মো. মিজানুর রহমান Avatar

মো. মিজানুর রহমান

  • ডিপফেক: এক অধুনা প্রযুক্তির বীভৎস হাতছানি

    সময়টা ডিসেম্বর মাস। চারিদিকে শীতের আমেজ। কনকনে ঠাণ্ডা। অদূরে জানালার ওপাশে বইছে হিমশীতল হাড়কাঁপানো বাতাস। ফুলপুর নামক ছোট্ট এক গ্রামে সাত-সকালে কম্বলের নীচ থেকেই ফেসবুকে ঢুঁ মারেন রূপা। নীল-সাদার স্বপ্নময় জগৎটায় প্রবেশ করতেই গা শিউরে ওঠে তাঁর। যা দেখছে তা কি সত্যি? নাকি বেঘোর ঘুমে দুঃস্বপ্ন দেখছে সে? এক ঝটকায় শোয়া থেকে উঠে বসে রূপা। শরীরে চিমটি কাটে…

  • কুরু রোগ: নরমাংসখেকো ফোর জনগোষ্ঠীর অজানা রোগের বৃত্তান্ত!

    প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণে উদ্দাম সাগরের বুকে ভেসে আছে ছোট্ট এক দ্বীপ– পাপুয়া নিউগিনি। স্বচ্ছ নীল জলরাশি, ছোট ছোট পাহাড়, স্নিগ্ধ সবুজ অরণ্য– এ সবকিছুর সংমিশ্রণে যেন এক প্রশান্তিময় জনপদ। ৪,৬২,৮৪০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ দেশে অনেকগুলো গোত্রের একত্রে বসবাস। তাদের মধ্যে অন্যতম ফোর জনগোষ্ঠী। দ্বীপটির দক্ষিণাঞ্চলে পাহাড়ের পাদদেশ ঘেঁষে ফোররা গড়ে তুলেছিল নিজেদের আবাসস্থল। সেখানকার উর্বর…

  • কমোডো ড্রাগন: উপকথার ড্রাগনদের পৃথিবীতে বিচরণ!

    ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব দিকের এক নির্জন দ্বীপ। জনমানবহীন, রুক্ষ, ঊষর। বিগত শতকের শুরুর দিকের ঘটনা। আগ্নেয়গিরির তরল লাভা বিষাক্ত করে তুলেছে আশেপাশের পাহাড়গুলোকে। স্থানীয় বাসিন্দারা ভুল করেও সে দিকে পা মাড়ান না। লাভার ভয়ে নয়, বরং কুৎসিত দর্শন এক জন্তুর ভয়! দ্বীপটিতে তাদের সংঘবদ্ধ বসবাস। তাদের দুয়েকটির সামনে পড়লেও রক্ষে নেই! আজ আকাশ পরিষ্কার। বর্ষার এই…

  • এআই রোবট: মহাকাশ অভিযানে মানুষের বিকল্প?

    মানবজাতি এক দুঃসাহসিক প্রাণী। পৃথিবীপৃষ্ঠে নিজেদের সফল আবির্ভাবের শুরু থেকে আজ অবধি অজানাকে জানার চেষ্টা করে যাচ্ছে তারা। প্রাগৈতিহাসিক কালে কখনো উদ্দাম সমুদ্র পেরিয়ে, কখনো নির্জন পাহাড় ডিঙিয়ে, কখনো আবার জলের অতলে হিংস্র প্রাণীদের মাঝে ডুব দিয়ে, আর এখন মহাশূন্যের পানে হাত বাড়িয়ে– দুরন্তপনায় কখনোই পিছিয়ে ছিলো না মানুষ। ১৯৬৯ সালে চন্দ্রপৃষ্ঠে মানুষের সফল অবতরণের পর…

  • ভেন্টিলেটর: কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের উদ্ভাবনের গপ্পো!

    ১৯৫২ সাল। শান্ত-স্নিগ্ধ শহর কোপেনহেগেন। ডেনমার্ক। মাত্র বছর সাতেক পূর্বেই জার্মান সৈন্যবাহিনীর জাহান্নাম থেকে মুক্তি মিলেছিল শহরটার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বীভৎস থাবার ক্ষত থেকে ধীরে ধীরে সেরে উঠছিল সবকিছু। বেরিয়ে আসছিল ভয়ংকর সব তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে। নতুন করে নিজেদের গুছিয়ে নিতে তাই আপন মনে ব্যতিব্যস্ত সবাই। এরইমাঝেই একদিন, শহরটিতে হুড়মুড়িয়ে হামলে পড়লো এক ভয়ংকর ছোঁয়াচে রোগ- বালবার পোলিও…

  • নীল তিমি: অতিকায় স্থলজ প্রাণীটির জলজ অভিযাত্রা!

    ১৯৭৮ সাল। পাকিস্তানের সুলেমান মাউন্টেন। শুভ্র শীতের স্নিগ্ধ এক সকালে একদল তরুণ জীবাশ্ম বিজ্ঞানী এগিয়ে চলেছেন পর্বতটির পানে। হৃদয়ে অদম্য বিশ্বাস ও অজানাকে জানার সীমাহীন আগ্রহ নিয়ে তাদের এই দলবদ্ধ পদযাত্রা। জানা যায়, প্রাগৈতিহাসিক পৃথিবীতে সমুদ্রগর্ভে নিমজ্জিত ছিল পাকিস্তানের এই আদিম পর্বতটি। আর তাই অতীতের নানান ফসিলের জরাজীর্ণ চিহ্ন ও দুর্লভ নিদর্শন থাকার বিপুল সম্ভাবনা…

  • ডাক্তার লেনেক ও স্টেথোস্কোপ আবিষ্কারের মজার কাহিনি!

    ১৮১৬ সাল। ন্যাকার হাসপাতাল। প্যারিস, ফ্রান্স। জনসাধারণের আনাগোনায় লোকে-লোকারণ্য হাসপাতালের সবুজ আঙিনা। কেউ কেউ হাসিমুখে বিদেয় হচ্ছেন, কেউ-বা আতঙ্কিত নয়নে, ভয়ার্ত মনে, ধীর পায়ে প্রবেশ করছেন। ডাক্তার লেনেক ন্যাকার হাসপাতালের একজন বিশেষজ্ঞ সার্জন। নিজের রুমে বসে ঝাঁঝালো রোদ্দুরে বাইরের পানে আপন মনে তাকিয়ে আছেন তিনি। অপেক্ষা করছেন রোগীর আগমনের। শুভ্র পা-যুগল এলিয়ে দিয়ে এক নির্মল…

  • মহর্ষি সুশ্রুত: প্লাস্টিক সার্জারির জগতে জাজ্বল্যমান জ্যোতিষ্ক!

    প্রায় ২৬০০ বছর আগের কথা। বর্তমান ভারতের বেনারসের নিকটবর্তী কোনো এক অচেনা জনপদ। কাছেপিঠেই ছোট্ট এক আলো ঝলমলে কুঁড়েঘরে বাস করতেন মহর্ষি সুশ্রুত, তখনকার দিনে সে অঞ্চলের পরিচিত মুখ– জ্ঞানী, গুণী ও মহানুভব এক শল্য চিকিৎসক। সময়ে-অসময়ে তার কাছেই যেকোনো রোগ-ব্যধি-পথ্যের প্রয়োজনে ছুটে আসতেন স্থানীয় মানুষজন। হাত বাড়াতেই পেয়ে যেতেন প্রয়োজনীয় ওষুধ-চিকিৎসা। তেমনি এক ঝড়বাদলের…

  • এঞ্জেল হেয়ার: ফ্লোরেন্সের আকাশে রহস্যজনক ইউএফও!

    ২৭ অক্টোবর, ১৯৫৪ সাল। স্টেডিও আর্টেমিও ফ্রাঞ্চি স্টেডিয়াম। ফ্লোরেন্স, ইতালি। হ্যালোউইন উৎসবের তখনও দিন চারেক বাকি। এরইমধ্যে চমৎকার এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে তৎকালীন দুই পরিচিত ক্লাব–ফিওরেন্টিনা ও পিস্তোইয়েস। উৎসব আর উৎকণ্ঠার আমেজমাখা মুহূর্তে উত্তেজনা বিরাজ করছিল চরম আকারে। জনা হাজার দশেক দর্শকের চিৎকার আর চেঁচামেচিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচটি যেন আরো জমজমাট হয়ে উঠেছিল। গুটি গুটি…