ত নারী অ্যালবাট্রস তখন নিজের এই অবস্থার জন্যে পুরুষ সঙ্গীকে দায়ী ভাবতে থাকে। এভাবেই প্রতিকূল পরিবেশ বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে কাজ করে। গত বছর নর্থ ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়, চ্যাপেল হিল- এর গবেষক ব্রায়ান লার্চ এবং তার সহকর্মীরা প্রাণীদের বিচ্ছেদ সংক্রান্ত বিষয়ে একটা গাণিতিক মডেল দাঁড় করান। এই মডেল বলছে, বিবর্তন প্রাণীদেরকে বিচ্ছেদ এর দিকে চালিত করে। যে-সব নারী সদস্যরা তাদের প্রজনন সফলতাকে ত্বরান্বিত করতে চায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারাই বিচ্ছেদ এর দিকে ঝোঁকে।
পুরুষ-নিয়ন্ত্রিত বাসস্থান গুলোয় খাদ্য কিংবা শিকারির পরিমাণের দিক থেকে যত বেশী বৈচিত্র্য থাকবে নারী অ্যালবাট্রস পাখিরা তত বেশী তার পুরুষ সঙ্গীকে ছেড়ে যাবার প্রবণতা দেখায়। খাদ্যের জোগান কম এমন বাসস্থানে সন্তান লালনপালন করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আর তাই নারী অ্যালবাট্রস পুরোনো বাসস্থান ছেড়ে অপেক্ষাকৃত ভালো বাসস্থানের পুরুষ সঙ্গীর সাথে থাকার উৎসাহ দেখায়। তাছাড়া পুরোনো কলোনিতে মৃত্যুর হার বেড়ে গেলে তা ছেড়ে নতুন কলোনিতে চলে যাওয়াটাই ভালো সিদ্ধান্ত হবে। সুতরাং খারাপ বাসস্থান গুলোর অবস্থা আরও খারাপের দিকে গেলে বিচ্ছেদ এর সিদ্ধান্তই লাভজনক। অর্থাৎ জলবায়ুর পরিবর্তন যদি কোনো অঞ্চলে সাময়িক ভাবে খাদ্যাভাব সৃষ্টি করে, নারী সদস্যরা তখন বিচ্ছেদকেই সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করে। বিচ্ছেদ যদিও পৃথকভাবে ঐ নারী অ্যালবাট্রস পাখির জন্যে লাভজনক হয়, কিন্তু অতিমাত্রায় বিচ্ছেদ এর হার পুরো কলোনির প্রজননের সফলতা কমিয়ে আনে। এর কারণ দীর্ঘসময় ধরে একসাথে সহবাসে থাকা দম্পতির সন্তান পালনের অভিজ্ঞতা নতুনদের তুলনায় বেশী থাকে। ফলত তাদের সফলভাবে সন্তান লালনপালন এর সম্ভাবনাও নতুনদের তুলনায় বেশী। গবেষকদের মডেল বলছে, বিচ্ছেদের হার বাড়লে সামগ্রিকভাবে কলোনির প্রজনন সফলতার হার কমতে থাকে।
কলোনি গুলো বিলুপ্তির মুখে
জলবায়ু পরিবর্তন পুরো জনগোষ্ঠী জুড়ে বিচ্ছেদ এর হার বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে অভিজ্ঞ দম্পতিদের মধ্যে যদি বিচ্ছেদ এর হার বেড়ে যায়, তাহলে পুরো কলোনিই বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়ে। তবে ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের ব্ল্যাক ব্রুড অ্যালবাট্রস পাখিদের এখনো বিশাল সংখ্যক ব্রিডিং পপোলেশন (প্রজননে সফল জনগোষ্ঠী) আছে। সাগর উষ্ণ হয়ে যাবার দরুন বেড়ে যাওয়া বিচ্ছেদ হার অবিলম্বে এত বিশাল ব্রিডিং পপোলেশন কে বিলুপ্ত করে দেবে এমন কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে যে-সব প্রাণীদের কলোনি ইতিমধ্যে কমে এসেছে, জলবায়ুর পরিবর্তনে বাড়ন্ত বিচ্ছেদের হার তাদের জন্যে মারাত্মক রূপ নিতে পারে। স্বাভাবিক প্রজনন প্রক্রিয়ার ব্যত্যয় এসব জনগোষ্ঠীর জন্যে হুমকিস্বরূপ। দক্ষিণ আর্জেন্টিনার পান্তা টম্বোয় ম্যাগেলানিক পেঙ্গুইন (Spheniscus magellanicus) পাখিরা বেশ বিপজ্জনক অবস্থায় আছে। এরাও একগামিতা প্রদর্শন করে। বাসস্থান নির্বাচনে এরা বেশ খুঁতখুঁতে স্বভাবের হয়। যুতসই বাসস্থান খুঁজে পেলে বছরের পর বছর এক জায়গাতেই কাটিয়ে দেয় এরা। পেঙ্গুইনরা ঝোপঝাড়ে কিংবা গর্তে বাস করতে পছন্দ করে যা তাদের শিকারি আর বিরূপ আবহাওয়া থেকে সুরক্ষা দেয়। এরকম বাসস্থান সন্তান লালন-পালনের জন্যেও বেশ সুবিধাজনক হয়।
পেঙ্গুইনরাও দীর্ঘ সময়ের সম্পর্কে ইতি টানে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এর কারণ নিরাপত্তা। বর্তমান বাসস্থান যদি অনিরাপদ মনে হয় তাহলে তারা অপেক্ষাকৃত অধিক সুরক্ষাজনক বাসস্থানের আশায় পুরোনো সম্পর্কে বিচ্ছেদ টানে। জলবায়ুর পরিবর্তনে যদি পুরোনো বাসস্থানে মৃত্যুহার বেড়ে যায় তাহলে এরা নতুন বাসস্থানের উদ্দেশ্যে ছুটে যায়। এদের ক্ষেত্রেও একটা ব্যাপার স্পষ্ট। নারী সদস্যরা পুরোনো সম্পর্কে বিচ্ছেদ করে নতুন সঙ্গীর সাথে সহবাস শুরু করে। তবে নতুন সঙ্গীর সাথে সন্তান লালনপালন অভিজ্ঞতার অভাবে ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তখন পুরো কলোনিতে বিচ্ছেদ এর হার বেড়ে যায়। জলবায়ুর পরিবর্তনে খাদ্যের সরবরাহ কমে যায় এবং ভালো বাসস্থানেরও অভাব দেখা দেয়। যা পুরো কলোনিতে বিচ্ছেদ এর হারকে বাড়িয়ে দেয়। একটা কম্পিউটার মডেল বলছে, কোনো কলোনিতে যদি পুরুষ কিংবা নারী সদস্যরা বেশী বেশী বিচ্ছেদে উৎসাহী হয়, তাহলে ঐ কলোনিতে প্রজননে সক্ষম জনগোষ্ঠী বিলুপ্ত হয়ে যাবার উপক্রম হয়। গবেষকরা এই প্রক্রিয়ার নাম দিয়েছেন “বিবর্তনীয় আত্মহত্যা”।
সুতরাং জলবায়ু পরিবর্তন প্রাণীদের মধ্যে বিচ্ছেদ বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখে। যা তাদের বিলুপ্তির অন্যতম একটা কারণ। তাই জলবায়ুর পরিবর্তনের মাত্রা কমিয়ে আনা অতীব জরুরি। বিশেষ করে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন নিয়ন্ত্রণে না থাকলে প্রাণীদের মধ্যে বিচ্ছেদ এর পরিমাণও অনিয়ন্ত্রিত হারে বাড়তে থাকবে। ফলত হারিয়ে যাবে নানা রকম বিচিত্র প্রাণী প্রজাতি।
তথ্যসূত্রঃ নিউ সায়ন্টিস্ট ম্যাগাজিন এর “দ্য ব্রেক আপ” প্রবন্ধ আলোকে লেখা।
Leave a Reply