কমোডো ড্রাগন: উপকথার ড্রাগনদের পৃথিবীতে বিচরণ!

লেখাটি , বিভাগে প্রকাশিত

ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব দিকের এক নির্জন দ্বীপ। জনমানবহীন, রুক্ষ, ঊষর।

বিগত শতকের শুরুর দিকের ঘটনা। আগ্নেয়গিরির তরল লাভা বিষাক্ত করে তুলেছে আশেপাশের পাহাড়গুলোকে। স্থানীয় বাসিন্দারা ভুল করেও সে দিকে পা মাড়ান না। লাভার ভয়ে নয়, বরং কুৎসিত দর্শন এক জন্তুর ভয়! দ্বীপটিতে তাদের সংঘবদ্ধ বসবাস। তাদের দুয়েকটির সামনে পড়লেও রক্ষে নেই!

আজ আকাশ পরিষ্কার। বর্ষার এই সময়টায় মেঘের ছিটেফোঁটাও নেই। তকতকে রোদ। একটু গরমও লাগছে। পাশের বিমানঘাঁটির একজন ক্ষুদে বৈমানিক ভাবছেন, মেঘমুক্ত পরিষ্কার আকাশে একটু প্রশিক্ষণ সেরে আসবেন কি না?

তখনও বিমানের প্রযুক্তি ততোটা উন্নত না। নড়বড়ে বিমান নিয়েই তিনি উড়ে গেলেন আকাশে। বর্ষার আকাশেরও বিশ্বাস নেই! আচমকা এক ঝাঁপটা বাতাস এসে তার ভারসাম্য বিনষ্ট করে দিলো। পাল্টে গেলো বিমানের গতিপথ। বাতাসের গতিবেগ বাড়লো ৷ ভূপাতিত হলো এক নির্জন দ্বীপে।

বিকেলের রোদ্দুর এখনো কিছুটা খেলা করছে। এরই মাঝে সেখানে একটি সাইনবোর্ড দেখতে পেলো সে। গুটিগুটি অক্ষরে লেখা– কমোডো দ্বীপ, সাবধান!

কিসের সাবধানতা কে জানে? তরুণ বৈমানিক নিজেকে সামলে নিলো। ভাঙ্গা বিমানের ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো। খিদে পেয়েছে প্রচন্ড! এই নির্জন দ্বীপে কী খাবারের কিছু পাওয়া যাবে– ফলমূল, মাছ-মাংস, শাকপাতা?

ক্ষুধার তাড়নায় মনের অজান্তেই হাঁটতে লাগলেন তিনি। দেখতে পেলেন, ঘন জঙ্গলের গাছগুলো একটি আরেকটির সঙ্গে লেপ্টে আছে। তৈরি করেছে আধো-আলো, আধো-ছায়াময় পরিবেশ। বিদঘুটে সব পোকামাকড় উড়ে বেড়াচ্ছে। দূর থেকে ভেসে আসছে বন্য শেয়ালের হাঁক ডাক। সন্ধ্যা হয়ে এলো বলে।

খাবারের খোঁজে নির্জন অরণ্যে বৈমানিক; ছবিসূত্রঃ Nature of world

ধীরে ধীরে নির্জন বন আরো নির্জন হতে লাগলো। অগত্যা সেদিকে পা না মাড়ানোই ভালো। মনে মনে বললো সে। হাঁটা ধরলো উত্তরে, গহীন অরণ্য পেরিয়ে সমুদ্রতীরের পানে।

সৈকতে এসে এবার তার দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার যোগাড়। যা দেখছে, তা কী সত্যি? এক কিম্ভূতকিমাকার বিশাল প্রাণী শান্ত পায়ে এগিয়ে আসছে তার দিকে। চোখেমুখে কী নিদারুণ শক্তিমত্তার প্রদর্শন। তাকে দেখামাত্র শব্দ করছে ফুসফুস করে। মুখ থেকে বেরিয়ে আসছে টকটকে লাল আগুনের হল্কা।

এটা কী রূপকথার ড্রাগন নাকি?

ক্ষুধা, তৃষ্ণায়, ক্লান্তিতে সেখানেই সজ্ঞা হারান তরুণ। সকালের তরতাজা বাতাসে ঘুম ভাঙে তার। নিজেকে আবিষ্কার করেন, একটি শক্ত তক্তপোশে শুয়ে আছেন। হেলেদুলে কিছু একটা চলছে। এটা কী জাহাজ? নাকি ছোট্ট ডিঙ্গি নৌকা?

হ্যাঁ, জেলেদের ছোট্ট একটি জলযান। সেসময় মাছ ধরার জন্য সেখান দিয়ে যাচ্ছিল। তাকে বেলাভূমিতে পড়ে থাকতে দেখে নিজেদের নৌকায় তুলে আনলো। বিষয়টা জানতেই নিজের হাত-পা বারবার পরখ করে দেখলো সে। না, জন্তুটি তার কোনো ক্ষতি করে নি!

প্রাণসমেত নিজের বাসস্থানে ফিরে এসে সবাইকে খুলে বললো ঘটনার বিস্তারিত। জানালো নির্জন সে দ্বীপের কথা, যেখানে অত্যাশ্চর্য এক ড্রাগনের দেখা পেয়েছে সে!

বিশালাকার ড্রাগন; ছবিসূত্রঃ Nature Mother

ড্রাগনের খোঁজে অভিযান

ইন্দোনেশিয়া; চৌদ্দ হাজার দ্বীপ নিয়ে গঠিত মনোরম এক দেশ। উদ্দাম সাগরের বুকে ভেসে আছে একেকটি দ্বীপ। বহন করছে রহস্যময় সব ঘটনার সাক্ষ্য। যে সময়ের কথা বলছি, তখন দ্বীপগুলোর বেশিরভাগই ছিল জানমানবহীন। ভয়ংকর সব প্রাণীরা ঘুরে বেড়াতো তখন।

এদেরই একটি থেকে ক্ষুদে বৈমানিক প্রাণ নিয়ে ফিরেছিল। নিজের এলাকায় ফিরে সবাইকে ঘটনা বললে অনেকেই গাঁজাখুরি গল্প বলে উড়িয়ে দিলো। তবে, কেউ কেউ বিশ্বাস করলো তার কথা। নিজেরাও যুক্ত করলো কিছুটা– উপকথার নানান রহস্যময় প্রাণীর ঘটনা!

মুখরোচক এসব গল্প কিছুদিনের ভেতরেই ছড়িয়ে পড়লো আশেপাশের অঞ্চলে। উপকথা-লোককথার মিশ্রণে সত্যিকার ছোঁয়া পেলো তরুণের কাহিনি! পাবেই বা না কেন? মানুষ যে স্বভাবতই গল্পপ্রিয়।

আর তাই স্থানীয় উপকথার সাথে ফিরে আসা বৈমানিকের কাহিনি এক করে কেউ কেউ বিশ্বাস করতে শুরু করল, সত্যিই হয়তো উপকথার কোনো প্রাগৈতিহাসিক জন্তু বেঁচে আছে ইন্দোনেশিয়ার আদিম অরণ্যে।

বিষয়টি মীমাংসা করা জরুরি। ডাচ লেফটেন্যান্ট ভ্যান স্টেইন সিদ্ধান্ত নিলেন ব্যাপারটির সত্য-মিথ্যা যাচাই করবেন। জোয়ানমর্দ কয়েকজন যুবককে নিয়ে পাড়ি জমালেন দ্বীপটির পানে। সেখানে পৌঁছে রীতিমতো বিস্ময়ে হতবাক তারা। এ যে অনুমানের চেয়েও অধিক বড়।

বিশালাকার এদের চোয়াল। পা-গুলোও কেমন শক্ত-সামর্থ্য। রহস্যের সমাধান হলো। সত্যিকার অর্থেই যে এমন প্রাণীর অস্তিত্ব আছে, তার ঘোলা জল পরিষ্কার হলো।

কমোডো দ্বীপের ড্রাগনেরা; ছবিসূত্রঃ Ancient Museum

মার্কিনিদের শিকারের কবলে

১৯২৬ সাল। মার্কিন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ডব্লিউ ডগলাস বার্ডেনের ছিলো শিকারের দারুণ নেশা। সংবাদমাধ্যমে তার কানে পৌঁছে যায় এই রহস্যময় প্রাণীটির ঘটনা। এর রহস্যোদঘাটনে আকর্ষণও অনুভব করেন তিনি। শুরু করেন অভিযানের পরিকল্পনা। রাজি করান আমেরিকান মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্টরিকে, তাঁর এই বিশাল কর্মযজ্ঞে পাশে দাঁড়াতে।

স্টেইনের পথ ধরে ডব্লিউ ডগলাস কমোডো দ্বীপের পানে যাত্রা করেন। সঙ্গী হিসেবে বেছে নেন একজন সরীসৃপ বিশেষজ্ঞ, একজন দক্ষ শিকারি আর তার রূপবতী স্ত্রীকে। শুরু হলো যাত্রা। নোঙর তুললো জাহাজ। উদ্দাম সাগরের পানি কেটে এগিয়ে চললো দ্বীপটির পানে।

কয়েকদিনের যাত্রা শেষে এক সকালে তার পৌছুলো দ্বীপটির উপকূলে। সূর্য তখনো উঠে নি। চারিদিকে শান্ত-স্নিগ্ধ পরিবেশ। নিরবতার রেশ ভেঙে একে দুয়ে তারা দ্বীপে নেমে এলো। দ্বীপে পৌঁছেই ডগলাসের চক্ষু চড়কগাছ! একঝাঁক ঘুমন্ত ড্রাগনের দেখা পেলো সে। আর মনে মনে বলে উঠলো, এ যে সত্যিকার অর্থেই উপকথার ড্রাগন!

প্রাণীগুলোর একেকটি লম্বায় আট থেকে দশ ফুট। গায়ের রং বাদামী। চামড়ায় কালো কালো ছোপ। অঙ্গভঙ্গী আর চলনবলনে প্রচন্ড শক্তিমত্তার পরিচয় দিচ্ছে। প্রকান্ড জানোয়ারগুলো দাঁড়িয়ে আছে শক্তিশালী পায়ে ভর করে।

ডগলাসের ভাবনা, দুয়েকটিকে ধরে আমেরিকা নিয়ে যাবে। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। শুরু হলো ড্রাগন শিকারের মহাঅভিযান। কিন্তু, বিশালাকার এই প্রাণীগুলোকে ধরা চাট্টিখানি কথা নয়। তার উপর অসম্ভব জোর গায়েগতরে। কখন কামড়ে দেয়, তারও ভরসা নেই।

শিকারী এগিয়ে এলেন। তার বোনা ফাঁদে আটকা পড়লো দু’টি। এর আগে শিকারের তোড়জোড়ে মারা পড়েছিল গোটা দশেক। কীভাবে ধরা হলো এদের? রাতের বেলা শিকারীরা ফাঁদ পেতে রেখেছিল। সকালে গিয়ে দেখলো, ছিন্নভিন্ন করে ফেলেছে ফাঁদ গুলোকে। ভেতর থেকে খেয়ে নিয়েছে রেখে আসা খাবার। কী করা যায়?

এবার ভিন্ন পথ বাতলে দিলো ডগলাসের স্ত্রী। তার দেখানো পথে পাতা হলো নতুন ফাঁদ। কাজে লাগানো হলো তাদের সর্বগ্রাসী ক্ষুধাকে। মোটা লোহার শিকের বাক্স বানিয়ে তাকে লতাপাতার আড়ালে লুকিয়ে রাখা হলো। তার ভেতরে রেখে দিলো একটি মৃত পশু। ভেতরে যাওয়ার জন্য রইল একটিমাত্র সরু পথ। খাবারের সন্ধান পেতেই হিসহিস শব্দ তুলে তার ভেতরে ঢুকে গেলো কমোডোর ড্রাগন। অমনি বন্ধ হয়ে গেলো খাঁচা।

কী দুঃসাহসিক অভিযান, আহা! অতঃপর, সবগুলোকে নিয়ে সফল অভিযানের আত্মতৃপ্তিতে পাড়ি জমালেন নির্জন এ দ্বীপ ছেড়ে। সমাপ্ত হলো এক রোমাঞ্চকর শিকারাভিযানের গল্প। সফল অভিযান শেষে যখন নিউ ইয়র্কে ফিরেও এলেন তখন তাঁদের সঙ্গে এক জোড়া জ্যান্ত কমোডো দ্বীপের দৈত্য। আর এক ডজন মরা দৈত্য। জ্যান্ত জোড়া দেওয়া হলো ওখানকার চিড়িয়াখানায়। আর মরাগুলো দেওয়া হলো জাদুঘরে। 

আমেরিকার চিড়িয়াখানায় কমোডো ড্রাগন; ছবিসূত্রঃ Ancient Museum

উৎপত্তি ও বিবর্তন

জানা যায়, প্রায় ৪০ মিলিয়ন বছর পূর্বে পৃথিবীর বুকে আবির্ভাব ঘটেছিল কমোডো ড্রাগনদের। এশিয়াতেই এরা প্রথম বিচরণ করেছিল। অতঃপর, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, খাবারের খোঁজে তারা পাড়ি জমায় অস্ট্রেলিয়ায়। গড়ে তোলে নিজেদের আপন আবাসস্থল।

প্রায় পনেরো মিলিয়ন বছর পূর্বে আবারো প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দেয়। কমোডো ড্রাগনরা আবারো নতুন বাসস্থানের খোঁজে। সাঁতরে ফিরে অস্ট্রেলিয়ার আনাচে-কানাচে। কেননা, তখনকার সময়ে সংগঠিত ভূতাত্ত্বিক সংঘর্ষ তাদের বাধ্য করে নতুন ভূমির সন্ধানে। ফলে তারা নীল জলরাশি পাড়ি দিয়ে এসে ভিড়ে ইন্দোনেশিয়ান উপকূলে। একে দুয়ে এখানেই জড়ো হতে থাকে তারা।

একসময় অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে পুরোপুরি চলে আসে ইন্দোনেশিয়ায়। অতঃপর বরফ যুগের পর সমুদ্রের জল নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেলে পুরো পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় কমোডো ড্রাগনরা। যার ফলে লোকচক্ষুর আড়ালে ছিল হাজার বছর ধরে।

ইন্দোনেশিয়ার সৌন্দর্যমন্ডিত কমোডো দ্বীপ; ছবিসূত্রঃ History of Indonesia

দৈহিক গড়ন ও খাদ্যাভ্যাস

লালচে-ধূসর বাদামী রংয়ের কমোডো ড্রাগন দেখতে অতিকায়। মনে হবে বিশালাকার কোনো দেশীয় গুইসাপ। কেননা, তাদের গড়ন অনেকটা গুইসাপের মতোই। আকার-আকৃতিতে কেবল বড়। লম্বায় আট থেকে দশ ফুট আর ওজনে শ কেজি ছাড়িয়ে যায়।

বুড়ো কমোডোদের জিভগুলো হয় কিছুটা লালছে। দূর থেকে দেখে মনে হবে যেন আগুনের লেলিহান শিখা বের হচ্ছে। এসব জিভ দিয়ে শিকারের উপাদেয় দেহ চেখে নেয়। গন্ধ শুঁকে কখনো কখনো। ইঞ্চিখানেক লম্বা দাঁত ব্যবহৃত হয় শিকারকে টুকরো টুকরো করার জন্য।

প্রকৃতির খেয়ালিপনায় তারা পেয়েছে বিষে ভরপুর তরল লালা। শত্রুকে কাবু করতে এর বিষ মারাত্মক ও অব্যর্থ উপায়। ক্ষতিকর এসব লালায় মিশে থাকে একপ্রকার ব্যাকটেরিয়া। এগুলো শিকারের ক্ষতে মিশে শিকারকে কাবু করে ফেলে।

খাদ্য তালিকায় রয়েছে ব্যাঙ, ছোট কাঁকড়া, সাপ, উপকূলে আছড়ে পড়া সামুদ্রিক মরা মাছ, বন্য শুকর, হরিণ। সাপের ডিম তাদের প্রিয় খাবার। শিকারের জন্য এরা লুকিয়েও অপেক্ষা করে। কাছাকাছি আসতেই ঝাপিয়ে পড়ে কার্য সারে। শক্তিশালী লেজের আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যেকোনো শিকার। অতঃপর, চিবিয়ে খায়। এমনকি শক্তিশালী ঘ্রাণের মাধ্যমেও কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে খাবারের সন্ধান করতে পারে এরা।

বিষাক্ত লালা নিঃসরণকালে কমোডো ড্রাগন; ছবিসূত্রঃ History of Indonesia

বাংলাদেশের কমোডো ড্রাগন

বাংলাদেশেও একপ্রকার ড্রাগনের দেখা মিলে। তবে তারা ঠিক ড্রাগন নয়, গুই সাপ। দেখতে ড্রাগনের মতো হওয়ায় এরা ঠাট্টার ছলে দেশীয় ড্রাগন নামে পরিচিত।

আমাদের দেশে মোট তিন প্রজাতির গুই সাপ রয়েছে। কালো গুই, সোনা গুই এবং রামগদি গুই। আঞ্চলিক ভাষায় এদের আবার গুইল নামেও ডাকা হয়। এরা শান্ত স্বভাবের প্রাণী। নিরীহ, প্রয়োজন ছাড়া কারো ক্ষতি করে না। চলাচল করে ধীরগতিতে, শান্তভঙ্গিতে। গ্রামের বসতবাড়ি, ঝোপঝাড়, অপরিত্যাক্ত ভিটা এদের বিচরণের আদর্শ স্থান।

বর্ষকাল তাদের আনন্দের মৌসুম। এসময় বিল-ঝিল, নদী-নালায় অবাধে বিচরণ করে এরা। এদের দেহ কমোডো ড্রাগনের মতো না হলেও কোনোকিছুতেই কমও নয় ৷ এরা সর্বভুক প্রাণী। শিকারকে তাড়িয়ে নড়বড়ে দেহ নিয়েও গাছের ডগায় উঠে যেতে পারে।

গাছের কোটর এদের নিরাপদ আশ্রয়। এদের প্রজনন ঋতু শুরু হয় বর্ষার প্রারম্ভে। গাছের কোটরে কিংবা মাটিতে গর্ত খুঁড়ে এরা পনেরো থেকে বিশটি ডিম পাড়ে। রামগদিদের ডিম ফোটে নয় মাসে। অন্যদের এর চেয়েও কম সময় লাগে।

আমাদের দেশীয় ড্রাগন, সোনা গুই সাপ; ছবিসূত্রঃ Bangladeshi animal

পরিশেষে

পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা প্রাণীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে কমোডো ড্রাগন। জলবায়ুর পরিবর্তন, খাবার সংকট, বাসস্থানের অপর্যাপ্ততা, অরণ্য উজাড় ইত্যাদি নানাবিধ কারণে তারা আজ সংকটের মুখে।

ইন্দোনেশিয়া ব্যতীত কমোডো ড্রাগনদের এখন আর কোথাও দেখা যায় না। ম্যাক্সিকোতে তাদের জ্ঞাতি ভাই আছে, গিলা মন্সটার। তবে, তারাও আজ বিপন্নের পথে।

ইন্দোনেশিয়ার কমোডো দ্বীপ ছাড়াও তৎসংলগ্ন রিনকা, গিলি মটাঙ, নুসা কুড়ে ও পদার দ্বীপেও কিছু সংখ্যক ড্রাগনের দেখা মেলে। যদিও এদের সংখ্যা খুবই কম।

পৃথিবীর সবচেয়ে চমকপ্রদ এই প্রাণীটি আমাদের পৌরাণিক ভয়ংকর ড্রাগনদের কথা মনে করিয়ে দেয়। প্রশ্ন জাগায়- পৌরাণিক ড্রাগনেরাও কী দেখতে এমনই ছিলো? হয়তো তাই!

আর তাই তো, এদের দেখতে প্রতিবছর ইন্দোনেশিয়ার কমোডো দ্বীপে ভিড় জমায় হাজারো দর্শনার্থী। উপভোগ করে তাদের চলনবলন, মেটায় মনের তৃপ্তি। দু-চোখে সীমাহীন আগ্রহ নিয়ে দেখে– পৌরাণিক ঘটনায় বর্ণিত ড্রাগনদের বাস্তব রূপ– কমোডো দ্বীপের কমোডো ড্রাগন।

শিল্পীর কল্পনায় উপকথার রহস্যময় ড্রাগনের প্রতিচ্ছবি; ছবিসূত্রঃ Mythical creature

তথ্যসূত্র:

লেখাটি 57-বার পড়া হয়েছে।


নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান? হোস্টিং ও ডোমেইন কেনার জন্য Hostinger ব্যবহার করুন ৭৫% পর্যন্ত ছাড়ে।

আলোচনা

Leave a Reply

ই-মেইল নিউজলেটার

বিজ্ঞানের বিভিন্ন খবর সম্পর্কে আপডেট পেতে চান?

আমরা প্রতি মাসে ইমেইল নিউজলেটার পাঠাবো, মাসে একবার। নিউজলেটারে সাম্প্রতিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন খবরাখবর নিয়ে বিশ্লেষণ থাকবে। এছাড়া বিজ্ঞান ব্লগে কি কি লেখা আসলো, কি কি কর্মযজ্ঞ চলছে, সেটার খবরও থাকবে।







Loading