এডোবির ইতিহাস: গ্রাফিক্সের ভুবন রাঙানো গল্প

লেখাটি বিভাগে প্রকাশিত

সেপ্টেম্বর ২০১৯। বেইলি রোড, ঢাকা।

মিসেস শিউলীদের এই বাসাটা অনেক পুরোনো। কতশত স্মৃতি জমে আছে এর আনাচেকানাচে, তার ইয়ত্তা নেই। ঘরের এককোণে এখনো সটান দাঁড়িয়ে রয়েছে তাদের প্রথম কেনা আলমিরাটা, এর জরাজীর্ণ ভাঙা তক্তপোশে তাদের নব্বইয়ের দশকের বিয়ের অ্যালবামটাও পড়ে আছে অযত্নে। আলতো ছোঁয়ায় এটাকে সেখান থেকে তুলে আনলেন তিনি। হাত বুলাতেই দেখলেন, ছবিগুলোতে কেমন যেন মরচে পড়েছে৷ বিবর্ণ হয়ে গেছে এখানে-ওখানে। কালচে-মলিন হয়ে যাওয়া ছবিগুলোর স্পর্শে একধরনের নীলাভ মায়া অনুভব করলেন তিনি। ব্যস, একদিন স্নিগ্ধ বিকেলে সবগুলোকে বগলদাবা করে পৌঁছে গেলেন বাসার পাশের স্বপ্নপুরী ফটো এডিটিংয়ের দোকানে।

সেখানে পৌঁছেই দোকানিকে বুঝিয়ে বললেন সবকিছু। কিছুক্ষণের অপেক্ষা। দোকানির হাতের ছোঁয়া আর ফটোশপের চমৎকার জাদুয় মুহূর্তেই বেরিয়ে এলো একগুচ্ছ স্বচ্ছ-শুভ্র ছবি। মনের আনন্দে মিসেস শিউলী দোকানির বিল পরিশোধ করলেন। বাসায় ফিরে এসেই ভাবতে লাগলেন, এতো তাড়াতাড়ি এতগুলো ছবি কীভাবে এমন ঝকঝকে পরিষ্কার হয়ে উঠলো? মিসেস শিউলীর হয়তো অজানা, এডোব করপোরেশনের এই যাত্রাটা এতটাও সহজ ছিল না। ছবি সম্পাদনার ফটোশপের পাশাপাশি পিডিএফ, ইলাস্ট্রেটর, প্রিমিয়ার প্রোসহ এডোবির অন্যসব সফটওয়্যারের এমন চটপটে হয়ে উঠার পেছনে রয়েছে দু’জন মানুষের নিরলস পরিশ্রম। বর্তমানে এডোবির ৯,৮০,৯৫৩ বর্গফুট আয়তনের এডোব কর্পোরেশনের যাত্রাটাও কিন্তু শুরু হয়েছিল ছোট্ট এক গ্যারেজ থেকে। চলুন জেনে আসা যাক এডোবির সেই বর্ণিল পথচলা।

এডোবির স্রষ্টা জন ওয়ারনক ও চার্লস গেশকি; ছবি সূত্র: Nationalmedals.org

শুরুটা যেভাবে

১৯৮০ সালের প্রারম্ভের কথা। আমেরিকার স্বনামধন্য Xerox PARC কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন দু’জন বন্ধু- জন ওয়ারনক ও চার্লস গেশকি। কোম্পানিতে তাদের কাজ, প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস এবং আধুনিক কম্পিউটারের নকশা প্রণয়ন করা। খুঁজে বের করা বিভিন্ন বাগ (Bug)। একদিন সেখানকার ছোট্ট গবেষণাগারে কর্মরত অবস্থায় দু’জনে উদ্ভাবন করলেন এক অন্যরকম প্রযুক্তি। সঙ্গে সঙ্গেই অবগত করলেন কোম্পানির মালিক জেরক্সকে। আনমনা জেরক্স সদ্য আবিষ্কৃত প্রযুক্তিটির ব্যাপারে দেখান রীতিমতো বিরক্তি। একদিকে তাদের কাজ নিয়ে জেরক্সের চোখেমুখে এমন অনীহা, অন্যদিকে নতুন প্রযুক্তির যথাযথ উৎকর্ষ সাধনের অদম্য ইচ্ছায় দুই বন্ধু সিদ্ধান্ত নিলেন- জেরক্সের কোম্পানির চাকরি ছেড়ে দিবেন। পুরো সময়টুকু ব্যয় করবেন নবপ্রযুক্তির পেছনে। ব্যস, আঁটঘাট বেঁধে নেমে পড়লেন তারা। 

সময় গড়িয়ে যায়, দুই বন্ধুও মনযোগ সহকারে এগিয়ে নেয় তাদের কাজ। এবং অবশেষে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, তারা পায় তাদের কাঙ্ক্ষিত অর্জন। তৈরি করে ফেলেন চমকপ্রদ এক কী-প্রিন্টিং (key printing) প্রযুক্তি। খুশিতে উদ্ভাসিত দুই বন্ধু নবপ্রযুক্তিটির নাম দেন পোস্টস্ক্রিপ্ট (Postscript)। অতিসাধারণ ক্যালকুলেটরের স্ক্রিনে যেমন লেখা ফুটে ওঠে, বাটন চেপে অনেকটা এরকমই প্রিন্ট হতে থাকে এসব প্রিন্টারে। আর তাই লোকমুখে এটি পরিচিতি পায় ডট ম্যাট্রিক্স (Dot-Matrix) প্রিন্টার নামে৷ অনেকগুলো ছোট ছোট ডটের সমন্বয়ে প্রিন্ট হতো এসব ছবি। যা দেখতে হতো বর্তমান লো-রেজুলেশন, ফেটে যাওয়া ছবির মতো। যদিও তখনকার সময়ে এটিই ছিল এক যুগান্তকারী উদ্ভাবন। এখন অবধি প্রচলিত সকল আধুনিক প্রিন্টারের প্রিন্টিং স্ট্যান্ডার্ডও এই পোস্টস্ক্রিপ্ট। এর উন্নততর সংস্করণ তৈরিতে নিরলসভাবে কাজ করে যায় তারা।

ডট ম্যাট্রিক্স প্রিন্টিং; ছবি সূত্র: Typographica

অ্যাপলের পদক্ষেপ

১৯৮২ সাল। ওয়ারনক ও গেশকি পোস্টস্ক্রিপ্টের নতুন সংস্করণ তৈরিতে এরইমধ্যে ব্যয় করে ফেলেছেন প্রায় দুই বছর। সম্পন্নও করে ফেলেছেন গবেষণা। উন্মোচিত করেছেন প্রিন্টারের এক চমকপ্রদ সংস্করণ, লেজার প্রিন্টার। পোস্টস্ক্রিপ্ট প্রযুক্তিকে ধারণ করে এসব প্রিন্টার প্রিন্টিং-এর জগতকে আমূল বদলে দিলো। নিয়ে এলো দারুণ চমক। হয়ে উঠলো সর্বেসর্বা। প্রথমবারের মতো বেড়িয়ে আসতে লাগলো ঝকঝকে সব পরিষ্কার ছবি। কিন্তু? কিন্তু এর প্রিন্টিং খরচ পূর্বের তুলনায় বেশি হওয়ায় কমতে লাগলো গ্রাহকের সংখ্যা। আর তাই, ওয়ারনক ও গেশকি অসংখ্যবার শুনেছেন, তারা ভুল গন্তব্যের পানে বাড়িয়েছেন পা। যদিও কিছুদিনের মধ্যেই অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস এডোবিকে কিনতে প্রস্তাব করলে ভাটা পড়ে তাদের কথায়।

টেক জায়ান্ট অ্যাপল প্রায় ৫ মিলিয়ন ডলার মূল্যে এডোবিকে কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করে। কিন্তু, ওয়ারনক ও গেশকি সঙ্গে সঙ্গে তা প্রত্যাখ্যান করেন। জানান, এখনই তারা এডোবিকে বিক্রি করতে নারাজ। যদিও বিনিয়োগকারীদের অনুরোধে দুই বন্ধু একসময় আলোচনায় বসেন। সিদ্ধান্ত নেন, জবসের কাছে কোম্পানির ১৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রির। এসময় দূরদর্শী জবস পোস্টস্ক্রিপ্টের পাঁচ বছরের লাইসেন্সও করিয়ে নেন। এর ফলে, সিলিকন ভ্যালির ইতিহাসে প্রথম বছরেই প্রথম কোম্পানি হিসেবে মুনাফার মুখ দেখে এডোবি। ১৯৮৫ সাল থেকে অ্যাপল তাদের লেজার প্রিন্টারগুলোতে ব্যবহার শুরু করে এই পোস্টস্ক্রিপ্ট প্রযুক্তি।

পোস্টস্ক্রিপ্ট আবিষ্কারের পূর্বে ছবি ছাপানোর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো চলতো ফটোটাইপসেটার (Photo Type Setter) নামক এক জটিল প্রযুক্তির মাধ্যমে। এর একমাত্র উৎপাদনকারী ছিল জেরক্সের সেই Xerox PARC কোম্পানি। আর তাই, ধারণা করা হয়, এজন্যই জেরক্স তাদের দু’জনের উদ্ভাবিত প্রযুক্তিটির ব্যাপারে অনীহা দেখিয়েছিলেন। বুঝতে পেরেছিলেন, এর পরবর্তী সংস্করণ হয়তো জেরক্সের ছবি ছাপানোর যন্ত্রকে ফেলতে পারে হুমকির মুখে! আর হয়েছেও তাই। কিছুদিনের ভেতরেই স্টিভ জবস ম্যাকিনটশ ও পোস্টস্ক্রিপ্টের সমন্বয়ে রাঙিয়ে তুলেন পাবলিশিং ইন্ডাস্ট্রির দুনিয়া। এর হাত ধরে প্রায় ৩০ বছর যাবৎ একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করা ফটোটাইপসেটার এক নিমিষেই প্রতিস্থাপিত হয়ে যায়।

চলছে টাইপসেটিং এর কাজ; ছবি সূত্র: KWLS.org

সফটওয়্যারের জগতে এডোবি

১৯৮৭ সালে আমেরিকার মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য স্নাতক সমাপ্ত করেছেন তুখোড় মেধাবী থমাস নোল। পিএইচডির জন্য একই বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু করেছেন পড়াশোনা ও গবেষণার কাজ। পাশাপাশি কাজ করছেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। সেসময় তিনি অ্যাপলের ম্যাকিনটশ প্লাস কম্পিউটারে একটি গ্রাফিক প্রোগ্রাম লিখছিলেন। এর মাধ্যমে একরঙা পর্দায় সাদা-কালো ছবি প্রদর্শন করা যেতো। তিনি এর নাম দেন ডিসপ্লে। একসময় এটি নজর কাড়ে তার ছোটভাই জন নোলের। জন নোল ইন্ডাস্ট্রিয়াল লাইট এন্ড ম্যাজিক কোম্পানির একজন কর্মকর্তা। ছবির প্রতি তার ছিল সীমাহীন আগ্রহ। আর তাই, তিনি থমাসকে অনুরোধ করেন, ডিসপ্লেকে একটি সম্পূর্ণ ইমেজ এডিটিং প্রোগ্রামে পরিণত করতে।

ভাইয়ের এমন অনুরোধে ১৯৮৮ সালে থমাস তার শিক্ষাজীবন থেকে ছয় মাসের ছুটি নেন। নেমে পড়েন গবেষণায়। এসময় থমাসের সঙ্গী হন ভাই জন নোল। প্রথমে তারা ছবি এডিটিং সফটওয়্যারটির নাম দেন ইমেজপ্রো। কিন্তু কপিরাইট সংক্রান্ত জটিলতার কারণে সে নামের পরিবর্তন করতে হয়। আবির্ভাব ঘটে ফটোশপের প্রথম ভার্সন, ফটোশপ ০.৭! এসময় জন নোল অ্যাপলের ইঞ্জিনিয়ার ও সান জোসে অবস্থানরত এডোবির আর্ট পরিচালক রাসেল ব্রাউনকে প্রোগ্রামটি দেখান। এবং ১৯৮৮ সালের সেপ্টেম্বরে বিক্রির উদ্দেশ্যে সফটওয়্যারটির লাইসেন্স করে নেয় এডোবি।

১৯৮৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি, প্রথমবারের মতো ম্যাকিনটশের জন্য উন্মুক্ত করা হয় এডোবি ফটোশপ। দ্রুততার সাথে এটি কুড়িয়েও নেয় প্রচুর জনপ্রিয়তা। ফটোশপ ১.০ উন্মোচন করার সময় প্রতি ঘন্টায় একটি সাধারণ ছবি এডিটিংয়ের মূল্য ছিল প্রায় ৩০০ ডলার! এবং প্রতি কপি লাইসেন্সের মূল্য ছিল ৮৯৫ ডলার! তবে সেটি ছিল আজীবনের জন্য, অর্থাৎ একবার কেনার পর যত ইচ্ছে ব্যবহার করা যাবে। যার ফলে এটি ছিল ডিজিটাল ইমেজ ইন্ডাস্ট্রিতে একটি যুগান্তকারী ঘটনা।

ফটোশপের স্রষ্টা জন ও থমাস; ছবি সূত্র: Graphiclearn.com

পিডিএফ ও অন্যান্য সফটওয়্যার

১৯৯১ সালের শুরুর দিকে জন ওয়ারনক প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে উদ্ভাবন করেন আরেকটি নতুন প্রযুক্তি। নাম দেন Portable Document Format বা পিডিএফ। ইন্টারনেটের মাধ্যমে খুব সহজেই গুরুত্বপূর্ণ ফাইল আদান-প্রদান, দেখা ও প্রিন্ট করার ভাবনা থেকেই তৈরি করা হয় এটি। বছর দুয়েক পর তিনি উন্মোচিত করেন পিডিএফের জগতের অন্যতম চমক Adobe Acrobat Reader। বর্তমানে এটি বিনামূল্যে ব্যবহার করা গেলেও তখনকার সময়ে এটি ব্যবহারের জন্য গুনতে হতো ৫০ ডলার। যদিও ২০০৮ সালে এটি সবার জন্য  উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

১৯৯৩ সালে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য ফটোশপ বাজারে আনে এডোবি। এর মাধ্যমে অন্যসব কম্পিউটারের জগতেও বিস্তৃত হয় ফটোশপের দুনিয়া। বৃদ্ধি পায় ফটোশপের ছবি সম্পাদনার পরিসর। এভাবে ধীরে ধীরে ভিডিও এডিটিংয়ের জগতেও হানা দেয় এডোবি। তৈরি করে ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার প্রিমিয়ার। ২০০৩ সালে এটি প্রিমিয়ার প্রো হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বর্তমানে অতিসাধারণ ফেসবুক ভিডিও থেকে শুরু করে হাজারো ডলারের মুভি-সিরিজও এডিট করা হয় এর সাহায্যে। পরবর্তী বছরগুলোতে এডোবি উল্লেখযোগ্য হারে বিভিন্ন সফটওয়্যার তৈরি করে, অন্যদের তৈরিকৃত সফটওয়্যারও একে একে অধিগ্রহণ করতে থাকে। এভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে এডোবির সফটওয়্যার জগতের পরিধি। এর সঙ্গে থরথর করে বৃদ্ধি পায় কোম্পানির শেয়ার। বাড়তে থাকে মুনাফা। যার উপর একসময় কুদৃষ্টি পড়ে একজোড়া ধুরন্ধর কিডন্যাপারের। অর্থ আত্মসাতের লোভে তারা গ্রহণ করে বীভৎস এক পরিকল্পনা।

বিভিন্ন বছরে এডোবির আয়; ছবি সূত্র: dazeinfo.com

কিডন্যাপের কবলে চার্লস

২৬ মে, ১৯৯২ সাল। সকালবেলা। ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্টেন ভিউয়ে এডোবির পার্কিং লটে গাড়ি থেকে নেমেছেন চার্লস গেশকি। কোম্পানিতে কাজের চাপ বেড়েছে খুব। তাই আজ খুব সকালবেলা অফিসে এসেছেন তিনি। অফিসের পানে পা বাড়াতেই দু’জন বন্দুকধারী তার দিকে বন্দুক তাক করে। কিডন্যাপ করে দ্রুত কেটে পড়ে সেখান থেকে। এডোবির বাড়ন্ত মুনাফা হাতিয়ে নিতেই তাদের এমন দূরদর্শী চক্রান্ত। দুপুর ১২.৩০-এ একটি অচেনা নম্বর থেকে কল আসে চার্লসের স্ত্রী ন্যানের ফোনে। জানায়, তার স্বামীকে কিডন্যাপ করা হয়েছে। মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করা হয়েছে ৬৫০,০০০ ডলার! পাশাপাশি, পুলিশকে অবগত করলে তার স্বামীকে মেরে ফেলবে বলেও হুমকি দেয় তারা।

দিশেহারা ন্যান একসময় বাসার সঙ্গে লাগোয়া পাবলিক টেলিফোন থেকে জন ওয়ারনককে কল দেয়। খুলে বলে বিস্তারিত। জনের স্ত্রী মার্ভা এফবিআইকে জানানোর কথা বলেন। একসময় তারা শরণাপন্নও হয় তাদের। চলে ৪ দিনব্যাপী সুক্ষ্ম আলোচনা। সিদ্ধান্ত হয়- চার্লসকন্যা ক্যাথি বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরে মুক্তিপণসমেত পৌঁছুবেন সেখানে। গোপনে সঙ্গে যাবে একজন এফবিআই এজেন্ট। পেছনে থাকবে কয়েকটি আন্ডার-কভার গাড়িও। যেরকম পরিকল্পনা, সেরকম কাজ। রুদ্ধশ্বাস এক অভিযান পরিচালনার পর অবশেষে ৩১ মে উদ্ধার করা হয় চার্লসকে। আটককৃত দু’জন কিডন্যাপারকে প্রদান করা হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এরকম রোমহষর্ক ঘটনার পরও খুবই স্বাভাবিক জীবনযাপন করেন ওয়ারনক ও গেশকি।

চার্লসকে কিডন্যাপ করে কিডন্যাপাররা; ছবি সূত্র: Getty Images

এডোবির স্নিগ্ধ পথচলা

প্রায় এক দশক পূর্বে, ২০১২ সালে একদল হ্যাকারের নজর পড়ে এডোবির উপর। হ্যাক করে ফেলে তাদের তথ্য সংরক্ষণের সাইট। সৃষ্টি হয় ব্যবহারকারীদের গোপন তথ্য ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা। প্রায় ৩৮ মিলিয়ন ব্যবহারকারীর তথ্যের সুরক্ষায় তাদের দারস্থ হতে হয় আদালতের, যা কোম্পানির সার্বিক চিত্রে ফেলে নেতিবাচক প্রভাব। যদিও এতকিছুর পরেও এডোবির মুনাফা বৃদ্ধি পায় থরথর করে। পৌঁছাতে থাকে সাফল্যের সুউচ্চ শিখরে। অর্জন করে মানুষের আস্থা। কুড়িয়ে নেয় অপরিসীম বিশ্বাস ও ভালোবাসা।

এর কিছুকাল পূর্বে ২০০৯ সালে জন ওয়ারনক ও চার্লস গেশকি National Medal of Technology পদকের জন্য মনোনীত হন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নিজ হাতে তাদেরকে তুলে দেন এই সম্মাননা। এছাড়াও, ২০১০ সালে তারা সম্মিলিতভাবে অর্জন করেন মার্কনি প্রাইজ পুরস্কার। যা তথ্য প্রযুক্তিতে অবদানের জন্য সবচেয়ে বড় সম্মানজনক স্বীকৃতি। তাদের অনবদ্য অবদানে সৃষ্টি হওয়া সফটওয়্যারসমূহ মানুষের জীবনকে সহজ করেছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তৈরি করেছে হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান। ২০২২ সাল নাগাদ এডোবি নিজেও ঘরে তুলেছে ১৭.৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার! বর্তমানে এডোবির জেনারেটিভ এআই ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে পুরো বিশ্বজুড়ে।

References:
1. Adobe Inc. – Britannica
2. History of Adobe – Illustrator How
3. Adobe fast facts – Adobe.com
4. Thomas Knoll – Wikipedia
5. The Evolution of Adobe: A Journey Through History – Medium
6. Thomas & John Knoll Create Adobe Photoshop – History of Information
7. Adobe Systems, Inc. history, profile and history video – Companies History.

লেখাটি 71-বার পড়া হয়েছে।

ই-মেইলে গ্রাহক হয়ে যান

আপনার ই-মেইলে চলে যাবে নতুন প্রকাশিত লেখার খবর। দৈনিকের বদলে সাপ্তাহিক বা মাসিক ডাইজেস্ট হিসেবেও পরিবর্তন করতে পারেন সাবস্ক্রাইবের পর ।

Join 897 other subscribers