বিগত চল্লিশ বছরে পৃথিবীর জনসংখ্যা প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। কিন্তু আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ বেড়েছে সামান্যই। এরপরেও আমরা,রাজনৈতিক কারণ ছাড়া, পৃথিবীতে বড়সড় কোনো খাদ্যসংকটের মুখোমুখি হই নি। আসলে, উল্লেখ্য সময়কালে জনপ্রতি খাদ্যোৎপাদন প্রায় পঁচিশ শতাংশ বেড়েছে। জমির পরিমাণ যদি তেমন না-ই বেড়ে থাকে,তাহলে কীভাবে সম্ভব হলো এই চমৎকার? ফসল উৎপাদনের দারুণ বৃদ্ধির পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে জিন প্রকৌশলের।
কৃষির জন্মলগ্ন থেকেই কৃষকেরা বিশেষ বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে ফসল নির্বাচন করতেন এবং তাদেরই চাষ হতো। সুস্থ,সবল এবং কাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্য প্রদর্শনকারী ফসলের মধ্যে কৃষকেরা সংকরায়ণ করতেন। অন্য জাতের মিশ্রণ প্রতিরোধ করা হতো। এভাবেই যুগের পর যুগ ধরে আমরা পেয়েছি মিষ্টি আপেল, বড় তরমুজ কিংবা অন্যান্য খাদ্যশস্য। একে বলা হয় ‘কৃত্রিম নির্বাচন’। ঝিনাইদহ জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের গরীব চাষি হরিপদ কাপালীর হাতে যে উচ্চ ফলনশীল হরিধান বিকশিত হয়েছিলো,এবং সম্মানিত হয়েছিলো দেশজুড়ে, তা মূলত এই কৃত্রিম নির্বাচনেরই ফসল। লোকায়ত জ্ঞান কিংবা বংশানুক্রমিক অভিজ্ঞতার আলোকে হরিপদ’র মতো কৃষকেরা বহু শতাব্দী ধরেই আসলে, সম্ভবত নিজেদের অজান্তেই, আবাদি ফসলের জিন প্রকৌশল করতেন। একে আমরা বলতে পারি সনাতন জিন প্রকৌশল।
কাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্য আসলে বিশেষ জিনেরই প্রকাশ। কাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে ফসলের নির্বাচন আসলে বিশেষ জিনের নির্বাচন। তার ভিত্তিতে সংকরায়ণ আসলে নতুন ফসলে বিশেষ জিনের মিলন নিশ্চিত করার ব্যবস্থা। কিন্তু কৃষকেরা যে পদ্ধতিতে এটা করে এসেছেন এতদিনে, তাতে ওই কাঙ্ক্ষিত ফলপ্রাপ্তির প্রক্রিয়াটি ছিল অনিশ্চিত এবং ধীর। আবার একটি বা দুটি ফসলে নতুন বৈশিষ্ট্য থাকলেই চলে না। একটা পুরো জনপুঞ্জে (Population) তাকে স্থায়ী করতে হয়। এর জন্য বহু প্রজন্ম ধরে সংকরায়ণ করে যেতে হয়।
আধুনিক জিনপ্রকৌশলে কাঙ্ক্ষিত জিনের স্থানান্তর সহজ, দ্রুত ও নিশ্চিত। একে বলা হচ্ছে ‘ট্রান্সজেনেসিস‘ (Transgenesis)। সংশ্লিষ্ট ফসলের জিনোমে এক বা একাধিক বিশেষ জিন যুক্ত করা হয়,যা আগে ছিল না। এই নতুন জিনটির সাধারণ নাম ‘ট্রান্সজিন‘ (Transgene)। এই নতুন জিন আসতে পারে অন্য প্রাণী থেকে কিংবা অন্য ব্যাকটেরিয়া থেকে। জিন প্রকৌশল শুধু বিশেষ জিনের স্থানান্তর করেই থেমে থাকে নি। জিনোমে থাকা কোনো বিশেষ জিনকে ‘অফ’ করে দেওয়া বা তাকে আরেকটি বিশেষ জিন দিয়ে প্রতিস্থাপন করার মতো জিন সম্পাদনা প্রযুক্তি বর্তমানে বিজ্ঞানীদের হাতে আছে। এভাবে যে নতুন ফসলটি পাওয়া যায়,তাকে বলা হয় ‘জিএম‘ (Genetically Modified বা জিনগতভাবে বিশেষায়িত) ফসল বা ‘ট্রান্সজেনিক‘ ফসল। এই পদ্ধতিতে যে খাদ্যশস্য পাওয়া যায়,তা-ই জিএম ফুড। উল্লেখ্য, একইভাবে বিশেষ চাহিদা পূরণের জন্য প্রাণিতে কিংবা ব্যাকটেরিয়াতেও জিন স্থানান্তর করা হচ্ছে হরদম। ডায়াবেটিক রোগীদের অতিপ্রয়োজনীয় ওষুধ ইনসুলিন তৈরিতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু এই লেখায় আপাতত আমরা জিএম ফসল বা জিএম উদ্ভিদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবো।
উদ্ভিদে জিন স্থানান্তরের আধুনিক প্রক্রিয়াটি বিজ্ঞানীরা প্রকৃতিতেই পেয়েছিলেন। প্রকৃতির রঙ্গমঞ্চে বহুকাল ধরে চলছে উদ্ভিদ আর মাটিতে বসবাসকারী একরকম ব্যাকটেরিয়ার শোষণমূলক আন্তঃক্রিয়া। গাছে কোনো কারণে ক্ষত সৃষ্টি হলে এগ্রোব্যাক্টর (Agrobacterium tumefaciens) বলে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটতে পারে। ক্রোমোজোমাল ডিএনএ’র বাইরেও এই ব্যাকটেরিয়ার পৃথক একটা গোল, স্বপ্রজননক্ষম, দ্বিসূত্রক ডিএনএ আছে, যাকে বলা হয় প্লাজমিড। সংক্রমণের পর এই প্লাজমিডে অবস্থিত কিছু জিন উদ্ভিদকোষে স্থানান্তরিত হয়। এই নবাগত জিনগুলো কোষবিভাজনের স্বাভাবিক নিয়ন্ত্রণকে নষ্ট করে দেয়। ফলে আক্রান্ত গাছে টিউমার তৈরি হয়। ব্যাকটেরিয়া এখান থেকে পুষ্টি গ্রহণ করে এবং নিজেও বংশবৃদ্ধি করে। এইজন্য এই প্লাজমিডকে টিআই (Ti=Tumor inducing) প্লাজমিড বলা হয়। এগ্রোব্যাক্টরের প্লাজমিড জিন স্থানান্তরের এক সম্ভাবনাময় বাহক হিসেবে আবির্ভূত হয় বিজ্ঞানীদের কাছে।
উদ্ভিদকোষ নিয়ে কাজ করার সুবিধা হলো প্রতিটি সজীব উদ্ভিদকোষেরই একটি পূর্ণাঙ্গ উদ্ভিদে পরিণত হওয়ার অন্তর্নিহিত ক্ষমতা আছে। একে বলা হয় ‘টটিপটেন্সি‘। সুতরাং একটামাত্র উদ্ভিদ কোষেও যদি নতুন জিন স্থানান্তর করা যায়, সেই কোষটিকেই কালচার করে বারংবার বিভাজনের মাধ্যমে পরিণত উদ্ভিদ পাওয়া সম্ভব। এগ্রোব্যাক্টরের জিন স্থানান্তরের ক্ষমতাকে টিস্যু কালচার প্রযুক্তির সাথে যুক্ত করে আধুনিক জিন প্রকৌশল কাজ করে। প্রথমে উদ্ভিদ কোষকে আলাদা করে নিয়ে সেলুলেজ এনজাইমের সাহায্যে তার কোষপ্রাচীরকে অপসারণ করা হয়। থেকে যায় জেলির মতো ‘প্রোটোপ্লাস্ট’। এরপর জিনগতভাবে পরিবর্তিত এগ্রোব্যাক্টর উপযুক্ত পুষ্টি মাধ্যমে কোষগুলোকে সংক্রমিত করে। এগ্রোব্যাক্টরের যে জিনগুলো স্থানান্তর হবে,সেখান থেকে টিউমার-তৈরির জিন অপসারণ করে বিজ্ঞানীরা কাঙ্ক্ষিত জিন সংযুক্ত করে রাখেন আগে থেকে।
ব্যাকটেরিয়া তার স্বাভাবিক জীবনচক্রের অংশ হিসেবে প্লাজমিড থেকে ওই নির্দিষ্ট ডিএনএ খণ্ড তথা জিন পোষক কোষের জিনোমে সংযুক্ত করে দেয়। এরপর কোষগুলোর বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় উদ্ভিদ-হরমোন সরবরাহ করলে একসময় কাঙ্ক্ষিত জিনবাহী পূর্ণাঙ্গ উদ্ভিদের জন্ম হয়।
জিন স্থানান্তরের আরেকটি উপায় হলো ‘জিন গান’ পদ্ধতি। এখানে আদতেই ‘গান’ বা বন্দুকের মতো গুলি করা হয়। সোনা বা টাংস্টেনের ছোটো কণা ডিএনএ দিয়ে আবৃত করে বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে ভ্রূণীয় উদ্ভিদ কোষে ‘ফায়ার’ করা হয়, প্রধানত নিউক্লিয়াস (কিছু ক্ষেত্রে ক্লোরোপ্লাস্ট) লক্ষ্য করেই। ধাতব কণাগুলো কোষের ভেতর এনজাইমের ক্রিয়ায় গলে যায়, আর কিছু কোষের জিনোমে পাঠানো-ডিএনএ খণ্ডটি গৃহীত হয়। কাঙ্ক্ষিত জিন সার্থকভাবে সংযুক্ত হলো কি না, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। প্রচলিত পদ্ধতিটি হলো কাঙ্ক্ষিত জিনের সাথে অতিরিক্ত একটি এন্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী জিন বাহকের মাধ্যমে পাঠানো। এরপর যে-কোষগুলোতে জিনগত পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা হয়েছে, সে কোষগুলোকে ওই বিশেষ এন্টিবায়োটিক-সমৃদ্ধ মাধ্যমে রাখা হয়। যে কোষগুলো আমাদের পাঠানো জিন গ্রহণ করেছে, সেগুলো এন্টিবায়োটিকরোধী জিনটিও গ্রহণ করেছে। তাই এই কোষগুলো ওই মাধ্যমে টিকে থাকবে। যে-সব কোষে জিন স্থানান্তর সফল হয় নি, তারা এন্টিবায়োটিকের ক্রিয়ায় মারা যাবে। এভাবে সফল কোষগুলিকে কালচারের জন্য আলাদা করা হয়।
এবারে জিএম ফসলের কয়েকটি ব্যবহার দেখা যাক। মাত্র তিনটা উদাহরণ দিচ্ছি এখানে।
মার্কিন মুলুকে খাদ্য ও ওষুধ কর্তৃপক্ষ (USFDA) সর্বপ্রথম যে জিএম খাদ্যপণ্য বাজারজাত করার অনুমতি নিয়েছিলো তার নাম ফ্লেভার সেভার টমেটো (Flavr Savr)। ১৯৯৪ সালে বাজারে আসা এই টমেটোর বিশেষত্ব ছিল এটা অনেক দিন তরতাজা থাকতো। সহজে পচে যেতো না। পাকা টমেটোতে প্রাকৃতিকভাবে এক ধরনের এনজাইম তৈরি হয়, যার নাম পলিগ্যালাক্টুরোনেজ বা পিজি (Polygalacturonase)। এই এনজাইম পেকটিনকে ভাঙতে পারে। এই ভাঙন থেকেই ফলের পচন ধরে। বিজ্ঞানীরা এই পিজি এনজাইম তৈরির জন্য দায়ী জিনকে শনাক্ত করলেন। এই জিন থেকে যে এমআরএনএ (mRNA) তৈরি হয়, তার সম্পূরক এমআরএনএ তৈরি করতে পারে এমন একটা জিন তৈরি করা হলো এবং উপযুক্ত বাহকের মাধ্যমে টমেটোর কোষে প্রবেশ করানো হলো। ফলে পিজি জিন থেকে তৈরি mRNA এনজাইম তথা প্রোটিনে পরিণত হওয়ার আগেই সম্পূরক সূত্রের সাথে যুক্ত হয়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলো। পিজি এনজাইম তৈরি না হওয়ায় টমেটোর স্থায়িত্ব বাড়লো। এই প্রযুক্তির নাম এন্টিসেন্স টেকনোলজি, যেহেতু এখানে সংশ্লিষ্ট mRNAর এন্টিসেন্স বা সম্পূরক অণু ব্যবহার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এই জিএম পণ্যটি বাণিজ্যিকভাবে সফল হয় নি। মানুষ এই জিনগত পরিবর্তনকে খুব একটা সহজভাবে নিতে পারে নি।
আমেরিকান তুলা গাছে পোকার আক্রমণের ফলে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ উৎপাদন হ্রাস পেতো। পোকার আক্রমণ প্রতিরোধ করতে ব্যবহার করতে হতো কীটনাশক। এই কীটনাশক পরিবেশ দূষণের কারণ,আবার কৃষকের বাড়তি খরচের কারণ। বিজ্ঞানীরা দেখলেন ব্যাসিলাস থুরিনজিয়েনসিস ব্যাকটেরিয়াতে একটি প্রোটিন তৈরি হয় তা কীটপতঙ্গের জন্য বিষাক্ত, কিন্তু মানুষের জন্য বিষাক্ত নয়। এই প্রোটিনটি পরোক্ষভাবে পতঙ্গের অন্ত্রের আবরণকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। পরিপাকতন্ত্র ঠিক ভাবে কাজ করে না বিধায় পতঙ্গটি দ্রুতই মারা যায়। সংশ্লিষ্ট জিনটি (Cry জিন) টমেটো, তুলা,সয়াবিন প্রভৃতি উদ্ভিদে স্থানান্তর করে বিজ্ঞানীরা সাফল্য পেয়েছেন। ক্ষতিকর কীটপতঙ্গের প্রতি অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠায় একদিকে যেমন ফসলগুলোর ফলন বেড়েছে, তেমনি কমেছে উৎপাদন খরচ।
বিজ্ঞানীরা জিনগত পরিবর্তনের মাধ্যমে ফসলের জন্য ভ্যাকসিন তৈরির কথাও ভাবছেন। মানুষের মতোই ফসলের নানাবিধ ভাইরাসজনিত রোগ হয়। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা তামাক গাছে তামাকের মোজাইক ভাইরাসের (TMV) একটি জিন যুক্ত করেছেন। এই জিনটি ভাইরাসের বহিরাবরণের একটি প্রোটিন তৈরি করে। তামাক গাছেই যখন এটা তৈরি হয়, তখন স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা একে চিনে নেয়। ফলে পরবর্তীতে ওই ভাইরাসের আক্রমণ ফসলের জন্য আর ক্ষতি বয়ে আনবে না। এছাড়া আধুনিক জিন প্রকৌশল বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধী ফসলের জাত উদ্ভাবনের কথা তো বলাই বাহুল্য। আমাদের দেশে বহু গবেষণা প্রতিষ্ঠান খরা কিংবা লবণাক্ততা প্রতিরোধী ফসলের জাত উদ্ভাবন করেছে।
২০২০ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী প্রায় ১৯০ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে জিএম ফসলের চাষ হচ্ছে। সয়াবিন, তুলা, সুগারবিট, পেঁপেসহ বর্তমানে বিশ্বব্যাপী শতাধিক জিএম ফসল বাণিজ্যিকভাবে আবাদ হচ্ছে। বিশ্বে মোট উৎপাদিত ভুট্টা, তুলা, সয়াবিন ও সুগারবিটের ৭০-৯০ শতাংশ আসে জিএম জাত থেকে। ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি, পোকামাকড় প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবন, ফসলের গুণাগুণ ও স্বাদের পরিবর্তন ইত্যাদি কারণে জিএম ফসলের ব্যবহার ক্রমশই বাড়ছে। জিএম ফসল আশা দেখাচ্ছে বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তাকে টেকসই করার। তবে প্রদীপের নিচের অন্ধকারের মতো জিএম ফসল নিয়েও তৈরি হয়েছে বহু বিতর্ক। পরিবেশবাদী বহু সংগঠন জিএম ফসলের বিরোধিতা করে এসেছে। কারো দাবি জিএম ফসল জীববৈচিত্র্যকে হুমকির মুখে ফেলবে, কেউ বলেন জিএম ফসল মানুষের স্বাস্থ্যহানি ঘটায় আবার কারো আশঙ্কা জিএম ফসলের ব্যবহার যত বাড়বে ততো খাদ্য নিরাপত্তার মতো মৌলিক চাহিদার ব্যাপার কয়েকটি বড় কোম্পানির করায়ত্ত হবে। সবগুলো অভিযোগ সমান সত্য নয়, আবার কোনো কোনোটি আদতেই গুরুতর। কিন্তু সে আলাপ তোলা থাকলো সামনের কোনো দিনের জন্য!
তথ্যসূত্র-
- Plant Biotechnology, Introduction to Biotechnology (Third Edition) by William J. Thieman and Michael A. Palladino
- কৃষক বিজ্ঞানী হরিপদ কাপালী | বিজ্ঞানচিন্তা
- https://youtu.be/sH4bi60alZU?si=b1HZW8InnGm7LWBR
- ভবিষ্যৎ খাদ্য নিরাপত্তায় জিএমও | বিজ্ঞানচিন্তা
- International Service for the Acquisition of Agri-biotech Applications (ISAAA)
Leave a Reply