নীল তিমি: অতিকায় স্থলজ প্রাণীটির জলজ অভিযাত্রা!

লেখাটি , বিভাগে প্রকাশিত

১৯৭৮ সাল। পাকিস্তানের সুলেমান মাউন্টেন।

শুভ্র শীতের স্নিগ্ধ এক সকালে একদল তরুণ জীবাশ্ম বিজ্ঞানী এগিয়ে চলেছেন পর্বতটির পানে। হৃদয়ে অদম্য বিশ্বাস ও অজানাকে জানার সীমাহীন আগ্রহ নিয়ে তাদের এই দলবদ্ধ পদযাত্রা।

জানা যায়, প্রাগৈতিহাসিক পৃথিবীতে সমুদ্রগর্ভে নিমজ্জিত ছিল পাকিস্তানের এই আদিম পর্বতটি। আর তাই অতীতের নানান ফসিলের জরাজীর্ণ চিহ্ন ও দুর্লভ নিদর্শন থাকার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে এর পরতে পরতে। মাটির প্রতিটি খাঁজাঙ্কিত স্তর যেন একেকটি কালের রোমাঞ্চকর প্রতিচ্ছবির কথা বলছে। হাজার হাজার ফসিলের দরুন বিজ্ঞানীদের কাছেও তাই গুরুত্বপূর্ণ এই স্থান। আর তাই প্রতিবছরই নিয়ম করে জীবাশ্ম বিজ্ঞানীদের আগমন ঘটে এখানে। এখানে এসে তারা খুঁজে ফিরেন অজানা সময়ের নানাবিধ রহস্যময়তার গল্প।

সেদিনের আগত অনুসন্ধিৎসু দলটিরও লক্ষ্য একই। মাটি খুড়ে জীবাশ্ম ও ফসিল খুঁজে ফিরবে তারা। এর নেতৃত্বে বিখ্যাত জীবাশ্ম বিজ্ঞানী ফিলিপ গিংরিচ, যার অভিজ্ঞতার ঝুলিটি পূর্ণ থোকা থোকা অর্জনের পসরায়। পর্বতের দক্ষিণ ঢালে পৌঁছেই খানিকক্ষণ জিরিয়ে নিলেন তিনি। অতঃপর দলের ঝাঁকড়া তরুণদের নির্দেশ দিলেন, মাটি খুড়তে নেমে পড়তে। দলনেতার আদেশে যেন খুশির ঝিলিক খেলে গেলো তাদের চোখজোড়ায়। আর ভেতরে থেকে একটুকরো প্রাচীন হাড় অপেক্ষা করছিল তাদের জন্য অধীর আগ্রহে– সভ্যতার আলোয় নিজেকে উন্মোচিত করবে বলে।

সুলেমান মাউন্টেন এলাকা, পাকিস্তান। ছবিসূত্র: Wiki.Net

জীবাশ্মের সন্ধানে

উদ্যমী তরুণদের পুরো শক্তি ব্যয়ে পাথরের ন্যায় শক্ত মাটিতে একের পর এক পড়তে লাগলো ভারী হাতুড়ির সজোরে আঘাত। এদের তীক্ষ্ণ অগ্রভাগ ফালি ফালি করে দিচ্ছিল মাটির বিশালাকার অংশগুলো। ধারালো যন্ত্রপাতির ব্যবহারে মাটির এসব পিণ্ডগুলোকে করা হচ্ছিল ছোট ছোট অংশে দ্বিখণ্ডিত। এরইমাঝে অনুসন্ধিৎসু চোখগুলো খুঁজে বেড়াচ্ছিল চমকপ্রদ কিছু।

কেটে যেতে লাগলো সময়। কিন্তু কোনো কিছুরই যেন হদিস নেই। দেখা নেই এক চিলতে ফসিলেরও। অনন্যোপায় হয়ে যখন সবাই ভিন্ন স্থানে যাবার কথা ভাবছিল, তখনই আচমকা পেছন থেকে একজন চিৎকার করে উঠলো সজোরে। মিটমিটে চোখে অদূরে পড়ে থাকা সদ্য খণ্ডিত একটি পাথরের পানে ইশারা করলো সে। তার ইশারায় সবাই একযোগে তাকালো সেদিকে। তৎক্ষণাৎ বিস্ময়ের ঝিলিক খেলে গেলো সবার চক্ষুজোড়ায়। কী দেখেছে তারা?

কুঠারের আঘাতে থেঁতলে যাওয়া একটি আদিম হাড়ের খণ্ডাংশ পড়ে আছে সেখানে। দেখতে অনেকটা স্থন্যপায়ী প্রাণীদের মাথার খুলির ন্যায়। দলনেতা গিংরিচ এগিয়ে এলেন। আলতো করে হাড়টি তুলে নিলেন তার হাতে। অবলম্বন করলেন চূড়ান্ত সতর্কতা। এজাতীয় প্রাণীদের ফসিলের উপর রীতিমত বিশেষজ্ঞ তিনি। কিন্তু এরকম খুলি তো এর আগে দেখেন নি! কেমন বিদঘুটে, এবড়োথেবড়ো। একটু অদূরে গিয়ে আনমনে ভাবতে লাগলেন, যদি এর আরো কোনো অংশ খুঁজে না পাওয়া যায়, তবে প্রাণীটির পরিচয় নির্ধারণে হিমশিম খেতে হবে। 

কিন্তু না, ভাগ্যদেবী বোধহয় খুবই সুপ্রসন্ন ছিল তার। আর তাই, পরবর্তী কয়েক আঘাতেই আবারো বেরিয়ে এলো আরো একগুচ্ছ হাড়গোড়। প্রাপ্ত বাকি হাড়গুলোর সমন্বয়ে পুনর্গঠন করা হলো প্রাণীটির কঙ্কাল। দেখা গেলো, নেকড়ে সদৃশ কোনো এক প্রাণীর গঠন ধারণ করেছে অবয়বটি। যদিও এর আসল পরিচয় তখনও লুকিয়ে আছে কালের অজানা গহ্বরে।

চলছে জীবাশ্ম সংগ্রহের কাজ। ছবিসূত্র: Wikimedia Commons

আবারও অভিযান

কিছুদিন পর ড. ফিলিপ গিংরিচের পথ ধরে আরেকদল বিজ্ঞানী পা বাড়ালো সে স্থানের পানে। উদ্দেশ্য, প্রাণীটির আরো কিছু হাড়গোড় খুঁজে বের করা যায় কি না। আর তাই, গিংরিচ যে স্থানে প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান চালিয়েছেন, ঠিক সে স্থানেই পৌঁছেছে তারা। শুরু হয়েছে নবোদ্যমে অভিযান পরিচালনা। প্রায় ১৭ ঘন্টার হাড়ভাঙা খাটুনির পর তারা খুঁজেও পেলো আরো কিছু হাড়। এসবের সঙ্গে আগের গুলোরও রয়েছে চমকপ্রদ মিল।

এছাড়াও, সেসময়, দ্বিতীয় সে অভিযানে এসব হাড়ের সঙ্গে বর্তমান স্থন্যপায়ী প্রাণীদের, আরেকটু স্পষ্ট করে যদি বলি, অতিকায় সামুদ্রিক নীল তিমিদের মিল খুঁজে পেয়েছিল তারা। তবে, প্রশ্ন উঠে, একটি স্থন্যপায়ী প্রাণী সমুদ্রের নীচে হাজার বছর ডুবে থাকা স্থানে (পর্বতে) যাবে কী করে? আবার তার সঙ্গে বিশালাকৃতির নীল তিমিরই বা সম্পর্ক কী?

চলুন আজকের এ আলোচনায় রহস্যময় সে বিষয়গুলোই উদঘাটন করা যাক। যাত্রা করা যাক, মিলিয়ন বছর পেছনে, প্রাগৈতিহাসিক হিমশীতল বরফ যুগে।   

নীল জলের নীল তিমি। ছবিসূত্র: Wiki.Net

বিবর্তনের পথ ধরে

আজ থেকে প্রায় পয়তাল্লিশ মিলিয়ন বছর পূর্বের কথা। কুকুরের ন্যায় ছোট্ট একটি প্রাণী তখন পৃথিবীতে বাস করত। নাম তার পাকিসেটাস। একদিন কী হলো– ভয়ানক ক্ষুধার্ত অবস্থায় সমুদ্রের কূল ঘেঁষে ঘুরে বেড়াচ্ছিল এটি। সন্ধান করছিল একটুকরো খাবারের। কেননা, শিকারের অভাবে প্রাণীটির তখন মর-মর অবস্থা। এমন পরিস্থিতি, এর চোখ গেলো সমুদ্রের পানে।

কয়েকটি ছোট্ট মাছ সমুদ্রের উজানে এসে খেলা করছিল। লাফিয়ে বেড়াচ্ছিল প্রাচীন পৃথিবীর বালুকাবেলায়, নীল জলে। তখনই দু-দণ্ড না ভেবেই মাছগুলোর উপর ঝাপিয়ে পড়লো সে। শক্ত চোয়ালে চেপে ধরলো কয়েকটাকে। অতঃপর, সামুদ্রিক তরতাজা মাছ ভক্ষণে উদরপূর্তি করে এটি হঠাৎই বুঝতে পারল, আরে ডাঙার চেয়ে বরং পানিতেই তো খাবারের সন্ধান পাওয়া সহজ! অতঃপর এটি ধীরে ধীরে স্থলের খাবারের চেয়ে জলের খাবারকেই প্রাধান্য দিতে লাগলো। জঙ্গল ছেড়ে এসে আবাস গড়লো সমুদ্রের কূলে। একে অনুসরণ করে অন্য পাকিসেটাসরাও চলে এলো এখানে।

দিন যায়, এরা সকলেই সাগর থেকে মাছ সংগ্রহ করে খায়। একসময় এরা ডাঙা ছেড়ে পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে সমুদ্রের উপর। কিন্তু ডাঙার খাবারের (ছোট্টপাখি-কীটপতঙ্গদের) কী হয়েছিল?

আসলে, সে সময়ে বর্তমান পাকিস্তান অঞ্চলের তাপমাত্রা হঠাৎ বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। রুক্ষ-শুষ্ক ও প্রাণহীন হতে থাকে ধীরে ধীরে, পরিবেশ-প্রকৃতি। এমন সময়, সেখানে বসবাসরত মাঝারী আকৃতির প্রাণী পাকিসেটাসদের সামনে উদ্ভূত হয় এক বিরূপ পরিস্থিতি, মারাত্মক খাদ্য সংকট। এই পরিস্থিতিতে ডাঙায় খাদ্যের অভাবে যেন প্রাণ যায় যায় অবস্থা তাদের।

কুকুর সদৃশ পাকিসেটাস মূলত ছোট-ছোট পাখি ও সবুজ তৃণ-ঘাস, লতা-পাতা খেয়ে বাঁচতো। কিন্তু রুক্ষ পরিবেশে সবকিছুই তখন ম্লান, জরাজীর্ণ। একমাত্র উপায় তখন সমুদ্র। আর তাই, বিরূপ পরিবেশে অভিযোজনের নিমিত্তেই তখন তারা বেছে নিয়েছিল সমুদ্রকে।

তিমিদের প্রথম পূর্বপুরুষ পাকিসেটাস। ছবিসূত্র: Artrive

জলের বিপদ

একসময় পাকিসেটাসদের শিকারের আতঙ্কে ছোট্ট মাছগুলো খুবই সতর্ক হয়ে উঠলো। বেলাভূমির কিনারা ছেড়ে তারা পালিয়ে গেলো দূর সমুদ্রে! এটা খুবই স্বাভাবিক। আর হওয়ারও ছিলো এমনাটাই। শিকারীর ভয় কে না পায়? কিন্তু বিপত্তি বাধলো অন্যত্র! পাকিসেটাসদের স্থলজ গঠন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলো দূর সাগরে মাছ শিকারে। কেননা তাদের ভারী শরীর উত্তাল সমুদ্রে সাঁতরাতে উপযোগী ছিলো না তখনো।

তবে জীবনের প্রয়োজনে, খাবারের সন্ধানে ধীরে ধীরে তারা বিবর্তিত হলো। মাংসল দেহের পরিবর্তে পেলো সরু শরীর, মোটা মাংসল লেজ আর প্রসস্থ একজোড়া পেছনের পা– যেগুলো সাঁতরাতে বেশ সহায়ক হবে। এর নতুন নাম হলো এমবুলোসিটাস। একইসঙ্গে তারা ডাঙায় হাঁটাচলা করতে পারে। আবার পানিতেও ভাসতে পারে তারা। কিন্তু তখনো অনেকটা পথ বাকি, পদে পদে বাধা, আর জলের হিংস্র প্রাণীদের আতঙ্ক।

এদিকে জলে অবস্থানের কারণে তারা এখন আর ডাঙায় খুব বেশি সুবিধা করতে পারছে না। আবার লবণাক্ত জলে অধিক সময় অবস্থানও করতে পারছিলো না তারা। পানি পানের জন্য উঠে আসতে হতো ডাঙায়। পাশাপাশি ছিলো জলের হিংস্র প্রাণীদেরও ভয়! এখন উপায়?

জলের অতলে এমবুলোসিটাস। ছবিসূত্র: Artrive

ডক্টর গিংরিচের পুণর্অভিযান

বিষয়টির পুরোপুরি মীমাংসা করা দরকার। গিংরিচ আবারো পা বাড়ালেন অভিযানের পানে। এবার এসে তিনি এমন কিছু পেলেন যা তিমিদের পূর্ব পুরুষদের সম্পর্কে জটিল এই ধাঁধার সমাধান করে দিলো। এমবুলোসিটাসদের বিবর্তিত প্রজন্ম রোডাসিটাসরা প্রকৃতি দেবীর কাছ থেকে এক অমূল্য উপহার পেয়েছিল–একটি শক্তিশালী কান। বিশালাকার এই কর্ণের সাহায্যে বহুদূর থেকে জলের হিংস্র প্রাণীদের তেড়েফুঁড়ে আসা আঁচ করতে পারতো তারা। বুঝতে পারতো সম্ভাব্য বিপদ। সুতরাং এর সাহায্যে জলের আতঙ্ক খুব সহজেই এড়িয়ে চলতে পারতো তারা।

তবে বিপদের কী তাতে শেষ হলো? না! জলের শত্রুদের এড়িয়ে চলা আয়ত্ত করতে পারলেও আবার ধাক্কা দিলো ভয়ংকর প্রতিকূল আবহাওয়া! এর প্রভাব এতটাই প্রখর ছিলো যে, খাপ খাওয়াতে না পেরে চিরতরে হারিয়ে গেলো রোডাসিটাস। বিপরীতে রেখে গেলো বিবর্তিত নতুন প্রজন্ম– বিশাল ব্যাসিলোসরাস আর ছোট্ট ডরুডন।

প্রায় পঞ্চাশ ফুট লম্বা আর চৌদ্দ হাজার পাউন্ড ভরের ব্যাসিলসরাসকে টেক্কা দেওয়ার মতো জলজ জীব খুব কমই ছিলো তখন সাগরতলে। আর তাই খুবই হেসেখেলে ঘুরে বেড়াতো তখন সে। উপকূলই ছিল তাদের বিচরণের আদর্শ স্থান। আগে যারা রোডাসিটাসকে শিকার করতো, তারাই এখন ব্যাসিলসরাসের আতঙ্কে তটস্থ থাকতো সর্বদা। লুকিয়ে বেড়াতো ভয়ংকর সাগর দানব থেকে। কখন শিকারে পরিণত হয়, এই ভয়ে। এমনকি কখনো কখনো ছোট্ট ডরুডনও শিকারে পরিণত হতো ব্যাসিলসরাসের।

প্রিয় পাঠক, প্রবন্ধের প্রায় শেষে চলে এসেছি আমরা। ভাবুন তো, আজকের অতিকায় নীল তিমির পূর্বপুরুষ হিসেবে শেষমেশ কে টিকেছিল– ব্যাসিলোসরাস নাকি ডরুডন?

সুবিশাল ব্যাসিলোসরাস। ছবিসূত্র: Artrive

শেষের সাফল্য

প্রজন্মের সামঞ্জস্যতায়, বিরূপ পরিবেশের নিমিত্তে কিংবা খাবারের পর্যাপ্ততায় শেষ পর্যন্ত টিকে থাকলো ছোট্ট ডরুডনই। এখন পর্যন্ত, স্বার্থপর পৃথিবীর গল্পের নায়ক, অতিকায় ব্যাসিলোসরাসরা হারিয়ে গেলো পৃথিবী থেকে, চিরতরে। তার স্থলাভিষিক্ত হলো ছোট্ট-শান্ত ডরুডন। কিন্তু কীভাবে?

আজ থেকে ৩৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে আবারো পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তন হতে শুরু করেছিলো। শুকিয়ে চৌচির হয়ে গিয়েছিলো ব্যাসিলোসরাসদের বিচরণস্থান– উপকূল। ফলস্বরূপ, বাসস্থান হারিয়ে, খাদ্যের অভাবে, অভিযোজনের প্রতিবন্ধকতায় হারিয়ে গেলো তারা। আর ডরুডনরা? তারা কীভাবে টিকে থাকলো?

ব্যাসিলোসরাসরা হারিয়ে যাওয়ায় ডরুডনরা রাজত্ব পেলো ঠিকই, কিন্তু সমুদ্রে তখন চলমান ভয়ঙ্কর শিকারী হাঙ্গর মেগালোডনের ত্রাস। কম করে হলেও প্রায় ১০,০০০ কেজি ভরের মেগালোডনের একেকটি দাঁত একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের হাতের সমান। সাঁতারেও বেশ চটপটে তারা। আর তাই সমুদ্রের ইতিহাসে একে বলা হয় সবচেয়ে ভয়ানক শিকারী, যার কাছে মাত্র ষোল ফুট লম্বা ডরুডন ছিল যেন ছোট্ট শিশু বাচ্চা! তাহলে?

বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় পরিবর্তন। ছবিসূত্র: Hoongshok

পরিশেষে

বৈরী সে সময়টায় ডরুডনরা টিকে গিয়েছিল নিজেদের প্রখর বুদ্ধিমত্তায় ও পূর্বপুরুষদের জীনগত বদান্যতায়। কেননা, স্থলচর প্রাণীদের রক্ত উষ্ণ, প্রচণ্ড শীতল জলেও তা জমে না। এর মানে হলো তারা পরিবেশের তাপমাত্রার উপর কোনোভাবেই নির্ভরশীল নয় বরং নিজেদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাদের দেহে পুরু চর্বির স্তর থাকে, যা শরীরের তাপমাত্রায় ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। সাহায্য করে কনকনে ঠান্ডা পরিবেশেও টিকে থাকতে।

চমকপ্রদ এই বৈশিষ্ট্যটিই তাদেরকে অত্যন্ত অভিযোজিত সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী হিসেবে গড়ে তুলেছিল। ফলে সেসময় তারা পালিয়ে গিয়েছিল হিমশীতল বরফ জলে, মেরু অঞ্চলে। অপরদিকে মেগালোডনরা ছিলো আংশিক উষ্ণ ও আংশিক শীতল রক্তের। আর তাই প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় জমে যাবার ভয়ে তারা ভুল করেও সে দিকে মাড়াতো না!

এদিকে, নতুন এই শীতল পরিবেশ আশির্বাদ হয়ে ধরা দিলো ডরুডনদের কাছে। নিরাপদ বাসস্থানে তারা দিব্যি ঘুরে বেড়াতে লাগলো। বিবর্তিত হলো সময়ের নিয়মে, আপন মনে। এবং, একদিন আসলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, যখন–

পৃথিবীর সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী মানুষেরা তাদেরকে “সাগর জলের নীল তিমি” হিসেবে আবিষ্কার করলো!

তথ্যসূত্রঃ

লেখাটি 71-বার পড়া হয়েছে।


নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান? হোস্টিং ও ডোমেইন কেনার জন্য Hostinger ব্যবহার করুন ৭৫% পর্যন্ত ছাড়ে।

আলোচনা

Leave a Reply

ই-মেইল নিউজলেটার

বিজ্ঞানের বিভিন্ন খবর সম্পর্কে আপডেট পেতে চান?

আমরা প্রতি মাসে ইমেইল নিউজলেটার পাঠাবো, মাসে একবার। নিউজলেটারে সাম্প্রতিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন খবরাখবর নিয়ে বিশ্লেষণ থাকবে। এছাড়া বিজ্ঞান ব্লগে কি কি লেখা আসলো, কি কি কর্মযজ্ঞ চলছে, সেটার খবরও থাকবে।







Loading