জীববিজ্ঞান
চোখের সামনে কি ঘটে না বিবর্তন? (পর্ব-২)
বিবর্তনের ব্যাপারে খুব প্রচলিত একটা দাবি হচ্ছে, বিবর্তনকে দেখানো যায় না। প্রজাতির বিবর্তন মূলত জানতে হয় পরোক্ষ প্রমাণের ভিত্তিতে। এ নিয়ে প্রথম পর্বে বিস্তারিত বলেছি। প্রজাতির বিবর্তন ঘটে খুব দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে। তবুও, আমাদের নাকের ডগায়-ই এমন সব বিবর্তন ঘটে গেছে বা যাচ্ছে, যেগুলি প্রকৃতির এই অনিবার্য বাস্তবতাকে আমাদের সামনে আরও পরিস্কার করে দেয়। যেমন…
খোঁজ মিলেছে মানুষের নতুন প্রজাতির!
বর্তমানে পৃথিবীর সব মানুষ একই প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশের এক কোণায় থাকা একজন মানুষ কিংবা আমেরিকার একজন বিলিয়নিয়ার, দুজনেই একই প্রজাতি তথা হোমো সেপিয়েন্স প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত। আর গত প্রায় তিন লক্ষ বছর ধরে পৃথিবী নামক গ্রহটিকে শাসন করছে মানুষের এই প্রজাতি। তবে কয়েক লক্ষ বছর আগে পৃথিবীতে শুধু হোমো সেপিয়েন্সই ছিলো না। বরং মানুষের অনেকগুলো প্রজাতি…
চোখের সামনে কি ঘটে না বিবর্তন? (পর্ব-১)
আমাদের চোখের সামনেই ঘটে চলা নানান বিবর্তনীয় ঘটনা নিয়ে আজকের আসরে বসার পূর্বে কিছু ব্যাপার পরিষ্কার করে রাখা উচিত বলে মনে করি। আমাদের এই প্রকৃতির কিছু বস্তুতা আছে, যা আমরা সরাসরি উপস্থিত হয়ে চাক্ষুষ অবলোকন করতে পারি না বা সম্ভবও না। যেমন পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহগুলির যেমন সূর্যেকে কেন্দ্র করে সৌরজগতে ঘূর্ণায়মান রয়েছে; যা সরাসরি উপস্থিতি…
কতটুকু সফল হয়েছিলো মানব জিনোম প্রকল্প?
১৯৫৩ সালে ডিএনএর দ্বিসূত্রক গঠন আবিষ্কারের পঞ্চাশ বছর পর জীবনবিজ্ঞানে আলোড়ন তোলে এক বিশিষ্ট ঘটনা। সেসময় সমাপ্ত হয় মানব জিনোম প্রকল্প (Human Genome Project)। এর লক্ষ্য ছিলো, যে তিন বিলিয়ন বেস পেয়ার দিয়ে মানুষের জিনোম গঠিত, ইতিহাসে প্রথমবারের মতো, তাকে আগামাথা ‘পড়ে’ ফেলা। আমরা জানি A,T,C,G এই চারটি ‘অক্ষর’ দিয়ে জীবনের তথ্য ডিএনএ’তে তথা জিনোমে…
রাতে জাগা খারাপ নাকি?
ইউটিউবে “মর্নিং রুটিন” ঘরানার ভিডিওগুলো অনেক জনপ্রিয় যেখানে ক্রিয়েটররা দেখান যে সকালে উঠে তারা ব্যায়াম করেন, ধ্যান করেন, নাস্তা করে পড়তে বসেন, কাজে যান – অর্থাৎ তারা সকালটা কতো প্রোডাক্টিভভাবে কাটান – এ কারণেই তারা জীবনে (ইউটিউবে) এতো সফল। আমাদের সমাজে কম ঘুমিয়ে বেশি পরিশ্রম করাকে প্রশংসা করা হয়, হাসল কালচার (hussle culture) এর অংশ…
অপবিজ্ঞানের ব্যবচ্ছেদ-নব্যপৃথিবী সৃষ্টিতত্ত্ববাদীদের যত কাণ্ড! (পর্ব-২)
বিবর্তন তত্ত্বকে মিথ্যা প্রমাণ করতে অনেকেরই তো অনেক প্রয়াস দেখলেন, আজকে আমরা জানব ‘ইয়ং আর্থ ক্রিয়েশানিজম’ নামে এক অদ্ভুত প্রস্তাবনা নিয়ে। বাংলায় বলা যায়, ‘নব্য পৃথিবী সৃষ্টিতত্ত্ববাদ’। পুরো লেখায় ইয়ং আর্থ ক্রিয়েশানিজম-ই ব্যবহৃত হবে। আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের আশীর্বাদে আমরা জানতে পেরেছি যে আমাদের মহাবিশ্ব প্রায় ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে মহা বিস্ফোরণের ফলে আবির্ভূত হয়েছে। আর এই…
ডাইনোকথন
এখন থেকে প্রায় ৫০ বছর পরের কথা। বাংলাদেশী কিছু বিজ্ঞানীর নেতৃত্বে পৃথিবীর প্রথম টাইম মেশিন আবিষ্কার হয়েছে। কিছু পশু পাখির ওপর পরীক্ষা করে সফল হয়েছে এই প্রজেক্ট। তাই এখন তারা ‘হিউম্যান ট্রায়াল’ এর চেষ্টা চালাচ্ছেন। বিশাল অঙ্কের পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে হিউম্যান সাবজেক্ট এর জন্য। অফারটি লোভনীয়! তাই আপনি আবেদন করে ফেললেন। এর কিছুদিন পর…
স্টেম সেলঃ দেহের ম্যাজিক কোষ
আমি নবম শ্রেণিতে পড়াকালীন আমাদের জীববিজ্ঞানের শিক্ষক অলিপ স্যারের মুখ থেকে প্রথম ‘স্টেম সেল’ নামটা শুনি। তখন একে সাদাসিধে কোষই মনে করেছিলাম। পরে বুঝতে পারি যে এটা মোটেও অতটা সহজ-সরল নয়ঃ আর এই প্যাঁচাইলে মার্কা কোষের উপর ভিত্তি করেই আমরা সবাই দাঁড়িয়ে আছি। স্টেম সেল নিয়ে ইতিমধ্যে বহু গবেষণাপত্র আর বই লেখা হয়ে গিয়েছে। সামনের…
ডোলোর সূত্র: হারানো বৈশিষ্ট্য কি বিবর্তনে ফেরত আসে?
ডোলোর সূত্র বিবর্তন তত্ত্বের জৈবিক নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই নীতিটি ১৯৮০ সালে বেলজিয়ান জীববিজ্ঞানী লুই ডোলো কর্তৃক প্রস্তাবিত হয়েছিল। এর মূল বক্তব্য হলো, একবার কোনো জৈবিক প্রক্রিয়া বা বৈশিষ্ট্য বিবর্তনের মাধ্যমে হারিয়ে গেলে সেটি পুনরুদ্ধার বা পুনর্বিবর্তন সম্ভব হয় না। সহজভাবে বলতে গেলে, যখন কোনো জৈবিক বৈশিষ্ট্য একবার হারিয়ে যায়, তখন সেই একই বৈশিষ্ট্যের…