কুমি একজন হাইস্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী। তবে ইদানিং সে তার শরীরের বাড়তি ওজন নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় ভুগছে। এই কারণেই সে খাওয়া-দাওয়া একদম ছেড়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ভুল সিদ্ধান্ত থেকে বার করে আনতে তাকে প্রাণরসায়ন পড়বার পরামর্শ দিয়েছে তারই বন্ধু নেমেটো। কুমি নেমেটোর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কুরুসাকার কাছে প্রাণরসায়ন শিখছে। এরই মধ্যে একদিন প্রফেসর কুরুসাকা তাকে বাড়ির কাজ হিসেবে চারটা রহস্য সমাধান করতে দিয়েছে। তার মধ্যে একটা প্রশ্ন হচ্ছে, শরীরে কেন চর্বি জমে? কুমি এবং তার বন্ধু নেমেটো একসাথে গ্রুপ স্টাডিতে বসেছে এই রহস্য সমাধান করার জন্যে।
কুমি- পরের রহস্যটা হলো আমি যা নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় আছি! বেশি খেলে কেন শরীরের ওজন বাড়ে?
নেমেটো- অতিরিক্ত ওজন বাড়াটা আসলে একটা অসুখ। ডাক্তারি ভাষায় এর নাম স্থুলতা। সহজভাবে বললে স্থুল হওয়া মানে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমা।
নেমেটো- ঠিক আছে! চলো এবার বায়োকেমিক্যালি স্থুলতার মানে জানা যাক।
গৃহীত এবং ব্যয়িত শক্তি
নেমেটো- যখন শর্করা, স্নেহ এবং আমিষ খাওয়া হয়, তখন এসব ভেঙ্গে শক্তি (ATP) তৈরি হয়। ১ মোল ATP থেকে ৭.৩ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। গ্রহণ করা শর্করা, স্নেহ এবং আমিষ ভেঙ্গে যে শক্তি পাওয়া যায় এর নাম গৃহীত শক্তি।
*আরো সঠিক ভাবে বললে আমরা যা খাই তার কিছু অংশ সরাসরি রেচন প্রক্রিয়ায় দেহ থেকে বের হয়ে যায়। আমাদের দেহে শর্করা, স্নেহ আর আমিষ শোষিত হয়। তাই এগুলো থেকে যে শক্তি পাওয়া যায় এর নাম গৃহীত শক্তি।
কুমি- সুতরাং তুমি যত বেশি খাবে তোমার গৃহীত শক্তির পরিমাণ তত বাড়বে।
নেমেটো- অন্য দিকে, আমরা যতক্ষণ বেঁচে আছি ততক্ষণ আমাদের শরীর শক্তি ব্যবহার করছে।
কুমি- এটা সত্য! এমনকি রাতে যখন আমি ঘুমাই কিংবা TV দেখি, তখনও আমার শরীর শক্তি ব্যবহার করতে থাকে। এই বিষয়টাকে বলা হয় বেসাল মেটাবলিক রেট (Basal Metabolic Rate), তাই না?
নেমেটো- হ্যাঁ ঠিক! আর তুমি যখন ব্যায়াম করো তখন আরো বেশি শক্তি খরচ করো। মোট খরচ হওয়া শক্তিকে বলে ব্যয়িত শক্তি। যখন গৃহীত শক্তির তুলনায় ব্যয়িত শক্তির পরিমাণ কম হয়…… তখন অব্যবহৃত শক্তি আমাদের শরীরে চর্বি হিসেবে জমতে থাকে।
কুমি- তার মানে ওজন কমাতে হলে আমাকে শারীরিক কসরত করতে হবে।
নেমেটো- আমাদের শরীরে চর্বি জমা হবার পেছনে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া কাজ করে। অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ করা হলে এবং ফ্যাট জমলে, মস্তিষ্কে গৃহীত ফ্যাট কমানোর সংকেত প্রেরিত হয়। বিপরীত ভাবে, যদি দেহে ফ্যাট এর পরিমাণ কমে আসে, তখন আমরা ক্ষুধার্ত অনুভব করি, আমরা ততক্ষণ পর্যন্ত খেতে থাকি যতক্ষণ না ফ্যাট এর লেভেল যথেষ্ট পরিমাণে ফিরে আসে।
কুমি- মজার ব্যাপার তো! আমার মনে হয় এই সহজাত প্রবৃত্তি বন্য জীবনে বাস করা প্রাণীদের থেকে এসেছে, যেখানে জীবন বেশ কঠিন। যদি এরা অনেক মোটা হয়ে যায়, তবে এদের খাবার ধরতে কষ্ট হয়। আর যদি চর্মসার হয়ে যায়, তবে এরা ক্ষুধার্ত থাকবে এবং মারা যাবে।
নেমেটো- হ্যাঁ ঠিক। উদাহরণস্বরুপ, ইনসুলিন হরমোন রক্ত থেকে গ্লুকোজ কে পেশী অথবা অ্যাডিপোস টিস্যুতে নিয়ে যায় এবং সেখানে গ্লাইকোজেন অথবা ফ্যাট হিসেবে জমা করে। এর ফলে রক্তের গ্লুকোজ কমে যায়। ( ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগের চিকিৎসার জন্যেও ইনসুলিন হরমোন ব্যবহার করা হয় )
কুমি- ওহ তার মানে, “রক্তের শর্করার পরিমাণ” বলতে রক্তে গ্লুকোজ এর ঘনত্ব কে বোঝায়! আর যদি এই গ্লুকোজ রক্ত থেকে পেশীতে অথবা ফ্যাট হিসেবে জমা হয়, তখন রক্তে এর পরিমাণ কমে যায়।
নেমেটো- সেই সাথে, মস্তিস্কের হাইপোথ্যালামাসের ( মস্তিষ্কের একটা অংশ ) স্নায়ু কোষের কোষ পর্দায় ইনসুলিন গ্রাহক নামে এক ধরণের প্রোটিন আছে।
*আসলে স্নায়ু কোষ ছাড়াও অন্যান্য কোষের কোষ পর্দায়ও ইনসুলিন গ্রাহক প্রোটিন থাকে।
নেমেটো- সুতরাং ইনসুলিন হরমোন আমাদের খাবার গ্রহণ আর ফ্যাট লেভেল নিয়ন্ত্রণ করে হাইপোথ্যালামাস এর মাধ্যমে। ইনসুলিন যখন হাইপোথ্যালামাস এর ইনসুলিন গ্রাহকের সাথে যুক্ত হয় তখন স্নায়ুতন্ত্র খাদ্য গ্রহণের তাড়নাকে দমিত করে।
এটা প্রমাণ করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা বেশ অবাক করা একটা পরীক্ষা করেন- তারা গবেষণাগারে কিছু ইঁদুরের শরীরে ইনসুলিন গ্রাহক প্রোটিন উৎপাদন প্রক্রিয়া বন্ধ করে খেয়াল করেন সেগুলো মোটা হয়ে যাচ্ছে।
কুমি- বাহ! আমাদের মস্তিষ্কে খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকার সংকেত প্রেরণ করে? তার মানে আমাদের শরীরই আমাদের সাথে চালাকি করে!
নেমেটো- লেপটিন নামে এক ধরণের প্রোটিন আছে, এটি কেবল মাত্র অ্যাডিপোস টিস্যুতেই থাকে। এটি হাইপোথ্যালামাসে থাকা লেপটিন গ্রাহকের মাধ্যমে ফ্যাট জমার তথ্য মস্তিষ্কে জানান দেয়। অনেকটা ইনসুলিন গ্রাহকের মতই। এটিও ক্ষুধা নিবারণ করে।
কুমি- ও আচ্ছা। ইনসুলিন এবং লেপটিন এই দুই ধরণের প্রোটিনই আমাদের খাওয়ার পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যে গুরুত্বপূর্ণ।
নেমেটো- হ্যাঁ ঠিক। বিজ্ঞানীরা লেপটিন হরমোন নিয়েও কাজ করেছেন। যেসব ইঁদুরের দেহে লেপটিন হরমোনের জিনে সমস্যা থাকে তারাও মোটাসোটা হয়ে যায়। অনেকটা ইনসুলিন গ্রাহক জিন এর মতন।
কুমি- এটা খুবই বাজে! আমি বুঝি না বিজ্ঞানীরা কেন বারবার এই নিষ্পাপ ইঁদুর গুলো নিয়েই গবেষণা করেন, যাই হউক…
নেমেটো- আমরা যদি স্থূলকায় লোকের শরীরের রক্তে থাকা লেপটিন হরমোন এর ঘনত্ব স্বাভাবিক মানুষের রক্তের সাথে তুলনা করি, তাহলে উভয়ের দেহেই দেখা যাবে এই হরমোন এর পরিমাণ এর সাথে সঞ্চিত ফ্যাট এর পরিমাণ সমানুপাতিক।
যারা অতিরিক্ত খাওয়া-দাওয়া করেন তাদের শরীরে, যারা পরিমিত খান তাদের সমপরিমাণ লেপটিন হরমোন তৈরি হয়। যদিও লেপটিন হরমোন স্বাভাবিক মানুষের খাবার খাওয়াকে বাঁধা দেয়, মোটা লোকদের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটে না। অন্যভাবে বললে, মোটা লোকদের শরীর লেপটিন হরমোন এর প্রতি অসংবেদনশীল।
কুমি- কি সমস্যা রে বাবা! আমাদের দেহে ইনসুলিন আর লেপটিন হরমোন ঠিক মতন কাজ না করলে, আমরা শুধু খেতেই থাকবো, তারপরেও আমাদের ক্ষুধা নিবৃত্তি হবে না…
নেমেটো- আমাদের দেহের ফ্যাট লেভেল এবং ক্ষুধার ভারসাম্য ঠিক রাখার ক্ষেত্রে আরও কিছু ব্যাপার কাজ করে, এগুলো নিয়ে সামনে কথা হবে!
অতিরিক্ত শর্করা চর্বিতে রূপান্তরিত হয়!
নেমেটো- তাহলে স্থুলতা হচ্ছে আমাদের দেহের বিপাকীয় প্রক্রিয়ার সাম্যাবস্থা* নষ্ট হওয়ার ফলাফল। শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমার ফলেই স্থুলতা দেখা দেয়।
কুমি- অল্প কথায় বললে, তুমি অনেক বেশি খাচ্ছো আর মেদ জমাচ্ছো।
*সাম্যাবস্থা মানে হচ্ছে ভেতরের পরিবেশ অপরিবর্তিত রাখবার জন্যে বাইরের পরিবেশ এর সাথে প্রতিনিয়ত নানান কিছু বিনিময় করবার প্রক্রিয়া।
নেমেটো- চলো এখন এর সাথে যুক্ত নানান রকম প্রাণরাসায়নিক প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা যাক…
দুইভাবে শরীরে ফ্যাট জমতে পারেঃ ১। যখন গৃহীত লিপিড সরাসরি ফ্যাট হিসেবে জমতে থাকে, আর ২। যখন শর্করা ফ্যাটে রূপান্তরিত হয়।
প্রথমেই আমরা আলোচনা করবো কি করে গৃহীত লিপিড সরাসরি ফ্যাট হিসেবে জমা হয়। সাধারণত, খাবারের সাথে গ্রহণ করা লিপিড প্রথমে বিভিন্ন লিপোপ্রোটিন আকারে দ্রবীভূত হতে থাকে এবং সারা শরীরে পরিবাহিত হবার সময় নানান রকমের শ্বসনিক প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যায়।
কুমি- ঠিক, অনেকটা কোলেস্টেরল এর মতন।
নেমেটো- কিন্তু তুমি যদি অতিরিক্ত লিপিড গ্রহণ করতে থাকো বাড়তি অংশটা যকৃত এবং অ্যাডিপোস টিস্যুতে ফ্যাট হিসেবে জমা হতে থাকে। যখনই ফ্যাট জমার প্রসঙ্গ আসে তখনই একটা গুরুত্বপূর্ণ এনজাইম- লিপোপ্রোটিন লাইপেজ এর কথা বলতে হয়। প্রাণরসায়নে এনজাইম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা পরবর্তীতে এনজাইম নিয়ে আলাপ করবো।
এই এনজাইম লিপিড এবং ট্রাইঅ্যাসাইলগ্লিসারল পরিবহনের সময় এদেরকে ভেঙ্গে ফ্যাটি এসিড এবং গ্লিসারল তৈরি করে। এই প্রক্রিয়াকে হাইড্রোলাইসিস* বলে। উৎপন্ন ফ্যাটি এসিড এবং গ্লিসারল কে অ্যাডিপোস টিস্যুতে নিয়ে যাওয়া হয়।
*এনজাইম এবং পানির সহায়তায় কোন কোন কিছুকে ভেঙ্গে ফেলাকে হাইড্রোলাইসিস বলে। ১৭২ পৃষ্ঠায় এ নিয়ে বিস্তারিত আছে।
নেমেটো- আমাদের গ্রহণ করা লিপিড থেকে ফ্যাট তৈরি হয় চারটা ধাপে। চলো সেগুলো একবার দেখা যাক!
চারটা ধাপঃ
১। ট্রাইঅ্যাসাইলগ্লিসারল যকৃতে তৈরি হওয়া VLDL ( very low-density lipoprotein ) এবং অন্ত্রে তৈরি হওয়া এবং শোষিত হওয়া কাইলোমাইক্রন এর মাধ্যমে পরিবাহিত হয়।
২। রক্তনালীর এন্ডোথেলিয়াল কোষের পৃষ্ঠে থাকে লিপোপ্রোটিন লাইপেজ এনজাইম। যখন ট্রাইঅ্যাসাইলগ্লিসারল রক্তের কৈশিক জালিকার মধ্য দিয়ে অ্যাডিপোস টিস্যু, পেশী টিস্যু, এবং অন্যান্য টিস্যুতে যায় তখন এটি লিপোপ্রোটিন লাইপেজ এনজাইম এর মাধ্যমে ভেঙ্গে ফ্যাটি এসিড এবং গ্লিসারল এ পরিণত হয়।
৩। এই ফ্যাটি এসিড এবং গ্লিসারল অ্যাডিপোস টিস্যুতে জমা হয়।
৪। অ্যাডিপোস টিস্যুর ভেতরে ফ্যাটি এসিড এবং গ্লিসারল পুনরায় একত্রিত হয়ে ট্রাইঅ্যাসাইলগ্লিসারল তৈরি করে।
কুমি- আর যখনই এটা ঘটে তখন ফ্যাট এর পরিমাণ বাড়তে থাকে!
কুমি- ট্রাইঅ্যাসাইলগ্লিসারল এর কারণে শরীরের ওজন বাড়ে, এটা খুবই কৌতূহলজনক! সুতরাং আমি এর কোনটাই আর খাচ্ছি না! লিপিড তো কোনোভাবেই না! আর তখন আমার শরীরের অতিরিক্ত মেদ জমবে না, তাই না?
নেমেটো- এখানে কিছু একটা বাদ পড়ে যাচ্ছে। তোমার প্রিয় খাবার গুলোয় প্রচুর পরিমাণে শর্করাও কিন্তু থাকে, ভুলে গেছো?
কুমি- ও হ্যাঁ, শর্করা থেকেও তো ফ্যাট তৈরি হয়!
নেমেটো- বেশি বেশি রামেন আর স্প্যাগোটি খেলেও শরীরে অনেক শর্করা জমে। আর তখন তোমার শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাটও জমবে। এর আসলে কোন শর্টকার্ট উপায় নেই। ফ্যাট কমাতে হলে নিয়ন্ত্রণ এবং সতর্ক থাকতে হবে। অন্যভাবে বললে, যদি আমরা অনেক বেশি শর্করা খেতে থাকি…আমাদের শরীর বাড়তি শর্করা গুলোকে ফ্যাট হিসেবে যকৃত আর অ্যাডিপোস টিস্যুতে জমা করে রাখবে।
কুমি- তুমি আসলেই ঠিক বলেছো। এই পত্রিকাও শর্করা গ্রহণ নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারে বলছে।
নেমেটো- চলো এখন জানা যাক কি করে শর্করা চর্বিতে পরিণত হয়। প্রথমত, তুমি কি সাইট্রিক এসিড চক্র সম্বন্ধে জানো?
কুমি- ওই যে বার বার ঘুরতে থাকে, তাই না? হ্যাঁ মনে পড়েছে!
নেমেটো- শক্তির উৎস শর্করা গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়ায় পাইরুভেট এ পরিণত হয়। পাইরুভেট মাইটোকন্ড্রিয়ায় গিয়ে অ্যাসিটাইল কোএ তে রূপান্তরিত হয়। এখন আমরা এই অবধিই রাখবো, ঠিক আছে?
কুমি- বুঝতে পেরেছি।
নেমেটো- সাধারণত, অ্যাসিটাইল কোএ অক্সালো এসিটেট এর সাথে যুক্ত হয়ে সাইট্রেট এ পরিণত হয়, কিন্তু… যদি অনেক বেশি শর্করা গ্রহণ করা হয়, উৎপন্ন হওয়া অতিরিক্ত সাইট্রেট মাইটোকন্ড্রিয়া থেকে বেরিয়ে সাইটোসলে প্রবেশ করে। সাইটোসলে সাইট্রেট ফ্যাটে রূপান্তরিত হয়।
নেমেটো- অধিক পরিমাণে শর্করা খেলে, সাইট্রেট মাইটোকন্ড্রিয়া থেকে বেরিয়ে সাইটোপ্লাজমে যায়। সেখানে এটি ভেঙ্গে গিয়ে পুনরায় অ্যাসিটাইল কোএ তৈরি করে। অ্যাসিটাইল কোএ থেকে তৈরি হয় ম্যালোনাইল কোএ।
কুমি- ম্যালোনাইল কোএ থেকে তৈরি হয় পামিটিক এসিড। যেহেতু গ্লাইকোলাইসিস এ এখনো শর্করা ভাঙ্গছে, এই অ্যাসিটাইল কোএ, ম্যালোনাইল কোএ এবং পামিটিক এসিড জমতে শুরু করে, তাই না?
নেমেটো- হ্যাঁ ঠিক, আর পামিটিক এসিড হল একটি ফ্যাটি এসিড! ম্যালোনাইল কোএ সরাসরি এই ফ্যাটি এসিডে পরিণত হয়।
নেমেটো- তোমার অবশ্যই টেবল সুগার (ফ্রুক্টোজ) গ্রহণের ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিত। ফ্রুক্টোজ যকৃতে ফ্যাটি এসিড সংশ্লেষণ করে এবং স্থুলতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
কুমি- হায়…মিষ্টি, মিষ্টি সুগার আমার সাথে বেঈমানি করলো…
নেমেটো- চলো এখন এসব ছাড়া যাক এবং শেষ পৃষ্ঠা থেকে এই অংশটা একটু বড় করা যাক। ম্যালোনাইল কোএ থেকে পামিটিক এসিড তৈরি হয় বিভিন্ন ধরণের এনজাইম নিয়ন্ত্রিত বিক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। চলো দেখা যাক!
কুমি- তাহলে এই সাইকেলটা চলতে থাকে যতক্ষণ না ম্যালোনাইল কোএ থেকে পামিটিক এসিড উৎপন্ন হচ্ছে।
* ম্যালোনাইল কোএ তৈরির বিক্রিয়া ফ্যাট তৈরির প্রক্রিয়ার একটা রেট লিমিটিং বিক্রিয়া। এর মানে হচ্ছে ফ্যাট তৈরি নির্ভর করছে কতটা দ্রুত অ্যাসিটাইল কোএ থেকে ম্যালোনাইল কোএ তৈরি হচ্ছে।
সুত্র- লেখাটি আমার প্রকাশিতব্য অনুবাদ বই “দ্য মাঙ্গা গাইড টু বায়োকেমিস্ট্রি” থেকে নেওয়া।
Leave a Reply