ডাইনোসর বিলুপ্ত না হলে কেমন হতো পৃথিবীর ভবিষ্যৎ

লেখাটি , বিভাগে প্রকাশিত

আজ থেকে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি বছর পূর্বে, এক মহাবিপর্যয় নেমে আসে পৃথিবীর বুকে। তৎকালীন পৃথিবীর অধিপতি, প্রায় সাড়ে ষোল কোটি বছর ধরে ভূপৃষ্ঠ দাপিয়ে বেড়ানো জীব ডাইনোসরদের জীবনে ঘটে এক অকস্মাৎ বিপর্যয়। মহাশূন্য থেকে প্রায় ৯ মাইল চওড়া (১৫ কিলোমিটার) এক গ্রহাণু আছড়ে পড়ে মেক্সিকোর উপকূলে। ফলস্বরূপ শুরু হয় বিধ্বংসী সুনামি। দাউদাউ করে জ্বলে উঠে অরণ্য, আকাশ ভরে উঠে অ্যাসিড বৃষ্টিতে। সূর্যের আলো থমকে দাঁড়ায়, গাছপালা বন্ধ করে দেয় সালোকসংশ্লেষণ। এই অন্ধকার ও দুর্যোগময় পরিবেশে ডাইনোসরসহ পৃথিবীর প্রায় ৭৫ শতাংশ প্রাণের অবলুপ্তি ঘটে। 

গ্রহাণু আছড়ে পড়ছে পৃথিবীতে; ছবি সূত্রঃ Getty Images.

কিন্তু সেই গ্রহাণুটি যদি পৃথিবীকে এড়িয়ে যেত, তাহলে কেমন হতো পৃথিবীর বর্তমান দৃশ্যপট? ডাইনোসরেরা কি এখনো পৃথিবীতে বিচরণ করত?

জীবাশ্মবিদদের মতে, এই প্রশ্নের উত্তর হলো — ‘হ্যাঁ’। কারণ, ডাইনোসরেরা এর আগেও বহু প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেমন — সমুদ্রপৃষ্ঠের ওঠানামা, তাপমাত্রার হঠাৎ পরিবর্তন, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, সব কিছু মোকাবিলা করে পৃথিবীতে টিকে ছিল প্রায় ১৬৫ মিলিয়ন বছর। 

আজ হয়ত পৃথিবী জুড়ে রাজত্ব করত বিবর্তিত ডাইনোসরেরা। দেখা যেত, চতুর র‍্যাপ্টররা চাঁদের মাটিতে তাদের পতাকা গেড়ে দিচ্ছে। ডাইনোসর-বিজ্ঞানীরা হয়ত আপেক্ষিকতাবাদের সূত্র আবিষ্কার করছে। শুনতে তা সস্তা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি মনে হলেও, এতে লুকিয়ে আছে গভীর ও সূক্ষ্ম দার্শনিক এক প্রশ্ন। প্রশ্নটা হলো, পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাব কি কেবলই দৈবক্রম? নাকি পৃথিবীতে চিন্তাশীল, যন্ত্র-ব্যবহারকারী এই জীবের উদ্ভব ছিল এক ধরনের অনিবার্যতা?

মানুষের মস্তিষ্ক, ভাষা, আধুনিক যন্ত্র, আর পারস্পরিক মেলবন্ধনের সামাজিকতা; এই সবকিছুর সমন্বয়েই হোমো স্যাপিয়েন্স আজ পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত প্রজাতির খেতাব পেয়েছে। আজ পৃথিবীর সাতটি মহাদেশে প্রায় আট বিলিয়ন হোমো স্যাপিয়েন্স ছড়িয়ে আছে।

  চাঁদের মাটিতে ডাইনোসর; ছবি সুত্রঃ Stable Diffusion.

বরফযুগে ডাইনোসর?

প্রশ্ন ওঠতে পারে, তীব্র ঠান্ডা, বরফে মোড়া মলয়া শীতল ধরণীতে কি ডাইনোসররা বেঁচে থাকতে পারত? বরফযুগের মতো প্রতিকূল আবহাওয়ায় কি তাদের সহ্য হতো?

কিছু ডাইনোসরের ফসিল এমন অঞ্চলে পাওয়া গেছে, যেখানে তুষারপাত হতো। তবে বেশিরভাগ ডাইনোসরের বাস ছিল অপেক্ষাকৃত উষ্ণ অঞ্চলেই। তবে কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এমন কিছু ডাইনোসর ছিল, যারা হয়ত বরফযুগের কঠিন বাস্তবতাকে সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারত।
অনেক ডাইনোসরের শরীরে পালক ছিল।  যার ফলে তারা স্তন্যপায়ীদের মতো নিজেদের শরীর গরম রাখতে পারত। আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে, টিরানোসরাস রেক্স-এর মতো কিছু ডাইনোসর ছিল গরম রক্তের অধিকারী। যার মানে, তাদেরকে পরিবেশের তাপমাত্রার দয়া নিয়ে বাঁচতে হতো না, বরং তারা নিজেদের দেহের তাপমাত্রা নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারত।

চরম ঠান্ডার পরিবেশে টিকে থাকার জন্য অন্যান্য প্রাণীরা যেভাবে অভিযোজন ঘটিয়েছে, ডাইনোসররাও হয়ত তেমন রূপান্তরের মধ্যে দিয়েই যেত। যেমন, প্রায় ৫০ লক্ষ বছর পূর্বে দক্ষিণ আফ্রিকায় উদ্ভব ঘটে ম্যামথ প্রজাতির। শেষ বরফযুগের সময় (প্রায় ৮ লক্ষ বছর আগে) ইউরেশিয়ায় যখন তীব্র ঠান্ডা ছড়িয়ে পড়তে থাকে, তখন তাদের শরীরে জন্ম নেয় মোটা, লোমশ আবরণ।

তেমনি ডাইনোসররাও হয়ত কালের পরিবর্তনে নিজেদের শরীরে আরও বেশি পালক জন্মাতে পারত, কিংবা অন্য কোনো উপায়ে নিজেদের প্রতিকূল আবহাওয়ার উপযোগী করে তুলত।

      বরফযুগে লোমশ ম্যামথ; ছবি সুত্রঃ Getty Images.

বুদ্ধিমান ডাইনোসর?

আরেকটি বিস্ময়কর প্রশ্ন হলো, যদি ডাইনোসরেরা বিলুপ্ত না হতো, তবে কি তারা মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীতে রূপ নিতে পারত?

এই প্রশ্নের উত্তর দিতে ১৯৮২ সালে আদাজল খেয়ে নামেন মার্কিন-কানাডীয় জীবাশ্মবিদ ডেল রাসেল। তিনি ভাবেন, যদি ট্রুডোনটিড গোত্রের কিছু ডাইনোসর ক্রিটেশিয়াস যুগের শেষে ঘটা মহাবিলুপ্তি এড়িয়ে বেঁচে যেত, তবে কি তারা সচেতন, চিন্তাশীল প্রাণীতে পরিণত হতে পারত?

রাসেলের এই ধারণার ভিত্তি ছিল একটি বিশেষ প্রজাতির ট্রুডোনটিড ডাইনোসর। যার ছিল বৃহদাকারের মগজ, দুই চোখে একসঙ্গে দেখতে পারার ক্ষমতা (স্টেরিওস্কোপিক ভিশন), হাতের আঙুলে ছিল আঁকড়ে ধরার উপযোগী গঠন, এবং সে চলত দুই পায়ে ভর দিয়ে। রাসেলের বিশ্বাস, এই ডাইনোসর যদি টিকে থাকত, তবে হয়ত তার মগজের বিকাশ এমন স্তরে পৌঁছাত, যার ফলে তার মস্তিষ্ককে হোমো স্যাপিয়েন্সের মস্তিষ্কের সাথে তুলনা দেওয়া যেত। অনুমানভিত্তিক এই ডাইনোসরের নাম ‘ডাইনোসয়রয়েড’। রাসেলের কল্পিত ‘ডাইনোসয়রয়েড’ দেখতে ছিল অনেকটা মানুষের মতোই। কিন্তু বেশিরভাগ বিজ্ঞানী এই তত্ত্বকে বাতিল করেছেন। 

ডাইনোসয়রয়েড; ছবি সুত্রঃ Canadian Museum of Nature.

সবকিছুর সীমা আছে। এমনকি বিবর্তনেরও!

প্রাণীর জৈববিন্যাস বা শারীরবৃত্তীয় গঠন তার বিবর্তনের গতিপথকে সীমাবদ্ধ করে। কোনোকিছুর শুরুটাই বলে দেয়, সেটা শেষ পর্যন্ত কত দূর যেতে পারবে। যেমন, কেউ যদি বিশ্ববিদ্যালয় পড়া মাঝ পথে ছেড়ে দেয়, তাহলে তার পক্ষে নিউরো-সার্জন, আইনজীবী কিংবা নাসার রকেট বিজ্ঞানী হওয়া কঠিন। সে হতে পারে একজন শিল্পী, অভিনেতা কিংবা উদ্যোক্তা। জীবনের পথ যেমন কিছু দরজা উন্মুক্ত করে দেয়, তেমনি অনেক দরজা বন্ধও করে দেয়। এই সত্যি বিবর্তনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

একটু খেয়াল করা যাক ডাইনোসরদের আকারের দিকে। জুরাসিক যুগ থেকে সাউরোপড নামের এক শ্রেণির ডাইনোসর ধীরে ধীরে বিশাল দৈত্যের আকারে রূপ নেয়। এদের মধ্যে ব্রন্টোসরাস ছিল অন্যতম। এরা দৈর্ঘ্যে ছিল প্রায় ৩০ মিটার লম্বা এবং ওজনে ছিল ৩০ থেকে ৫০ টন। 

আর এই বিশালাকৃতির বিবর্তন ঘটেছিল একাধিক ডাইনোসর গোষ্ঠীর মধ্যে। যেমন, ডিপ্লোডোসিডি, ব্র্যাকিওসাউরিডি, তুরিয়াসাউরিডি, মামেনচিসাউরিডি ও টাইটানোসোরিয়া। এই বিবর্তন ঘটেছে ভিন্ন ভিন্ন মহাদেশে, ভিন্ন ভিন্ন সময়ে, এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ পরিবেশে। মরুভূমি থেকে শুরু করে ঘন অরণ্যে। তবু আশ্চর্যের বিষয় হলো, একই পরিবেশে বসবাসকারী অন্য ডাইনোসররা কিন্তু এমন দৈত্যাকার রূপ নেয়নি।

সাউরোপড; ছবি সুত্রঃ Science American.

সাউরোপডদের রহস্য এবং বিবর্তনের সম্ভাবনা

এই সকল বিশালদেহী প্রাণীদের মধ্যে একটি সাধারণ যোগসূত্র ছিল। তারা সবাই ছিল সাউরোপড নামক এক বিশেষ প্রজাতির ডাইনোসর। তাদের ফুসফুসের গঠন, ফাঁপা কিন্তু মজবুত হাড়, কিংবা বিপুল শারীরিক ভর নিয়ন্ত্রণে সক্ষম একধরনের বিপাকক্রিয়া, এসবই হয়ত তাদের বিবর্তনের দুয়ার খুলে দিয়েছিল। ফলে তারা এমন অতিকায় রূপ নিতে পেরেছিল, যা এর আগে কিংবা পরে পৃথিবীর কোনো স্থলচর প্রাণীর ক্ষেত্রে দেখা যায়নি।

এভাবেই, মাংসাশী ডাইনোসরেরাও বারবার বিবর্তনের ধারায় বিশালদেহী শিকারিতে রূপ নেয়। প্রায় দশ কোটি বছরের এই সময়কালে মেগালোসোরিড, অ্যালোসোরিড, কারকারাডোন্টোসোরিড, নিয়োভেনেটোরিড এবং টিরানোসোরা, একেকজন প্রভুত্ব করেছে খাদ্যশৃঙ্খলের শীর্ষে।

ডাইনোসরদের দেহ বৃহদাকৃতির হলেও মস্তিষ্কের দিক দিয়ে তারা খুব একটা তুখোড় ছিল না। জুরাসিক যুগের অ্যালোসোরাস, স্টেগোসোরাস ও ব্র্যাকিওসোরাসদের মস্তিষ্ক ছিল ছোট, এবং এর ক্ষমতা ছিল সীমিত।
ক্রিটেশিয়াস যুগের শেষে টিরানোসোরাস ও ডাকবিলের মতো প্রজাতিদের মস্তিষ্ক তুলনামূলকভাবে বড় হয়েছে।
তবু টিরানোসোরাসের মতো অতিকায় জন্তুটির মস্তিষ্কের ওজন ছিল মাত্র ৪০০ গ্রাম, আর ভেলোসির্যাপটরের তো মাত্র ১৫ গ্রাম! সেখানে একজন মানুষের মস্তিষ্ক গড়ে ১.৩ কিলোগ্রাম ওজনের।

মানুষের মস্তিষ্ক; ছবি সূত্রঃ Pixabay.

এই দীর্ঘকালের ইতিহাসে তারা বারবার একই গল্পই লিখেছে। একদল বিশালাকৃতি তৃণভোজী, আরেকদল ভয়ংকর মাংসাশী। তবে তাদের মস্তিষ্ক ছিল ক্ষুদ্র আর চিন্তার জগৎও ছিল সীমাবদ্ধ।

যদি সেই ভয়াল গ্রহাণুটি এসে পৃথিবীতে আঘাত না হানত, তাহলে হয়ত ডাইনোসরের রাজত্ব এখনো চলত। তবে খুব একটা ভিন্নতা আসত না। এখন পৃথিবীতে হয়ত চষে বেড়াত লম্বা গলার ঘাসখেকো সাউরোপড আর দানবীয় আকারের শিকারি টিরানোসোরাস।

তাদের মস্তিষ্কের আকার খানিকটা বৃদ্ধি পেলেও তারা হোমো স্যাপিয়েন্সদের মতো এমন বুদ্ধিমান প্রাণীতে রূপান্তর হতো, এমন কোনো স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায় না। 

অপরদিকে, স্তন্যপায়ীদের দেহগত গঠনে ছিল সীমাবদ্ধতা। তারা কখনও বিশাল তৃণভোজী বা বৃহৎ শিকারি রূপে বিকশিত হয়নি। কিন্তু বিবর্তনে ধারায় তারা বৃহৎ মস্তিষ্কের অধিকারী হয়েছে ঠিকই।  আজকের দিনে ডাইনোসরের উত্তরসূরি পাখিরা কিছুটা বুদ্ধিমত্তা প্রদর্শন করলেও, জটিল আচরণ ও বৃহৎ মস্তিষ্কের দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছে স্তন্যপায়ীরাই। 

তাহলে কি ডাইনোসরদের বিলুপ্তিই স্তন্যপায়ীদের প্রজ্ঞার উন্মেষের কারণ?

সেটাও নিশ্চিত করে বলা যায় না। জীবনে যেমন একটা নির্দিষ্ট পথ থেকে যাত্রা শুরু করতে হয়, তেমনি বিবর্তনেরও একটা সূচনাবিন্দু রয়েছে। কিন্তু এই শুরু সবসময় ধ্রুব পরিসমাপ্তির নিশ্চয়তা দেয় না। স্টিভ জবস, বিল গেটস কিংবা মার্ক জাকারবার্গ কলেজ ছাড়লেও বিলিয়নিয়ার হয়েছেন। কিন্তু তাই বলে এই নয়, কলেজ ত্যাগ করলেই কেউ ধনকুবের হয়ে যাবে। শুরুটা সঠিক হলেও শেষ পর্যন্ত সফলতা পেতে হলে দরকার আরও অনেক জিনিসের। সেটা হতে পারে, সুযোগ, সময়, বা দৈবক্রমিক সৌভাগ্য।

স্তন্যপায়ীদের ভাগ্যে কী ঘটত?

যদি সেই মহাবিধ্বংসী গ্রহাণুটি পৃথিবীতে আঘাত না করত, তবে আমাদের স্তন্যপায়ী পূর্বপুরুষদের গল্পটা হয়ত একেবারেই অন্যরকম হতো। বড় বড় ডাইনোসররা যদি বেঁচে থাকলে, সেই সময়ের ছোট ছোট, ইঁদুরের মতো দেখতে স্তন্যপায়ীরা হয়ত বিকশিত হওয়ার কোনও সুযোগই পেত না। স্তন্যপায়ীরা হয়ত তখনও লাখ লাখ বছর ধরে ক্ষুদ্র আকারেই থেকে যেত। তবে আরেকটি সম্ভাবনার পালেও হাওয়া দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। পরবর্তীকালে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে বরফযুগ আগমন ঘটলে, গরম রক্তের লোমশ দেহবিশিষ্ট এই ছোট স্তন্যপায়ীরা ঠান্ডা মোকাবিলা করতে পারত। তারা সুযোগ পেত বড় হবার। তখন হয়ত ডাইনোসররাও একসময় হারিয়ে যেত। কিন্তু এখানেই কি মানুষের উত্থান নিশ্চিত? না, মোটেই না। ছোট ছোট লোমশ স্তন্যপায়ীরা কোনোরকমে টিকে গেলেও, তা থেকে মানবজাতি বিবর্তিত হতো কি না, সেটা খুবই অনিশ্চিত। 

২২৫ মিলিয়ন বছর পূর্বের স্তন্যপায়ী; ছবি সুত্রঃ 2022 Anatomical Society/Wiley

প্রাইমেট বিবর্তনের পথ ও মানুষের আবির্ভাব

প্রাইমেটবর্গীয় প্রাণীর বিবর্তনের ইতিহাস থেকে জানা যায়, মানুষের আবির্ভাব কোনো পূর্বনির্ধারিত ঘটনা নয়।
আফ্রিকায় প্রাইমেটরা ধাপে ধাপে বৃহৎ মস্তিষ্কওয়ালা এইপে রূপান্তরিত হয়। আর দীর্ঘ সাত মিলিয়ন বছরের অভিযাত্রায় জন্ম নেয় আধুনিক মানুষ।

কিন্তু পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্তে গল্পটা ছিল একেবারেই ভিন্ন। ৩৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে দক্ষিণ আমেরিকায় প্রাইমেটরা পৌঁছালেও, সেখানকার বিবর্তনীয় ধারা তাদের কেবল নতুন নতুন বানর প্রজাতিতে রূপান্তরিত করেছে। উত্তর আমেরিকায়ও প্রাইমেটরা অন্তত তিনবার পা রেখেছিল। এবং সেটা ৫৫, ৫০ ও ২০ মিলিয়ন বছর পূর্বে। তবু, কোনো সময়েই তারা পারমাণবিক বোমা বা স্মার্টফোন বানানোর মতো সক্ষম প্রাণীতে বিবর্তিত হয়নি। অদ্ভুত এক কারণে তারা সেখান থেকে চিরতরে হারিয়ে গেছে।

মানুষের বিবর্তন; ছবি সূত্রঃ Twinkle.

আফ্রিকাই ছিল সেই ভূখণ্ড, যেখানে প্রাইমেট বিবর্তন এক আলাদা দিকে বাঁক নেয়। আফ্রিকার প্রাণিকুল, উদ্ভিদজগৎ বা ভূপ্রকৃতির কোনো একটি, অথবা সবকিছুর সম্মিলিত প্রভাবে গড়ে ওঠে এক প্রজাতি। যারা ভূমিতে হেঁটে বেড়ায়, দৈহিক আকারে বলিষ্ঠ, মস্তিষ্কে উন্নত, আর যন্ত্র-উপকরণ ব্যবহার করার ক্ষমতা রয়েছে তাদের। হ্যাঁ, তারাই হোমো স্যাপিয়েন্স।

তাই শুধু ডাইনোসরের বিলুপ্তিই যথেষ্ট ছিল না। হোমো স্যাপিয়েন্স আজকের এই পর্যায়ে আসার পিছনে বড় নিয়ামক ছিল সঠিক পরিবেশ, উপযুক্ত সুযোগ, আর সঠিক সময়ে ভাগ্যের একটুখানি ছোঁয়া।

তথ্যসূত্রঃ

বিজ্ঞান নিউজলেটার

যুক্ত হোন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞান নিউজলেটারে!

আমরা সাপ্তাহিক ইমেইল নিউজলেটার পাঠাবো। 
এ নিউজলেটারে বিজ্ঞানের বিভিন্ন খবরাখবর থাকবে। থাকবে নতুন লেখার খবরও।



Loading






বিজ্ঞান নিউজলেটার

যুক্ত হোন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞান নিউজলেটারে!
আমরা সাপ্তাহিক ইমেইল নিউজলেটার পাঠাবো। 
এ নিউজলেটারে বিজ্ঞানের বিভিন্ন খবরাখবর থাকবে। থাকবে নতুন লেখার খবরও।


Loading

লেখাটি 58-বার পড়া হয়েছে।

অন্যান্য উল্লেখযোগ্য লেখা

  • আইনস্টাইন জিগজ্যাগ

    আইনস্টাইন জিগজ্যাগ

  • ডাইনোসর বিলুপ্ত না হলে কেমন হতো পৃথিবীর ভবিষ্যৎ

    ডাইনোসর বিলুপ্ত না হলে কেমন হতো পৃথিবীর ভবিষ্যৎ

  • মুরগির মাংসে শনাক্ত ইশেরিশিয়া আলবার্টিঃ  অজান্তেই বাড়ছে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের ঝুঁকি

    মুরগির মাংসে শনাক্ত ইশেরিশিয়া আলবার্টিঃ অজান্তেই বাড়ছে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের ঝুঁকি

  • আদতেই কি ফিরে এসেছে ডায়ার নেকড়ে?

    আদতেই কি ফিরে এসেছে ডায়ার নেকড়ে?

  • ভুল নিদানে সন্তান হত্যার দায়ঃ একটি করুণ কেস স্টাডি

    ভুল নিদানে সন্তান হত্যার দায়ঃ একটি করুণ কেস স্টাডি

  • কমোডো ড্রাগন: উপকথার ড্রাগনদের পৃথিবীতে বিচরণ!

    কমোডো ড্রাগন: উপকথার ড্রাগনদের পৃথিবীতে বিচরণ!


নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান? হোস্টিং ও ডোমেইন কেনার জন্য Hostinger ব্যবহার করুন ৭৫% পর্যন্ত ছাড়ে।

আলোচনা

Leave a Reply