আরাফাত রহমান
হিপ্পোক্যাম্পাসের সময়-ভ্রমণ: স্মৃতি ফিরে দেখা
ঘুম, যে কাজে আমরা জীবনের এক-তৃতীয়াংশ সময় ব্যয় করি, বেঁচে থাকার জন্য তার অতীবগুরুত্ব ভূমিকা থাকতেই হবে। না হয় সে কাজ বিবর্তনের দৃষ্টিকোণ থেকে বোধগম্য না। ঘুমের অনেকগুলো জরুরী কাজের মধ্যে সম্ভবত অন্যতম প্রধান হলো স্মৃতি সংহতিসাধন (Memory consolidation)। নিউরোসায়েন্সের ভাষায় মেমরি কনসলিডেশন বলতে বোঝায় নতুন গঠিত হওয়া স্মৃতিকে দৃঢ়করণ, স্থিতিশীলতা বাড়ানো, ও স্বল্পমেয়াদী স্মৃতি…
মস্তিষ্ক যেভাবে অবস্থান নির্ণয় করে
কোন নতুন শহরে জীবনে প্রথমবার গেলে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে খাবি খেতে হয়। নতুন কোন পাড়ায় গেলে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পৌঁছাতে আমাদের বারবার গুগল ম্যাপ দেখতে হয়, বা স্থানীয় লোকজনকে জিজ্ঞেস করতে হয়, “ভাই এই জায়গাটা কোন দিকে?”। গন্তব্যস্থানে পৌঁছানোর বদলে কয়েকবার পথ হারানোর দশা! অথচ মস্তিষ্ক ঠিকই সক্রিয়ভাবে জায়গাটা চিনে…
ওয়াটসন-ক্রিক কি রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিনের উপাত্ত চুরি করেছিলেন?
১৯৪০-র দশকে মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল ডিএনএ-ই হলো জীবনের সংকেতবাহী রহস্যময় অণু। ডিএনএতেই কোন ভাবে লেখা থাকে বংশগতির নির্দেশনা। কিন্তু তখনো বিজ্ঞানীরা জানতেন না ডিএনএ-তে জীবনের রহস্য কিভাবে লেখা থাকে। হ্যাঁ, ডিএনএতে চারটি নিউক্লিওটাইড বেস রয়েছে। কিন্তু ডিএনএ-র গঠন কি রকম? আর ডিএনএ কিভাবে এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে বংশগতির তথ্য বহন করে? ১৯৪০-র দশক…
এটাই সায়েন্স-২ স্বপ্নপুরী হাইস্কুল
বিশেষ করে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা জীববিজ্ঞানকে অপছন্দ করে। কারণ হলো জীববিজ্ঞান আমাদের যেভাবে পড়ানো হয় তার কোন “আগামাথা” নেই, অনেক “মুখস্থ” করতে হয়। পদার্থবিজ্ঞান বা রসায়নে যেমন সব বিষয়বস্তু একটা আরেকটার সাথে সম্পর্কিত, জীববিজ্ঞানে সেটা না। শ্যামলের মতে, এরকম মনে হওয়ার দায়ভার অনেকটাই এসে পড়ে যেভাবে জীববিজ্ঞান পড়ানো হয় আমাদেরকে তার উপর। এজন্য সে “স্বপ্নপুরী…
তথাকথিত “জাঙ্ক-ডিএনএ” অনুকল্প কি বাতিলের পথে?
মানব জিনোম সিকোয়েন্সিং এর পর, ২০০০’র দশকে, আমাদের ডিএনএ-র অর্ধেকেরও বেশিকে ধরে নেয়া হতো অপ্রয়োজনীয়। বলা হতো এগুলো বিবর্তনের “বাতিল মাল”, নষ্ট হয়ে যাওয়া “ভাঙা-জিন”, জিনোমের কারাগারে আটকে পড়া ভাইরাসের ডিএনএ-ফসিল যেগুলোর প্রকাশ “চুপ” করে দেয়া হয়েছে। ভাবা হতো, এসব বাতিল ডিএনএ জীবের কোন প্রয়োজনে আসে না, বিবর্তনের সাথে সম্পর্কহীন। তব গত দশকে অনেকগুলো গবেষণা…
ফ্যাটের বিভ্রান্তি: তেল-চর্বির ভালো-মন্দ
এক সময় বলা হতো সকল তেল-চর্বিই খারাপ। তবে আজকাল শোনা যাচ্ছে, তেল-চর্বির মধ্যেও ভালো মন্দ আছে। এখন আমরা জানি, ট্রান্স ফ্যাট স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। বিপরীতে পলিআনস্যাচুরেটেড এবং মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরের জন্য ভালো। অন্যদিকে স্যাচুরেটেড ফ্যাট ভালোমন্দের মাঝামাঝি। বহুদিন ধরেই পুষ্টিবিদ আর চিকিৎসকরা আমাদের খাদ্যতালিকায় তেল-চর্বি বাদ দেয়ার পরামর্শ দিতেন। কিন্তু দেখা গেলো, খাবার থেকে তেল-চর্বি…
টিউটোরিয়াল: বায়োইনফরমেটিক্স প্রজেক্টে কিভাবে ভাবতে হয়
বায়োইনফরমেটিক্স নিয়ে অনেকেই আগ্রহী, অনেকেই বিভিন্ন ধরনের প্রজেক্ট করে পেপার পাবলিশ করতে চায়। বায়োইনফরমেটিক্স নিয়ে কাজ করার জন্য নানা ধরনের টিউটোরিয়ালও রয়েছে ইন্টারনেটে। অনেকক্ষেত্রেই এই টিউটোরিয়ালগুলো টেকনিক্যাল হয়ে যায়। টেকনিক শেখা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু একই সাথে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার বিভিন্ন দিক নিয়ে ভাবতে শেখা, প্রশ্ন করতে শেখা। বায়োইনফরমেটিক্সের জটিল সফটওয়্যার ও প্রোগ্রাম শিখতে গিয়ে, ডেটা বিশ্লেষণ করতে…
কোষের শক্তি কোত্থেকে আসে?
মাইটোকন্ড্রিয়া যদি এতই গুরুত্বপূর্ণ হয়, তাহলে এদের উদ্ভব মাত্র একবার হয়েছে কেন? সুকেন্দ্রীক কোষরাই বা কেন একবার মাত্র বিবর্তিত হয়েছে? নিক লেন ও বিল মার্টিন ২০১০ সালে বৈজ্ঞানিক জার্নাল ন্যাচারে প্রকাশিত নিবন্ধ “The energetics of genome complexity”-তে এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। সহজ হিসাব-নিকাশ ও চমৎকার যুক্তির মাধ্যমে তারা দেখিয়েছেন প্রাককেন্দ্রিক কোষরা সরলই রয়ে গেছে কারণ…
প্রাককেন্দ্রিক জিনেরা সুকেন্দ্রিক জিনোমে কিভাবে কর্মবিভাজন করলো?
[একমেবাদ্বিতীয়ম্ সংযোজন – ৩য়+৪র্থ কিস্তি] বিভিন্ন জীবের জিন সিকোয়েন্স করে (ডি.এন.এ. নিউক্লিওসাইড ক্ষার অণু দিয়ে পর পর কি লেখা আছে তার পাঠোদ্ধার করে) তাদের পারস্পারিক তুলনা করার ভাবনা ১৯৭৭ সালে অণুজীববিজ্ঞানী কার্ল উজের মাথায় আসে। এখন আধুনিক জীববিজ্ঞানে এটা নিত্যদিনের কাজ, তবে সেই সময় বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন প্রজাতির মাঝে বিবর্তনীয় সম্পর্ক আন্দাজ করার জন্য বাহ্যিক-দৈহিক বৈশিষ্ট্যের…