কার্যকরী ঔষধ এবং টিকা আবিষ্কার না হওয়ার কারণে পশ্চিম আফ্রিকায় ইবোলা আক্রান্তের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা মাত্র প্রায় ৩০ শতাংশের মত। সেই সঙ্গে মিডিয়ার কারণে এবং কিছু পশ্চিমা মানুষেরা আক্রান্ত হওয়ার ফলে ইবোলা ভীতি প্রায় সংক্রামক আকার ধারণ করেছে। আসলে রোগটির চেয়ে রোগটির ভীতি বেশি সংক্রামক। কিছু তুলনামূলক পরিসংখ্যান দেখি।
Centers for Disease Control and Prevention (CDC) এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী যদি তুলনা করি তবে ইবোলে মোটেই খুব সংক্রামক নয়। বরং মিসেলস বা হাম এবং মাম্পস রোগ ইবোলার চেয়ে বেশি সংক্রামক। উপরের ছবিটা দেখুন।
এখানে R0 বা ‘R nought’ দিয়ে বোঝানো হচ্ছে প্রতি একজন রোগাক্রান্ত মানুষ থেকে কয়জন সুস্থ মানুষ ঐরোগে আক্রান্ত হতে পারে। বা সংক্রমণের হার কেমন। দেখা যাচ্ছে ইবোলার ক্ষেত্রে R0 এর মান প্রায় ১.৫ থেকে ২.০। এই মান প্রায় হেপাটাইটিস সি এর সমান, কিন্তু এইচআইভি বা সার্স এর চেয়ে কম।
কেন মানটা এত কম ইবোলার ক্ষেত্রে?
কয়েকটা ফ্যাক্টর কাজ করে। যেমন, একজন মানুষ কতদিন ধরে আক্রান্ত, তার দেহে ভাইরাস পার্টিকেলে সংখ্যা কত, যে আক্রান্ত হচ্ছেন তার দেহে কতটা পার্টিকেল গেল- এই সবকিছু প্রভাবিত করে R0 এর মান কে। মারাত্মক ক্ষতিকর হলেও R0 মান অনুযায়ী ইবোলা, এইডস বা সার্স রোগ মাম্পস বা হাম এর চেয়ে কম সংক্রামক। যেসব কারণ ইবোলা বা এইডস রোগকে মানুষের জন্য চরম ক্ষতিকর করেছে সেটা হল ঔষধ বা টিকার অভাব।
ইবোলার R0 মান ২ মানে যে এটা খুবই নিরাপদ তাও কিন্তু নয়। একজন থেকে দুইজন, সেখান থেকে ৪, ৮, ১৬.. এভাবে দ্রুত ছড়াতে পারে। কিন্তু স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভাল এমন দেশে এইধরনের সংক্রমণ হার রোগ ছড়াতে খুব ফলপ্রসু হবেনা আশা করা যায়। ঝামেলা হল আমাদের দেশের মত জায়গায় ইবোলার সংক্রমণ শুরু হলে। তবে, বোলার বিরুদ্ধে টিকার আবিষ্কার প্রাথমিকভাবে প্রায় সফল হয়েছে। যেমন, ধারণা করা হচ্ছে কানাডা ২০১৫ সালের মধ্যে ইবোলার টিকা রপ্তানি করতে পারবে আফ্রিকায়। আপাতত সংক্রমণ প্রতিরোধটাই জরুরী।
মূল সূত্র:
http://www.npr.org/blogs/health/2014/10/02/352983774/no-seriously-how-contagious-is-ebola
Leave a Reply