এক সুখময় মেলবন্ধন
সমুদ্রবিদ্যাকে চিন্তা করা যায় সমুদ্রের গল্পের মতো। এই গল্প পৃথিবীর একান্ত নিজস্ব। ঈশপের উপদেশ, গ্রিক দেবতাদের উপাখ্যান, হোমারের মহাকাব্য, ইউক্রেনের রূপকথা, আরব্য রজনীর লোককাহিনী, কিংবা ফ্রাঞ্জ কাফকার “দ্য মেটামরফোসিস” থেকে তা সম্পূর্ণ আলাদা। আধুনিক গবেষণা আমাদের প্রতিদিন জানান দেয় এক অদ্ভুত এবং বিস্ময়কর ঘটনাপ্রবাহে মেশানো সমুদ্রবিদ্যার ইতিহাস। প্রতিটি ছোট ঘটনা, আপাত দৃষ্টিতে খুবই স্বাভাবিক, তবে চিন্তার একটু গভীরতায় গেলে বোঝা যায় এই ঘটনাদের একসাথে থাকা কতটা আশ্চর্যজনক, কাকতালীয়, এবং দুর্লভ।
সকালের কোমল রোদ। বেলা যত বাড়ে সূর্যের প্রখরতা তীব্র হয়। সন্ধ্যায় তার কোমলতা আবারো বুঝিয়ে দিয়ে এক রাত্রির বিদায়। পরের ভোরে আবারো দেখা। তবে যেকোনো গ্রহের জন্য তার সূর্যের আলো পাওয়া কিন্তু দুর্লভ কোনো ঘটনা নয়। শুধু আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতেই প্রায় চল্লিশ হাজার কোটির বেশি তারা (সূর্য) আছে। তার প্রায় প্রতিটিকে ঘিরে একাধিক গ্রহ। আমরা জানি না এই বিশাল গ্রহের তালিকায় কত অনাবিষ্কৃত জীবন প্রতিদিন তার সূর্যের আলো পোহায়।
দিগন্তবিস্তৃত সমুদ্রের পানি আমাদের প্রিয় পৃথিবীকে মিটমিট উজ্জ্বল নীল আলোয় মহাকাশে পরিচিত করিয়ে দেয়। তবে মহাবিশ্বে পানির উপস্থিতিও কিন্তু অসাধারণ কোনো ঘটনা নয়। আমাদের সৌরজগতেই কিছু উপগ্রহ আছে যাদের ধারণকৃত পানির পরিমাণ পৃথিবীর সকল মহাসাগরের পানির সমষ্টিকে লজ্জায় ফেলে দেয়। বৃহস্পতি গ্রহের চাঁদ গ্যানিমিডে পৃথিবীর প্রায় আটগুণ বেশি পরিমাণ পানি আছে বলে ধারণা করা হয়। নাসার সাম্প্রতিক গবেষণা বারো বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে এপিএম ০৮২৭৯+৫২৫৫ (APM 08279+5255) নামে এক কোয়াজার খুঁজে পেয়েছে [1]। এই কোয়াজারে পৃথিবীর সকল মহাসাগরের পানির তুলনায় প্রায় চৌদ্দ লক্ষ কোটি গুণ বেশি পানির অস্তিত্ব মিলেছে।
ঋতুবৈচিত্রতা নিয়ে আমরা কত শিল্প সৃষ্টি করি! কিন্তু আমাদের সৌরজগতেরই প্রতিটি গ্রহে ঋতু আছে। দখিনা বাতাস এবং মৌসুমি জলবায়ু আমাদের প্রশান্তি দেয়, কিন্তু মহাবিশ্বের গ্রহ, উপগ্রহে বায়ুমণ্ডলের উপস্থিতির সন্ধান পুরোনো খবর। সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় আমাদের স্পন্দনশীল করে, অথচ অসংখ্য গ্রহ দিনে কয়েকবার সূর্যাস্ত সূর্যোদয় দেখে। আমাদের পরিচিত পাথুরে জমির রুক্ষতা খুঁজে পাওয়া যাবে মিলিয়নের বেশি আবিষ্কৃত গ্রহে। প্রতিটি অণু পরমাণু যা আমরা পৃথিবীতে খুঁজে পাই, তার সবকিছুই অগণিত পরিমাণে সমগ্র মহাবিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
তাই গভীরভাবে চিন্তা করলে আমরা বুঝতে পারি যে, পৃথিবী দুই হাত ভরে আমাদেরকে যা দিয়েছে, তাদের প্রত্যেকে এককভাবে অসাধারণ কিছু নয়। যে বিষয়টি এখানে অসাধারণ তা হলো এই সকল কিছুর এক সুখময় মেলবন্ধন। জীবনকে পৃথিবীর প্রতিটি উপাদান প্রভাবিত করে। কেউ কম, কেউ বেশি। ঠিক এখানেই সমুদ্র তার সর্বশ্রেষ্ঠ উপাখ্যান লেখে। পৃথিবীর জলাধারগুলো যেভাবে জীবনের হাল ধরে, তাকে আলোড়িত করে, এবং সযত্নে আগলে রাখে তা অভূতপূর্ব। প্রায় তিনশ কোটি বছর আগের বিশাল মহাসমুদ্র প্যানথালাসা থেকে শুরু করে, আজকের দিনের সকল জলরাশিই জীবনের মূল আশ্রয়াস্থল।
প্রাসঙ্গিকতা
ইতিহাস সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করলে আমরা অবাক হই এটা দেখে যে, মানুষ সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকেই সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী যে প্রকল্পগুলো সম্পন্ন করেছে, তাদের সবগুলোর পেছনে মাত্র তিনটি বিষয়ের হাত ছিল [2] । প্রথমটি হলো সৃষ্টিকর্তা, দেবতা বা রাজবংশের গৌরবগাঁথা । সবচেয়ে পরিচিত উদাহরণ – মিশরের ফারাওদের পিরামিড কিংবা ইউরোপের ঐতিহাসিক ক্যাথিড্রাল বা গির্জার জাঁকাল ভবনগুলো। সমাজের সাধারণ মানুষের আয়ের একটি বড় অংশ ব্যয় হতো এই কার্যক্রমগুলোতে। যদিও আধুনিক সমাজে এই প্রবণতা অনেকটাই কমে গিয়েছে তবে এখনো তা সম্পূর্ণ শূন্য নয়। যেমন ২০১৩ থেকে ২০১৬ সালে চীনের যুদ্ধের দেবতা গুয়ান ইউ-এর বিশাল মূর্তিটি প্রায় দুই কোটি ছাব্বিশ লক্ষ মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মিত হয়েছিল [3]।
দ্বিতীয় বিষয়টি হলো যুদ্ধ। প্রভাবশালীরা মারা যেতে চান না। তাই আমাদের কাছে আছে চীনের বিখ্যাত মহাপ্রাচীর। তাই আমরা ম্যানহাটন প্রজেক্টে দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করে সৃষ্টি করেছি পারমাণবিক বোমা। প্রতি বছর সে কারণেই প্রায় ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয় জেনেটিক প্রকৌশল খাতে যেন মানুষের জীর্ণ শরীরকে “সংশোধন” করা সম্ভব হয়। ভবিষ্যতে মহাজাগতিক আক্রমণ থেকে পৃথিবীকে রক্ষার জন্য (কিংবা পৃথিবী থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য) আমরা অ্যাপোলো প্রজেক্ট এর মতো বিশাল প্রকল্পে হাত দেই।
তৃতীয় চালকটি হলো, প্রকল্পের বিনিয়োগে ব্যবসায়িক লাভ। প্রভাবশালীরা শুধু যে মারা যেতে চান না তাই নয়, তারা গরীবও হতে চান না। মসলার ব্যবসায় ধনকুবের হওয়ার জন্য তৎকালীন স্প্যানিশ রাজবংশ কলম্বাসের সমুদ্রযাত্রায় আজকের টাকায় প্রায় বারো কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন [4]। একইভাবে, পর্তুগিজ-নিয়ন্ত্রিত রাস্তা এড়িয়ে অন্য উপায়ে মসলার স্বর্গরাজ্য মালুকু দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছানোর জন্য রাজা চার্লস ম্যাজেলান সমুদ্রযাত্রায় অগণিত টাকা ঢেলেছিলেন [5]।
আপাত দৃষ্টিতে এই উদাহরণগুলো সমুদ্রবিদ্যার সাথে অপ্রাসঙ্গিক মনে হতে পারে। এমনকি আমিও মনে করি “তুলনামূলক সমুদ্রবিদ্যা” বা comparative oceanography কে পেশাজীবন হিসেবে বেছে নেয়ার সময় এখনো আসেনি। তবে যে গতিতে কসমোলজি, জোতির্বিদ্যা, মহাকাশ প্রযুক্তি, এবং কোয়ান্টাম কম্পিউটিং অগ্রসর হচ্ছে, অন্যান্য গ্রহাণু (কিংবা গ্রহ) থেকে মূল্যবান খনিজ নিষ্কাশনের কৌশল শীঘ্রই আমাদের হাতের নাগালে চলে আসবে। সে সময়টা বেশ অদ্ভুত হবে। দুইটি ছোট উদাহরণ দেয়া যাক- মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের মাঝে ঘুরতে থাকা এক ছোট গ্রহাণুর নাম ১৬ সাইকি (16 Psyche)। এই গ্রহাণুটিতে প্রায় ১৭ লক্ষ কোটি কোটি (১.৭×১০১৯) কিলোগ্রাম লোহা-নিকেল মজুদ আছে বলে নাসার বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন [6]। তাত্ত্বিকভাবে, যদি আসলেই এই গ্রহাণুটিকে সফলভাবে নিষ্কাশিত করা সম্ভব হয় তাহলে আগামী কয়েক কোটি বছর পৃথিবীতে লোহা বা স্টিলের রড নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবেনা। একইভাবে ৫১১ ডেভিডা (511 Davida) নামের গ্রহাণুটির খনিজ মূল্য বর্তমান বাজার অনুযায়ী প্রায় তিন লক্ষ কোটি কোটি ডলার [7]।
তাই এটা অবাক করার মতো ঘটনা নয় যে সাম্প্রতিককালে বিজ্ঞানীরা মহাকাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গ্রহ, গ্রহাণু, ধূমকেতু, এবং উল্কার মতো কণাদের আরও কাছ থেকে বোঝার চেষ্টা করছেন। এই ব্লগের প্রধান উদ্দেশ্য তাই পাঠকের সাথে সৌরজগতের অন্যান্য সমুদ্রবেষ্টিত গ্রহ ও উপগ্রহের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া। “গোলডিলক জোন” এর সংজ্ঞা বলে – তরল পানি ধারণ করে রাখার জন্য কোনো গ্রহ বা উপগ্রহকে তার সূর্য থেকে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বের কক্ষপথে থাকতে হয়। সূর্যের বেশি কাছে বা দূরে – দুটিই বিপজ্জনক। কতগুলো গ্রহ বা উপগ্রহ এই শর্ত সাপেক্ষে সমুদ্রকে ধারণ করতে পেরেছে? চলুন জেনে নেই …
গ্রহ ও উপগ্রহ
আমাদের সবচেয়ে কাছের মহাজাগতিক প্রতিবেশী হলো মঙ্গল গ্রহ। ২০১২ সালে মঙ্গলের বুক বেয়ে চলা নাসার কিউরিসিটি রোভারের পাঠানো ছবি থেকে আমরা জানতে পারি সম্ভবত কোনো এক সময় মঙ্গলে পানি ছিল। গিরিখাত বেয়ে টলটল স্বচ্ছ পানির স্নিগ্ধ স্রোত বয়ে যাওয়ার চিহ্ন আজও সমগ্র মঙ্গলে। প্রায় ৩.২ থেকে ১.২ বিলিয়ন বছর আগে মঙ্গল ছিল উষ্ণ। ছিল বায়ু প্রবাহ। ছিল সুন্দর চারটি ঋতু। কিন্তু আজ তাহলে কেন এতো শুষ্ক এই গ্রহ? প্রাণের স্পন্দনের মৃতপ্রায় চিহ্নটি পর্যন্ত নেই। যেখানে চোখ যায় শুধু লালচে ধূসর। ধুলো। মৃত। অকল্পনীয় নীরব।
মঙ্গল যে একেবারেই পানি শূন্য তা নয়। এর দুই মেরুতে এখনো বিপুল পরিমাণ বরফ জমে আছে – ঠিক পৃথিবীর দুই মেরুর মতো [8]। মেরুর জমাট বাঁধা পানি নিচে এসে যেখানে শেষ হয়, সেখানে তরল পানি থাকার সম্ভাবনা প্রবল। ২০১১ সালে নাসা মার্স রিকনাসান্স অরবিটার (Mars Reconnaissance Orbiter) থেকে সংগৃহীত কিছু ছবি প্রকাশ করে। সেখানে সম্প্রতি বয়ে যাওয়া পানির ধারার সন্ধান পাওয়া যায়। সামনের কিছু বছরের মধ্যে হয়ত আমরা আরও ভালোভাবে জানতে পারবো মঙ্গলের পানি (কিংবা জীবনের) রহস্যের ব্যাপারে।
জুনো মিশন (Juno Mission) এ পাঠানো নাসার স্যাটেলাইট আমাদেরকে জানায় যে বৃহস্পতি গ্রহের নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের বায়ুমণ্ডলে প্রায় ০.২৫% পর্যন্ত জলীয় বাষ্প থাকতে পারে। সম্প্রতি প্রকাশিত হওয়া কিছু গবেষণাপত্র এই গ্রহের গ্রেট রেড স্পটে পানির সন্ধান পেয়েছে বলে মত প্রকাশ করে। ১৯৯৭ সালে প্রথমবারের মতো শনি গ্রহের অভ্যন্তরে পানির সন্ধান মিলেছিল। পরবর্তীতে এর বায়ুমণ্ডলে, বলয়ে, এবং চাঁদেও বিপুল পরিমাণ পরিষ্কার পানির অস্তিত্ব সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা অবগত হয়েছেন।
ইউরেনাস এবং নেপচুন – দুটিই সুবিশাল দৈত্যাকার হিমায়িত গ্রহ। ইউরেনাসের পানির (বরফ) পরিমাণ এতোটাই বেশি যে ধারণা করা হয় এর অভ্যন্তরে প্রায় আট হাজার কিলোমিটার গভীর সমুদ্র আছে! তুলনা সাপেক্ষে বলা যায় যে পৃথিবীর সমুদ্রের গড় গভীরতা মাত্র সাড়ে তিন কিলোমিটার! নেপচুনের সমুদ্র শুধু হিমায়িত বরফই না, একই সাথে মিথেন এবং অ্যামোনিয়ারও মহা ভাণ্ডার [9]। এই গ্রহের সমুদ্রের ঘনত্বও তাই সৌরজগতের অন্যান্য যেকোনো গ্রহ বা উপগ্রহের চেয়ে বেশি।
শনি, ইউরেনাস, এবং নেপচুন এর বলয় বিবেচনা না করলে সৌরজগতে প্রায় ৭৬১ টি উপগ্রহের (যেমন পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদ) সন্ধান পাওয়া যায়। এদের মাঝে ঠিক কতগুলো উপগ্রহ ঠিক কী পরিমাণ পানি ধারণ করে তা আজও আমরা খুঁজে চলেছি। তবে বৃহস্পতির উপগ্রহ ইউরোপা এবং শনির টাইটানকে নিয়ে এই বই এ আলোচনা না করলেই নয়। জ্যোতির্বিদ গ্যালিলিও সর্বপ্রথম ১৬১০ সালে ইউরোপাকে আবিষ্কার করেন। বৃহস্পতির চারটি বড় উপগ্রহের মধ্যে ইউরোপা বেশ কয়েকটি দিক থেকে অনন্য। এই উপগ্রহে হিমায়িত পৃষ্ঠের নিচে প্রায় চল্লিশ থেকে একশ মাইল গভীর “তরল পানির” সমুদ্র আছে বলে নাসার বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন।
খুবই সম্প্রতি (১০ অক্টোবর ২০২৪) নাসার ইউরোপা ক্লিপার এই উপগ্রহের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। এই মিশনের বাজেট ছিল প্রায় দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০৩০ এর এপ্রিলে এই স্যাটেলাইটটি ইউরোপার খুব কাছাকাছি পৌঁছাবে। আমরা তখন উপগ্রহটির তরল সমুদ্র সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে পারবো। মজার ব্যাপার হলো, যখন এই স্যাটেলাইটটি যাত্রা শুরু করে, তখন আমি সহ মোট বাইশজন গবেষক নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরিতে একটি সমুদ্র এবং আবহাওয়া বিষয়ক সফটওয়্যার Estimating the Circulation and Climate of the Ocean (ECCO) নির্মাণে সহকারী বিজ্ঞানী হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলাম। নাসার বিখ্যাত গবেষক ডক্টর ইয়ান ফেনটি এর সাথে আমাদের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণটি সরাসরি দেখার সৌভাগ্য হয়।
সবশেষে, শনির উপগ্রহ টাইটানকে নিয়ে বিজ্ঞানীমহলে কৌতূহলের শেষ নেই। এর একটি বড় কারণ, টাইটান সমুদ্র সম্পর্কে আমাদের মূল ধারণাকেই চ্যালেঞ্জ করে! বিশাল জলাধারকে কি শুধুই “জল” ধারণ করতে হবে? টাইটানের সমুদ্রে বিপুল পরিমাণ হাইড্রোকার্বন (যেমন মিথেন, ইথেন) এবং জৈবযৌগের (যেমন, অ্যামোনিয়া, লবণ) এর অস্তিত্ব মিলেছে। শুধু তাই না – দ্বীপ, উপসাগর এবং উপদ্বীপ এর বহর সমগ্র উপগ্রহের পৃষ্ট জুড়ে [10]। শুধু তাই না, টাইটানে প্রদক্ষিণ করা ক্যাসিনি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আমরা এই উপগ্রহের সমুদ্রে জোয়ার ভাটার সন্ধানও পেয়েছি। টাইটানের সমুদ্র অগভীর। যার ফলে সূর্যের আলো বেশ খানিকটা ভিতরে প্রবেশ করতে পারে। এই ঘটনাকে এখন পর্যন্ত জীবনের আদর্শ পরিবেশ হিসেবেই আমরা জেনে এসেছি। সময় এবং আধুনিক প্রযুক্তির জন্য এখন আমাদের অপেক্ষা – বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত টাইটান অসাধারণ এক সামুদ্রিক রসায়নের রাজ্য।
মহাবিশ্বে পানির উপস্থিতি অনন্য-অসাধারণ কোনোকিছু নয়। জীবনকে আমরা যেমনটা জানি – জীবনের মৌলিক ভিত্তি হলো পানি। সাথে একটু জৈব পুষ্টি এবং বহিরাগত শক্তির মিশেলে “রহস্যজনক” ভাবে সৃষ্টি হয় জীবন। মহাবিশ্বে পানির প্রাচুর্য স্বভাবতই জীবনের প্রাচুর্যের দিকে ইঙ্গিত করে। কিন্তু আমরা আজও জানি না আমরা কি এই মহাবিশ্বে একা? প্রখ্যাত ব্রিটিশ বৈজ্ঞানিক লেখক আর্থার চার্লস ক্লার্ক বলেছেন, “দুইটি সম্ভাবনার সামনে আমরা দাঁড়িয়ে– এই মহাবিশ্বে হয়ত আমরা সম্পূর্ণ একা, হয়তো বা না। দুইটিই সমানভাবে ভীতিকর।”
তথ্যসূত্র-
- [1] DISCOVERY OF WATER VAPOR IN THE HIGH-REDSHIFT QUASAR APM 08279+5255 AT z = 3.91 – IOPscience”
- [2] Neil deGrasse Tyson: The 3 Fears That Drive Us to Accomplish Extraordinary Things | Big Think
- [3] China Is Spending More Than $20 Million to Remove a Colossal 190-Foot God of War Statue – Business Insider
- [4] A Reminder of How Far Transatlantic Travel Has Come – Human Progress
- [5] Over the Edge of the World: Magellan’s Terrifying Circumnavigation of the Globe: Bergreen, Laurence: 9780060936389
- [6] A Post‐Launch Summary of the Science of NASA’s Psyche Mission
- [7] Tiny Worlds of Untapped Potential | Opinion | The Harvard Crimson
- [8] Water at the Poles and in Permafrost Regions of Mars | Elements | GeoScienceWorld
- [9]The interior of Neptune. – ADS
- [10] Can Cassini detect a subsurface ocean in Titan from gravity measurements? – ScienceDirect
Leave a Reply