আমাদের শরীরের সমস্ত রোগ প্রতিরোধকারী ব্যবস্থাগুলির ভিতর সবচেয়ে কায্যকরি হল এন্টিবডি। ছোট করে বলা যায়, এটি এক ধরনের প্রোটিন। যখন কোন ভাইরাস অথবা ব্যক্টেরিয়া শরীরে প্রবেশ করে তখন এদের বিরুদ্ধে তৈরি হয় এই এন্টিবডি । এটা শুধু ওই নির্দিষ্ট আক্রমণকারী জীবাণুর বিরুদ্ধেই কাজ করে। অর্থাৎ একটি জীবাণুর বিরুদ্ধে তৈরি এন্টিবডি অন্য জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করে না। আবার এন্টিবডি নিজে সরাসরি কোন জীবাণুকে মেরে ফেলে না। বরং এটা প্রথমে জীবাণুকে চিনহিত করে এর সাথে যুক্ত হয়। তারপর শরীরের অন্যন্য রোগ প্রতিরোধকারী ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে তুলে চিনহিত করা জীবাণুকে ধ্বংস করে ফেলার জন্য। মোটকথা, এন্টিবডি আমাদের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে সহায়তা করে। একবার ওই আক্রমণকারী ব্যাক্টেরিয়া বা ভাইরাসকে ধ্বংস করার পর এর উৎপাদন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। তবে এই পর্যায়ে এসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা ঘটনা ঘটে। যা অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার চেয়ে একেবারেই আলাদা। তা হল, একবার যে জীবাণুর বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরি হয় তার কিছু রেপ্লিকা নিস্ক্রিয় অবস্থায় আমাদের শরীরে তৈরি করে রেখে দেয়। যাকে বলা হয় মেমোরি বি সেল।
অনেকটা, পুলিশ যেমন প্রথমবার কোন অপরাধীকে ধরার পর ছবি তুলে রাখে। যেন ভবিষ্যতে একই রকম অপরাধ করলে সহজেই চিনহিত করে ব্যবস্থা নেয়া যায়। ঠিক একই রকম ভাবে তৈরিকৃত মেমোরি বি সেল আমাদের শরীরে কয়েক দশক পযন্ত থেকে যায়। জীবনের কোন একটি পর্যায়ে আবার যখন একই জীবাণুর আক্রমণের শিকার হয় তখন মেমোরি বি সেল আবার সক্রিয় হয়ে যায়। ফলে দ্রুততম সময়ের ভিতর এন্টিবডি তৈরি করে ফেলে। ফলশ্রুতিতে আমরা খুব সহজেই রোগাক্রান্ত সম্ভাবনা থেকে রক্ষা পাই।
এখন আমাদের বেশিরভাগ মানুষের মনে প্রথমে যে চিন্তা আসবে তা হল জীবাণু দিয়ে আক্রান্ত হবার আগেই শরীরে গুরুত্বপূর্ণ রোগের বিরুদ্ধে অগ্রিম মেমোরি বি সেল তৈরি করে রাখা যায় কিনা। যদি এটা করা যায়, তাহলে আমরা অনেক প্রাণঘাতী রোগের হাত থেকে মুক্তি পেতে পারি। প্রকৃতপক্ষে, এই অগ্রিম মেমোরি বি সেল তৈরি করে রাখার পরিকল্পনা থেকেই এসেছে ভ্যাকসিন।
শুরুর দিকের কথা:
শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও আমাদের মানব সভ্যতায় ভ্যাকসিনের ইতিহাস অনেক পুরোনো। যার শুরুটা হয়েছিল ভাইরাস জনিত রোগ স্মলপক্স বা গুটি বসন্তের জন্য। যদিও এটা নিয়ে তাদের ধারনা খুব পরিস্কার ছিল না। তবে একটা বিষয়ে তারা নিশ্চিত ছিল। এই গুটি বসন্ত থেকে একবার আরোগ্য লাভ করতে পারলে বাকি জীবন এ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। এই ভাবনা থেকে তখন সুস্থ ব্যাক্তিকে ইচ্ছাকৃতভাবে বসন্তের জীবাণু দিয়ে আক্রান্ত করা হত। যাকে বলা হত ভেরিওলেশন। একে অনেকটা আধুনিক কালের লাইভ ভ্যাকসিন বা জীবন্ত ভ্যাকসিনের সাথে তুলনা করা যায়। এই ভেরিওলেশন শব্দটি এসেছে ভেরিওলা থেকে। বাংলায় যার মানে হল গুটি বসন্ত। ভেরিওলেশনের ফলে শরীরে রোগের সব লক্ষণ দেখা দিত। এটাকে পুরোপুরি নিরাপদ বলার উপায় ছিলো না। কারণ ভেরিওলেশন করতে গিয়ে শতকারা ০.৫ থেকে ২ ভাগ মানুষ মারা যেত। তবে একবার সুস্থ হতে পারলে বাকি জীবন গুটি বসন্ত থেকে এটা তাদের সুরক্ষা দিত। কিন্তু যেখানে প্রকৃত গুটি বসন্তে আক্রান্ত হলে শতকরা ২০-৩০ জন মানুষই মারা যেত, সে দিক থেকে বিবেচনা করলে এটাই ছিল বাঁচার একমাত্র উপায়।
যদি জিজ্ঞাসা করা হয় কবে থেকে এই ভেরিওলেশন শুরু হয়েছে? উত্তরটা হবে বেশ চমক জাগানিয়া। কারণ এর উৎপত্তি প্রায় হাজার বছর আগে। মানব সভ্যতার ইতিহাসে হাজার বছর ধরে গুটি বসন্ত রোগটি ছিল সাক্ষাৎ এক আতংক। এর হাত থেকে বাচার জন্য দশম শতাব্দীর শেষভাগে চীনে এর প্রচলন শুরু হয়। এ প্রক্রিয়ায় প্রথমে রোগাক্রান্ত ব্যাক্তির শরীর থেকে বসন্তের ফোস্কা সংগ্রহ করে তা পাউডার করা হত। তারপর সুস্থ ব্যক্তির নাক দিয়ে নিঃশ্বাসের সাথে ছড়িয়ে দিত। পরবর্তীতে মিং ডাইনেস্টির শাসন আমলের শেষভাগ সতের শতকে এসে এটার ব্যাপক আকারে প্রচলন শুরু হয়। সেসময়ে চীনের পাশাপাশি ভারতীয় উপমহাদেশ, মধ্যপ্রাচ্য সহ আফ্রিকাতেও ভেরিওলেশন প্রচলিত ছিল। তবে এসব স্থানে ইনোকুলেশন একটু ভিন্ন ভাবে করা হত। তারা আক্রান্ত ব্যাক্তি কাছ থেকে পুঁজ বা আক্রান্ত অংশ সংগ্রহ করে তা সুস্থ ব্যক্তির হাতের ত্বক কেটে লাগিয়ে দিত। এই দিক থেকে চিন্তা করলে তাদের ভেরিওলেশন করার পদ্ধতিকে আজকের আধুনিক ভ্যাকসিনের আদিরূপও বলা যায়।
সময়ের সাথে সাথে এই ভেরিওলেশন যেমন জনপ্রিয় হচ্ছিল একই সাথে বেশকিছু চমককৃত উন্নতিও সাধিত হয়েছিল তখন। যেমন, ষোল থেকে সতের শতকের দিকে এসে তখন গুটি বসন্তের অংশ সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। তখন যেসব রোগীর মৃদু লক্ষন প্রকাশ পেত শুধু তাদের কাছ থেকেই পুঁজ কিংবা ফোস্কা সংগ্রহ করা হত। এমনকি কোন সুস্থ ব্যাক্তিকে ভেরিওলেশন করার আগে এই সংগৃহীত অংশকে হালকা শুকিয়ে নেয়া হত। এই প্রক্রিয়ায় দেখা যায় ভেরিওলেশন করার পর দেহে রোগের লক্ষন আগের চেয়ে কম মারাত্নক আকার ধারন করে। এই ভাবনা অনেকটা আজকের দিনের প্রচলিত এটিনুয়েটেড বা জীবাণুকে দুর্বল করে বানানো ভ্যাকসি্নের মত।
ভেরিওলেশন আঠারো শতকের শুরুর দিকে ওসমানিয়া সম্রাজ্যর রাজধানী কন্ট্যান্টিনোপল বা হালের ইস্তানবুল থেকে ইউরোপে বিস্তার লাভ করে। এই চিকিৎসা পদ্ধতি ইউরোপে বিস্তারে ভুমিকা রেখেছিল ব্রিটিশ কবি লেডি ম্যারির লিখা একটি চিঠি। তিনি সে সময় তার স্বামীর সাথে কন্সটেন্টিনোপলে অবস্থান করছিলেন। এই সময়গুলোতে নিয়মিত তৎকালীন ওসমানিয়া সম্রাজ্যর জীবন যাত্রা নিয়ে তার অভিজ্ঞতা লন্ডনে লিখে পাঠাতেন। একবার তিনি ভেরিওলেশনের উন্নত প্রক্রিয়া নিজ চোখে দেখার সুযোগ পান। তখন এর বিস্তারি্ত একটি চিঠিতে লিখে ইংল্যান্ডে পাঠান। ১৭১৭ সালের এপ্রিলে লিখা এই চিঠি ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছে “এ লেটার টু এ ফ্রেন্ড” শিরোনামে।
সফলতার আরেক ধাপ সামনে এগিয়ে যাওয়া:
ভেরিওলেশনের উৎপত্তি নিয়ে হয়ত অনেক ইতিহাসবিদ অনেক জায়গার নামকেই প্রথম স্থানে রাখতে চান। তবে একটি বিষয়ে কেউ দ্বিমত পোষণ করেন না। তাহল, তখনকার দিনের চিকিৎসাবিদ্যার বিস্ময় ভেরিওলেশন আঠারো শতকে ইউরোপে এসেই পূর্ণতা পেয়েছিল। সেখানে প্রচলনের শুরু থেকেই অনেকে ক্রমাগত চেষ্টা করে যেতে থাকেন এর ইনোকুলেশন প্রক্রিয়ায় আরো উন্নতি সাধনের। যার ফলে, ১৮০০ শতকের শেষ ভাগে এসে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসে যায়। ভেরিওলার কাছাকাছি আরেকটি ভাইরাস হল কাউপক্স বা গোবসন্ত। এটি তখন ইউরোপের ডেইরী খামারে খুব পরিচিত একটি রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হলে গরুর উলানে পক্সের মত ক্ষত তৈরি হত। তখন আক্রান্ত গরু থেকে যারা দুধ দোহন এমনকি যারা ওই ফার্মে কাজ করত তাদের মাঝেও এই রোগের সংক্রমণ ছিল সাধারণ ঘটনা। তবে এটা মানুষে বড় ধরনের কোন সমস্যা তৈরি করত না। শুধু লক্ষণ হিসাবে গুটি বসন্তের মতই হাতে কিছু ক্ষত তৈরি হত। এ সময় কয়েকজন মজার একটি ব্যাপার ধরতে পারলেন। তারা দেখলেন যারা ডেইরী ফার্মে কাজ করে তাদের এই গুটি বসন্ত রোগটি হয় না। এটি নিয়ে আরো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেল, যদি কাউপক্স দিয়ে কেউ একবার আক্রান্ত হয়, তবে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে গুটি বসন্তের প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে যায়। তাদের সবাই এটা বিক্ষিপ্তভাবে লক্ষ্য করেছিলেন। এদের মধ্য বেঞ্জামিন জেস্টি এবং ডাঃ জন ফস্টারের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
বেঞ্জামিন জেস্টি ভ্যাক্সিন তৈরির ধারনা জনসম্মুখে আসার ২২ বছর আগে ১৭৭৪ সালে সর্বপ্রথম সফলতার সাথে কাউপক্স ভাইরাস দিয়ে গুটি বসন্তের বিরুদ্ধে ইমুনিটি তৈরি করেছিলেন
সে সময়ে ইংল্যান্ডের একটি ডেইরী খামারের মালিক ছিলেন বেঞ্জামিন জেস্টি। তিনি ভ্যাক্সিন তৈরির ধারনা জনসম্মুখে আসার ২২ বছর আগেই ১৭৭৪ সালে সর্বপ্রথম সফলতার সাথে কাউপক্স ভাইরাস দিয়ে গুটি বসন্তের বিরুদ্ধে ইমুনিটি তৈরি করেছিলেন। অপরদিকে ইংলিশ ডাক্তার জন ফস্টার ১৭৬৮ সালে দেখলেন দুইজন বালকের ভেরিওলেশনের পর গুটি বসন্তের যেসব লক্ষন প্রকাশ পাওয়ার কথা তা হয়নি। তিনি চিন্তিত হয়ে গেলেন। কারন ভেরিওলেশন সঠিকভাবে হয়েছে কিনা এটা বুঝার প্রধান উপায় ছিল সল্প মাত্রার গুটি বসন্তের লক্ষন প্রকাশ পাওয়া। তিনি দেখতে পেলেন এই দুই বালকের আগে কখনো গুটি বসন্ত হয়নি। তবে কাউপক্সে আক্রান্ত হবার ইতিহাস রয়েছে। এ থেকে তার মনে একটা ধারনা তৈরি হয়ে যায়, কাউপক্স দিয়ে গুটি বসন্তের বিপরীতে ইমিউনিটি তৈরি সম্ভব। তার এই ভাবনা সে সময়কার মেডিক্যাল সোসাইটির এক ডিনারে সবার সামনে তুলে ধরেন। অন্যান্য ডাক্তারদের সাথে উক্ত ডিনারে উপস্তিত ছিলেন এক তরুন ডাক্তার। যার হাত ধরেই পরবর্তীতে চিকিৎসাবিদ্যার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার ভ্যাকসিন সবার সামনে চলে আসে।
এর বেশকিছু বছর পরের কথা। ১৭৯৬ সালের বসন্ত কাল। ইংল্যান্ডে তখন চমৎকার আবহাওয়া বইছে। প্রকৃতির এই সুন্দর সময়ে জন ফস্টার তিনজন বালকের উপর প্রথম ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চালান। সে হিসাবে ভ্যাকসিনের আবিষ্কর্তা হিসাবে জন ফস্টারের নাম বড় করে লিখে থাকার কথা ছিল। কিন্তু তিনি যে পরীক্ষাগুলো করেছিলেন তা কোথাও প্রকাশ করেননি। এমনকি কোনদিন ভ্যাকসিনের আবিস্কারক হিসাবে নিজেকে দাবিও করেনি। খামখেয়ালী এই ডাক্তার বিশ্বাস করতেন ভেরিওলেশন ইতিমধ্য খুব সফলভাবে তার কাজ করে যাচ্ছে। তাই অন্য কোন চিকিৎসা পদ্ধতিকে এর স্থলাভিষিক্ত করার প্রয়োজন নেই। এটাই ছিল তার ঐতিহাসিক ভুল।
মানব ইতিহাসের প্রথম ভ্যাক্সিন:
ফস্টার যেদিন প্রথম মেডিক্যাল সোসাইটিতে কাউপক্স নিয়ে তার ভাবনা তুলে ধরেছিলেন। সেদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন তরুন ডাক্তার এডওয়ার্ড জেনার। তিনিও বুঝতে পেরেছিলেন কাউপক্স দিয়ে গুটি বসন্তের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি সম্ভব। মজার ব্যাপার হল ফস্টারের মত তিনিও ১৭৯৬ সালে এসেই কাউপক্সের ভ্যাক্সিন নিয়ে প্রথম পরীক্ষা চালান। এই দিক থেকে বিবেচনা করলে জেনারকে ভাগ্যর বরপুত্র বলাই যায়। এই পরীক্ষার জন্য তিনি বেঁছে নেন আট বছর বয়সী জেমস ফিফস নামের একটি সুস্থ সবল ছেলেকে। প্রথমে তিনি সারাহ নামের একজন গোয়ালিনীর হাত থেকে কাউপক্সের ফোস্কা সংগ্রহ করেন। তারপর জেমসের দুই হাতের ত্বক অল্প কেটে তাতে লাগিয়ে দেন এই কাউপক্সের জীবাণু। এভাবে ইনোকুলেশনের পর জেমসের শরীরে সামান্য জ্বর ছাড়া তেমন কোন রোগের লক্ষন প্রকাশ পায়নি। তার কিছুদিন পর গুটিবসন্তের ফোস্কার অংশ দিয়ে জেমসকে আবার ভেরিওলেশন করেন। সাধারণত ভেরিওলেশনের পর পক্সের সব লক্ষন পেত। কিন্তু জেমসের বেলায় দেখা যায় তার শরীরে পক্সের কোন লক্ষন প্রকাশ পায়নি। এ ঘটনা থেকে জেনার দৃঢ়ভাবে বুঝতে পারলেন ভেরিওলেশনের চেয়ে অধিক নিরাপদ পদ্ধতিতে ইমিউনিটি তৈরি সম্ভব। ফলে ভেরিওলেশন প্রক্রিয়ায় যে প্রানহানির আশংকা আছে তা এড়ানো যাবে খুব সহজেই। জেনার অন্যদের মত এ পর্যায়ে এসে থেমে যাননি। তিনি তার গবেষণা চালিয়ে যেতে থাকলেন। একই সাথে তার পরীক্ষালব্ধ ফলাফল রয়াল সোসাইটিতে প্রকাশ করতে লাগলেন ক্রমাগত। ফলে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হতে থাকে নতুন আবিষ্কৃত এই ভ্যাকসিন।
অবশেষে ভেরিওলেশনের বিদায়:
জেনারের গবেষণার ফলাফলের উপর ভিত্তি করেই ১৮৪০ সালে এসে ব্রিটিশ সরকার ভেরিওলেশন নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এর বিপরীতে কাউপক্স দিয়ে গুটি বসন্তের ভ্যাকসিন বা টিকা তৈরির আদেশ দেয়া হয়। এভাবেই তৈরি হয়ে যায় মানব সভ্যতার প্রথম ভ্যাকসিন। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল বর্তমান কালে বহুল প্রচলিত এই ভ্যাকসিন শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে একটি ল্যাটিন শব্দ ‘ভেকক্যা’ থেকে। যার মানে হল কাউ বা বাংলায় গরু!
১৯৮০ সালে এসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই গুটি বসন্ত রোগটিকে পৃথিবী থেকে নির্মূল করা হয়েছে বলে ঘোষণা দেয়। এটাই প্রথম কোন প্রাণঘাতী ভাইরাস যাকে পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। আর হ্যাঁ, তা হয়েছে এই ভ্যাকসিনের বৌদলতেই।
Leave a Reply